বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের দল ও গণতন্ত্রের অতন্ত্র প্রহরী। একদলীয় বাকশালী শাসনের গোরস্থানের উপর দাঁড়িয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। সুতরাং শহীদ জিয়াকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ নেই। কারণ যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন শহীদ জিয়া জনতার হৃদয়ে বেচে থাকবেন। শহীদ জিয়া মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তেমনী দেশের ক্রান্তিলগ্নে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রবর্তন করেছেন। বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও শহীদ জিয়া একই সূত্রে গাঁথা। জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য নেতত্ব এবং সুশাসনকে ইতিহাসের সোনালী অধ্যায় হিসেবে জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াকে শহীদ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ শহীদ জিয়ার সুযোগ্য সহধর্মিনী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ফ্যাসিস্ট সরকার জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার ফরমায়েসী রায়ে সাজা দিয়ে গৃহবন্দী করে রেখেছে। দেশনায়ক তারেক রহমানের উপর একের পর এক মিথ্যা মামলা, গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং ফরমায়েসী সাজা প্রদান করছে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জিয়াউর রহমানের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে জাতিকে রক্ষার দৃঢ় শপথ নিতে হবে।
তিনি বুধবার মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালীভাবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি বলেন, হামলা-মামলা, জুলুম-নিপীড়ন চালিয়ে যারা মনে করে বিএনপি শেষ হয়ে গেছে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। কারণ যে দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই নেতার দলকে ধ্বংস করা এত সহজ নয়। শহীদ জিয়া প্রবর্তিত বহুদলীয় গণতন্ত্রকে বেগম খালেদা জিয়া সুসংহত করেছেন। আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এদেশে আবারো বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে বিএনপি বদ্ধ পরিকর। আর বিএনপি সেটা পারবে। বাকশালী অপশাসনের বিরুদ্ধে অতীতে বড় বড় আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। শুধুমাত্র ঢাকা কেন্দ্রীক জোরালো আন্দোলন গড়ে না উঠায় সেসব আন্দোলনে কোন ফল ভয়ে আনেনি। অতীতের এসব ত্রুটিকে পুনর্বিবেচনা করে আগামীতে একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার দৃঢ় শপথ নিতে হবে। কারণ আমরাই অতীতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। ভবিষ্যতেও আমরাই গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আমরা বিএনপিই সবচেয়ে বেশী মূল্য প্রদান করেছি। আমরা অনেক জীবন হারিয়েছি। ইলিয়াস আলীর মতো নেতাকে আমরা আজো খুঁেজ পাচ্ছিনা। গুম নামক কারাগারে ইলিয়াস আলী সহ হাজার হাজার নেতা আজ আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছে। সুতরাং আমাদেরকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে আমাদেরকে বিজয়ী হতে হবে।
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইনের সভাপতিত্বে, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল ও এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালী বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: সাখাওয়াত হাসান জীবন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী।
নগরীর তাতীপাড়াস্থ মহানগর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট আব্দুল গাফফার ও আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির শাহীন, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপিকা সামিয়া বেগম চৌধুরী, মহানগর সহ-সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান সাবু ও হুমায়ুন আহমদ মাসুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুল হক চৌধুরী ও আবুল কাশেম, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল আহমদ মোর্শেদ, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমদ, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী সালেহা কবির শেপী, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা নিগার সুলতানা ডেইজী, জেলা মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসলাম উদ্দিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মহানগর বিএনপির স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা: আশরাফ আলী।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপি নেতা হাবিব আহমদ চৌধুরী শিলু, লল্লিক আহমদ চৌধুরী, আফজাল উদ্দিন, শফিকুর রহমান টুটুল, লোকমান আহমদ, মোতাহির আলী মাখন, এম মখলিছ খান, দেলোয়ার হোসেন রানা, ময়নুল হক স্বাধীন, কয়েছ আহমদ সাগর, মফিজুর রহমান জুবেদ, ফয়েজ আহমদ শিপু, জাবেদুল ইসলাম, মোশাহিদ আলী, রফিকুল বারী রোমান, শেখ মো: জয়নাল আবেদীন, জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন চৌধুরী, আ ফ ম কামাল, আব্দুল মালেক, আব্দুল লতিফ খান, এনামুল হক মাক্কু, কুহিনুর আহমদ, মহিবুর রহমান, আফতাব উদ্দিন, ফয়েজুর রহমান বেলাল, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহেদ আহমদ চমন, কয়েস আহমদ, মহানগর যুবদলের সদস্য মির্জা সম্রাট, জেলা সদস্য আলী আহমদ আলম ও আসাদুল হক আসাদ, যুবদল নেতা মাহবুব আলম, আব্দুর রউফ, আইনুল হক মেম্বার, মিজানুর রহমান রুমন, মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হাছিব, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা রনি চৌধুরী, এম এ সামাদ ও রাজন আচার্য্য, মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদিকা রেহানা ফারুক শিরিন, মহিলা দল নেত্রী আম্বিয়া বেগম, নাজমা বেগম, মিলি বেগম, সালমা বেগম ও সুমি বেগম প্রমুখ।
সভাপতির নাসিম হোসাইন বলেন- দেশ ও জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে জাতি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ জিয়ার তীব্র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। আওয়ামী দুঃশাসনে বিধ্বস্ত গণতন্ত্র শহীদ জিয়া পরিবারের নেতৃত্বেই পুন:প্রতিষ্ঠিত হবে। শহীদ জিয়ার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার শহীদ জিয়ার স্মৃতি মুছে দিতে সুগভীর ষড়যন্ত্র করছে। জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে বাকশালী সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। শহীদ জিয়ার আদর্শের লড়াকু সৈনিকেরা বেচে থাকতে বাংলাদেশের মাটি থেকে শহীদ জিয়ার অবদান কেউ মুছে দিতে পারবেনা। জনতার জিয়া অক্ষয়। বিজ্ঞপ্তি