আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় নিবন্ধন অধিদফতর পরিচালিত তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১ জেলায় প্রায় ৪৯৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অস্থায়ীভাবে ‘কাজ আছে মজুরি আছে ভিত্তিতে’ ১৬ হাজার ২৪৫ জন এক্সট্রা মোহরার বা নকল নবিস কাজ করছেন। যাদের আড়াইশ বছরেও রাজস্ব খাতে নেওয়া হয়নি।
এসোসিয়েশন সিলেট জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট সালেক আহমদ বলেন দলিল সম্পাদনের ইতিহাস অনেক পুরনো হলেও সম্পত্তি বেচাকেনায় প্রতারণা বন্ধ এবং ভূমি রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে ১৭৮১ সালে উপমহাদেশে প্রথম রেজিস্ট্রি আইন প্রবর্তিত হয়। তখন থেকেই দলিল রেজিস্ট্রি এবং দলিলের নকল লেখার জন্য সৃষ্টি হয় নকল নবিস পদ। কিন্তু পদ সৃষ্টি হলেও প্রায় ২৩৯ বছর ধরে মাস্টার রোলে কাজ করতে হচ্ছে নকল নবিসদের। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম করেও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। প্রশাসনিক জটিলতাসহ নানা কারণে হয়নি চাকরি স্থায়ীকরণ। অথচ ১৯৫৮ সালে কালেক্টরেট, জজ কোর্ট, হাইকোর্ট ও সরকারের বিভিন্ন দফতরে কর্মরত নকলনবিসদের চাকরি স্থায়ী করে নেয়া হয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন অধিদফতরের অধীন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের উৎস। জমির দলিল বাবদ বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় আসে এই সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা এই অফিসের অস্থায়ী জনশক্তি নকল নবিসদের।
নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরির নিয়োগ বিধির মতোই শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সব যোগ্যতা ও নিয়মের ভিত্তিতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে এক্সট্রা মোহরার নিয়োগ করা হয়। এসব অফিসে স্থায়ী কর্মচারী মোহরারদের প্রধান কাজ হলো রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের নকল ভলিউমে লেখা। দলিল রেজিস্ট্রির ১৫ দিনের মধ্যে নকল লেখার কাজ শেষ না হলে সহযোগী হিসেবে ভলিউমে নকল লেখা এক্সট্রা মোহরারদের কাজ।অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন,সিলেট জেলায় ১৩টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস রয়েছে। এতে প্রায় ৫০০ জন নকল নবিস কাজ করেন। এবং সিলেট বিভাগে রেজিস্ট্রি অফিসে আছে ৪০ টি এবং নকল নবিশ আছেন প্রায় ২০০০ হাজার। এমনিতেই আমরা প্রতি মাসের বেতন নিয়মিত পাই না।এখন তো অফিসই বন্ধ। নকল নবিসদের পরিবার খুব খারাপ অবস্থায় সময় পার করছে। এই মুহূর্তে কমপক্ষে নকল নবিসরা যাতে সংসার চালাতে পারেন সরকারের কাছে এই সহযোগিতা আমরা চাই।
সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম আল-দ্বীন ও অর্থ সম্পাদক জুনেদ আহমদ অভিযোগ করেন, এতোদিনে ও নকল নবিসদের চাকরি স্থায়ীকরণ হয় না এর মধ্যে আবার অতিরিক্ত নকল নবিস নিয়োগ কিন্তু থেমে নেই। টাকার বিনিময়ে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা এই নিয়োগ দিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তি