কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিসহ সরকার সমালোচক কিছু বুদ্ধিজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, প্রতিদিন যারা সরকারকে উৎখাতে বক্তৃতা-বিবৃতি দেন, আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছেন, বর্তমান দুর্যোগের সময় তারা কোথায়? মহামারীর মধ্যে তারা নিজেরা কতজন মানুষকে সাহায্য করেছেন, কয়টা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন? একমাত্র আওয়ামী লীগই সরকার কিংবা বিরোধী দল যে অবস্থানেই থাকুক, সবসময় যে কোন দুর্যোগ-সঙ্কটে দুর্গত অসহায় মানুষের পাশে থেকেছে, এখনও রয়েছে।
রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমের দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে বিরোধী দলগুলোর যারা সমালোচনা করছেন, মহামারীর মধ্যে তারা নিজেরা কতজনকে সাহায্য করেছেন, সেই হিসাব পত্রিকায় দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, নিজে কয়টা লোককে সাহায্য করেছেন? তার একটা হিসাব পত্রিকায় দেন। তাহলে মানুষ আস্থা পাবে, বিশ্বাস পাবে। সেটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আর কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন তাদের বুদ্ধিটা যখন খোলে এবং তারা পরামর্শ দেন, তার আগেই কিন্তু আমাদের সরকার আওয়ামী লীগ এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সারাদেশের সাড়ে ৩৬ লাখ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে সহায়তা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে ভোলা, জয়পুরহাট এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রান্তে যুক্ত হয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সাড়ে ৩৬ লাখ অসহায় মানুষ জীবন ও জীবিকার জন্য ঘরে বসেই আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা পেয়ে যাবেন। এ জন্য প্রায় ৯১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। নগদ, বিকাশ, রকেট এবং শিওরক্যাশের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে জিটুপি (গবর্নমেন্ট টু পার্সন) ভিত্তিতে ২ হাজার ৫০০ টাকা পাবে প্রত্যেক পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে প্রথম দিনেই ২২ হাজার ৮৯৫ জনের কাছে সহায়তার টাকা পৌঁছে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। ভোলা, জয়পুরহাট ও চট্টগ্রামের উপকারভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার পেয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি তাঁর সুস্থ ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
সমালোচকদের তো দেখা যাচ্ছে না? ॥ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে তাঁর দল আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ততটা উদ্যোগ তো দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই শক্তিশালী বিরোধী দল চায়। আমরাও তো বিরোধী দলে ছিলাম। আমরা বিরোধী দলে থাকতে সব সময় যে কোন দুর্যোগ, দুর্বিপাকে সবার আগে আওযামী লীগ ছুটে যেত মানুষের পাশে।
এটাই বিরোধী দলের কাজ উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, কিন্তু আজকে যারা নিজেদের বিরোধী দল বা প্রতিদিন সরকার উৎখাতের জন্য বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন, জ্বালাও-পোড়াও করছেন, দুর্যোগের সময় মানুষের পাশে তারা কোথায়? কয়টা দুর্গত মানুষের মুখে তারা খাবার তুলে দিয়েছেন? কয়টা মানুষের পাশে তারা দাঁড়িয়েছেন? কয়জন মানুষের কাফনের কাপড় দিয়েছেন? কেউ নেই।
সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, সব সময় বলে বেড়ায়, সরকার এটা করেনি, সেটা করেনি। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন নিজে কয়টা লোককে সাহায্য করেছেন? তার একটা হিসাব পত্রিকায় দিয়ে দেন। তাহলে মানুষ আস্থা পাবে, বিশ্বাস পাবে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছে এবং অনেক বেসরকারী টেলিভিশন করে দিয়েছে, রেডিও করে দিয়েছে, পাশাপাশি বেসরকারী খাতে অনেক পত্রিকা হয়ে গেছে এবং তারা বেশ ঘরে বসে বসে বিবৃতিই দিয়ে যাচ্ছেন। যারা সমাজে ‘বুদ্ধিজীবী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন, তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের বুদ্ধিটা যখন খোলে এবং তারা পরামর্শ দেন, তার আগেই কিন্তু আমাদের সরকার আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, সরকার যখন মানুষের কল্যাণে সব পরিকল্পনা গুছিয়ে আনে বা বাজেটে কোন কোন খাতের ওপর বেশি গুরুত্ব দেবে, তা যখন চূড়ান্ত হয়ে যায়, তখন সেই বুদ্ধিজীবীদের ‘দুই একটা বুদ্ধি খোলে’। আমাদের যেই কাজগুলো, সেইগুলো আবার তারা আমাদের পরামর্শ দেন। তো ঠিক আছে। তারা বুদ্ধিজীবী, তাদের এত বৃদ্ধি, বুদ্ধি বেচেই জীবন-যাপন করবেন। কাজেই তাদের পরামর্শের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
জনগণের কল্যাণই আমাদের রাজনীতি ॥ সরকার বৃদ্ধিজীবীদের পরামর্শের জন্য বসে না থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারণ এই দেশটা আমাদের। এই দেশটা আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। রাজনীতি আমাদের জনগণের জন্য, জনগণের কল্যাণের জন্য। এই কথাটা আমরা ভুলি না।
এ প্রসঙ্গে আবারও বিরোধী দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা দল বা যারাই আছেন, প্রতিদিন কিভাবে সরকার উৎখাত করবে, সেই চিন্তা-ভাবনা করেন। তাদের কিন্তু এটা করতে হলে বা শক্তিশালী বিরোধী দল গড়তে হলে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। মানুষের বিশ্বাস, আস্থা অর্জন করতে হবে।
বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর তারা ভেবেছিল, আওয়ামী লীগ আর কখনও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। অপরাধ কী ছিল? আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। এটাই তো অপরাধ ছিল? তিনি বলেন, এদেশের মানুষ যদি কিছু পেয়ে থাকে, তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই পেয়েছে। এদেশটার উন্নতি কিভাবে করতে হবে এটা আওয়ামী লীগ জানে, আওয়ামী লীগই করে যাচ্ছে।
দেশের মানুষের পাশে আওয়ামী লীগ ॥ যেকোন দুর্যোগ দুর্বিপাকে সঙ্কটে দেশের মানুষের পাশে দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে ক্ষমতায়। আামদের সকলের চেষ্টা হচ্ছে কিভাবে আমরা এই দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াব এবং সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা জানি এই সময় সারাবিশ্ব করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। যখন সারাবিশ্ব করোনা আক্রান্ত তখন খুব স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, রফতানি সবকিছুতেই একটা ভাটা পড়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নত দেশই হিমশিম খাছে। সেখানে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমাদের ছোট ভূখণ্ডে আমাদের অধিক জনসংখ্যা। এই জনসংখ্যাকে একদিকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়া, অপরদিকে তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করা, তাদের জীবনকে সচল রাখার ব্যবস্থা, সেটা কিভাবে করা যায়, আমরা সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি এবং সে কারণেই আমরা এই অসহায় বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১৯৭২ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘আমাদের এমন একটা সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যে সমাজে কৃষকরা, ক্ষুধার্ত জনগণ আবার হাসতে পারবে।’ অর্থাৎ এ কৃষক শ্রমিক বঞ্চিত মানুষ তাদের ভাগ্য গড়া এটিই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। সেটাই তিনি করতে চেয়েছিলেন। কাজেই আমরা সেই জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। আমরা সবসময় এটিই চাই মানুষকে কিভাবে সহযোগিতা করব। মানুষের পাশে দাঁড়াব এবং জাতির পিতা যেভাবে কাজ করতেন, আমরা তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবসময় দুর্গত মানুষের পাশে কিন্তু আওয়ামী লীগ আছে। আপনারা দেখেছেন, ধান কাটার অসুবিধা, আমরা ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনকে বলার সঙ্গে সঙ্গে তারা মাঠে নেমে গেছে। কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ প্রত্যেকেই কিন্তু এই করোনা মহামারীতে সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসার জন্য অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া, লাশ দাফন করা অথবা মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া, ধান কেটে কৃষকের ঘরে তুলে দেয়া, সব কাজে কে আছে এখন? আওয়ামী লীগ আছে আমাদের সহযোগী সংগঠনের কর্মীরাই আছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আছে, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ প্রত্যেকেই কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
জনগণ যা পেয়েছে তা আওয়ামী লীগের কাছ থেকেই পেয়েছে ॥ প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় দেশের কিছু বুদ্ধিজীবীর কর্মকা-ের সমালোচনা করে বলেন, আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন। যখন তাঁদের বুদ্ধি খোলে এবং পরামর্শ দেন, তার আগেই কিন্তু আমাদের সরকার আওয়ামী লীগ এ ব্যাপারে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়ে নেয়। গরিবের কি দিতে হবে, মানুষের জন্য কি করত হবে, করোনাভাইরাসের টিকা কিনে এনে কিভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে হবে, এসব কাজ যখন আমরা গুছিয়ে নিয়ে আসি বা বাজেটে আমাদের কিভাবে করব, বাজেটের কোন কোন খাতের ওপর আমরা বেশি গুরুত্ব দেব, এগুলো যখন আমাদের করা শেষ হয়ে যায়- তখন তাদের (বুদ্ধিজীবী) বুদ্ধির দুয়ারটা খোলে এবং তারা আমাদের সে কাজগুলো নিয়েই আমাদের পরামর্শ দেন!
পরামর্শের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের এই পরামর্শ দেয়ার আগেই আমাদের কাজগুলো আমরা কিন্তু করে ফেলি। কারণ এই দেশটি আমাদের। আমাদের রাজনীতিই জনগণের জন্য। জনগণের কল্যাণের জন্য- আর সেই কথাটা কখনও আমরা ভুলি না। আর সেই কথাটা ভুলি না বলেই আজকে মানুষের জন্য কাজ করাটাকেই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলেই আমরা মনে করি এবং সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষ যদি কিছু পেয়ে থাকে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই পেয়েছে। এই দেশটাকে কিভাবে উন্নত করতে হবে, এটা আওয়ামী লীগ জানে। আর তা আওয়ামী লীগই করে যাচ্ছে। কারণ আওয়ামী লীগ তো জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এই আওয়ামী লীগই করেছে এবং স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। সে জন্য দেশের জনগণের প্রতি আমাদের একটা দায়িত্ববোধ আছে, দায়বোধ আছে। আর আমাদের রাজনৈতিক ফিলোসপিটাও তাই। মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করা এবং সেটাই আমরা করে যাচ্ছি। কাজেই একেবারে প্রতিটি এলাকায় আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সাড়ে ৩৬ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচীও অব্যাহত রয়েছে। ৬৪ জেলায় ইউনিয়ন হিসেবে করে জেলা প্রশাসকদের কাছে কিছু টাকা দিয়ে রাখা হয়েছে, কেননা যে কোন জায়গা তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে তারা যেন সেটা ব্যয় করতে পারেন এবং দুস্থদের পাশে দাঁড়াতে পারেন। এছাড়া সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে ১০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও শিল্পী, কলা-কুশলী থেকে শুরু করে মসজিদ-মাদ্রাসায় অনুদান দেয়া হয়েছে।
দুর্দিনে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান ॥ প্রধানমন্ত্রী দেশের সামর্থবান ও বিত্তশালীদের প্রতি এ দুর্দিনে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এবং দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিষয়ক নির্দেশনাগুলো মেনে চলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা আমাদের বিত্তশালী আছেন, তাদের বলব- জনগণের পাশে দাঁড়ান। জনগণকে সাহায্য দেন, জনগণের জন্য কাজ করেন। এই মুজিববর্ষে দেশের একটি মানুষ গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেককে আমরা ঘর করে দেব। আর দেশের একটি ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে সেজন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলার জন্য দেশবাসীর প্রতি পুনরায় আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ঈদ উৎসব তো আছেই। এটা সবাই উদ্যাপন করবেন। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ঈদের আনন্দ করবেন। কিন্তু যারা মারা গেছে, তাদের কথাও ভাবুন। নিজের জীবন বিপন্ন করে উৎসব নয়। মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না। গরম পানির ভাপ নেয়া, গরম পানি খাওয়ার মতো বিষয়গুলো যত্ন সহকারে মানার জন্য তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাইরে থেকে ভাইরাস নিয়ে এসে নিজের পরিবারের ক্ষতি করবেন না। আমরা যে নির্দেশনাগুলো দিচ্ছি, সেগুলো মানতে হবে। কোয়ারেন্টাইনের বিষয়গুলো মানতে হবে। আপনারা সচেতন হোন, স্বাস্থ্যবিধি মানুন। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড আমরা সচল রাখার চেষ্টা চালাচ্ছি।
অর্থ বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন আমরা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ যারা ভাসমান মানুষ, নির্মাণ শ্রমিক, গণপরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, দিনমজুর, ঘাট শ্রমিক, নরসুন্দরসহ যারা দৈনিক আয়ের ভিত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করেন, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার অসহায় মানুষ, তাদের মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে নগদ সহায়তা দিচ্ছি। এতে অন্য কেউ টাকা পয়সা এদিক ওদিক করতে পারবে না। তিনি বলেন, আমাদের ছোট ভূখন্ডে অধিক জনসংখ্যা। কিভাবে এই জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়া যায়, অপর দিকে তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা, তাদের জীবনটাকে সচল রাখার ব্যবস্থা, সেটা কিভাবে করা যায়- আমরা সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি। সে কারণে এই অসহায় বঞ্চিত মানুষের পাশে আমরা দাঁড়িয়েছি।