ফেসবুক টুইটারে নজরদারি করবে সরকার

26

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মন্ত্রী পরিষদের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভায় দেশে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে নজরদারি করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভা শেষে কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তারা এ বিষয়ে মনিটরিং করার কথা বলবেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। কিন্তু আইনের আওতায় থাকা দরকার। অবাধ তথ্য প্রবাহের কারণে জাতীয়ভাবে সমাজ বিভ্রান্তিতে পড়ে। মানবতাবিরোধী, সমাজবিরোধী বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ হওয়া জরুরি।’
তিনি জানান, সরকার ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াকে বাংলাদেশে অফিস খোলা বা অন্তত একজন প্রতিনিধি নিয়োগের কথা বলবে। এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে কোনো অভিযোগ উঠলে সরকার যাতে তাদের জানাতে পারে এবং তারা যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে সেজন্য এই ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ আইনশৃঙ্খলা ঠিকভাবে মেনে চলছেন বলেই আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে পেরেছি।’
বুধবার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পঞ্চম সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার সময় তিনি এসব তথ্য জানান। সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক হয়।
অন্য দেশের কি অবস্থা”?
স্ব-নিয়ন্ত্রণ
ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মগুলো এতদিন ধরে দাবি করে এসেছে যে, তাদের প্রতিষ্ঠানে এক ধরণের ব্যবস্থা চালু আছে, যেখানে তারা নিজেরাই আপত্তিকর বিষয়বস্তু সরিয়ে নেন।
ইউটিউব দাবি করে, তাদের সাইটে যখন কোন আপত্তিকর কনটেন্ট দেয়া হয়, তারা সেটি জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
২০১৮ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই ইউটিউব প্রায় ৭৮ লাখ ভিডিও তাদের সাইট থেকে অপসারণ করেছে। এর মধ্যে ৮১ শতাংশই সরানো হয়েছে যন্ত্রের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। এই ভিডিওগুলোর তিন চতুর্থাংশই কেউ দেখার আগেই সরিয়ে ফেলা হয়।
শুধুমাত্র আপত্তিকর ভিডিও সরিয়ে নেয়ার জন্য সারা বিশ্বে ইউটিউব দশ হাজার লোক নিয়োগ করেছে। তাদের কাজ মনিটরিং করা এবং আপত্তিকর ভিডিও সরিয়ে নেয়া।
ফেসবুক, যারা ইনস্টাগ্রামেরও মালিক, বিবিসিকে জানিয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠানে এরকম কাজের জন্য আছে ৩০ হাজার লোক। কেবল গত বছরের অক্টোবর হতে ডিসেম্বরের মধ্যেই ফেসবুক ১ কোটি ৫৪ লাখ সহিংস কনটেন্ট সরিয়ে নিয়েছে তাদের সাইট থেকে। আগের তিন মাসের তুলনায় এটা প্রায় ৭৯ লাখ বেশি।
কিছু কনটেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবেই শনাক্ত করা যায়, কেউ দেখে ফেলার আগেই। সন্ত্রাসবাদী প্রপাগান্ডার ক্ষেত্রে, ফেসবুক দাবি করছে, ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ কনটেন্টই স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি দিয়ে শনাক্ত করা হয়েছে, তারপর সেগুলো মুছে দেয়া হয়েছে।
প্রতিশোধ নেয়ার জন্য কেউ যখন কারো নগ্ন ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয় বা কোন জঙ্গি মতাদর্শের কিছু শেয়ার করে, তখন এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে এতদিন দায়ী করা যেতো না। এজন্যে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেতো কেবল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে।
কিন্তু এখন অনেক দেশেই আইন বদলানোর চিন্তা-ভাবনা চলছে, অনেকে আইন করেও ফেলেছে।