আল-কুরআনে উদ্ধৃত আম্বিয়া (আ:) উম্মতের দোয়া

22

॥ মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান ॥

কুরআন মাজীদে ছাবিবশজন নবী-রাসূলের নাম সুস্পষ্ট ভাষায় এসেছে। নাম ছাড়া প্রসঙ্গ এসেছে আরো কয়েকজনের। আল্লাহ তা’আলা এই নবী ও রাসূলদের মধ্যে কারো কথা সংক্ষিপ্তভাবে বলেছেন। আবার কারো বিবরণ বিস্তারিতভাবে দিয়েছেন। তন্মধ্যে অনেক নবী-রাসূলের কাহিনীতে, তাঁদের জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তে, বিভিন্ন স্বস্তি ও সংকটকালে, আনন্দ বা বেদনার সময় বিশেষ ভাষায় আল্লাহ পাকের নিকট তাঁরা মুনাজাত বা প্রার্থনা করেছেন। তাঁদের সেসব মোনাজাত আল্লাহ কবুল করেছেন। যেহেতু নবী-রাসূলগণ আল্লাহ পাকের মনোনীত ও নির্বাচিত মহান দূত ও প্রেরিত পুরুষ ছিলেন, তাই তাঁরা যে পরিস্থিতিতে যে শব্দে দোয়া করেছেন, সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে আমরাও যদি হুবহু ওই শব্দে মহান আল্লাহ পাকের নিকট মোনাজাত করি, তবে আশা করা যায়, আমাদের দোয়াও কবুল হবে। কুরআন মজীদে যে সব নবী-রাসূলের দোয়া উল্লেখিত হয়েছে, যুগ ও এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে তাঁদের সে সকল দোয়া নিম্নে উল্লেখিত হল।
হযরত আদম (আঃ)-এর দোয়া ঃ আল্লাহ তা’আলা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও মা হাওয়াকে সৃষ্টি করার পর উভয়কে বললেন, তাঁরা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা অবস্থান করতে পারবেন এবং জান্নাতের সবকিছু থেকে উপকৃত হতে পারবেন। এই সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট বৃক্ষের দিকে ইঙ্গিত করে বলে দেওয়া হল এই বৃক্ষের ফল ভক্ষণ করবে না। এমনকি সেই বৃক্ষের কাছেও ঘেঁষবে না। কিন্তুু শয়তানের আকর্ষণীয় কুমন্ত্রনায় তাঁরা আল্লাহর নির্দেশ ভুলে গিয়ে সেই নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ করে ফেলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ পাক তাদেরকে বেহেস্ত থেকে বের করে দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন। পৃথিবীতে এসে তারা তাঁদের কৃত ভুলের কথা স্মরণ করে আল্লাহর দরবারে রোনাযারি করতে থাকেন। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রার্থনাবাণী শিখিয়ে দেওয়া হল। তারা বললেন: ‘‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করেছি, যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব’’ (সূরা-আরাফ ২৩)।
হযরত নূহ (আঃ)-এর দোয়া ঃ হযরত নূহ আলাইহিস সালাম সাড়ে নয়’শ বছর যাবৎ তাঁর কওমকে হেদায়েতের দিকে আহবান করতে থাকেন। কিন্তু তাঁর কওম তাঁর আহবান প্রত্যাখ্যান করত, তাঁকে ভীতি প্রদর্শন করত এবং তাঁকে লক্ষ্য করে বলত, এতো এক পাগল। তখন তিনি আল্লাহ পাককে আহবান করে বললেন, ‘‘হে আল্লাহ, আমি অসহায়। অতএব আপনি প্রতিবিধান করুন’’ (সূরা-কামার ১০)। অল্পকিছু লোক ব্যতীত অধিকাংশরা যখন তাঁকে প্রত্যাখ্যানই করতে থাকে তখন তিনি দোয়া করলেন, ‘‘হে আমার প্রতিপালক, আমার সম্প্রদায় আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে। অতএব আমার ও তাদের মধ্যে কোন ফয়সালা করে দিন এবং আমাকে ও আমার সঙ্গী মুমিনদেরকে রক্ষা করুন’’ (সূরা-শুআরা ১১৭-১১৮)। তিনি পরিশেষে যখন তাদের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিরাশ হলেন এবং বুঝলেন, তাদের সীমালংঘনের শাস্তি অবধারিত তখনই হযরত নূহ (আঃ) তাদের দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহ পাকের নিকট এ মর্মে প্রার্থনা করলেন যে, ‘‘হে আমার রব, আপনি পৃথিবীতে কোনো কাফের গৃহবাসীকে রেহাই দিবেন না। যদি আপনি তাদেরকে রেহাই দেন তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং কেবল পাপাচারী, কাফের’’ জন্ম দিতে থাকবে (সূরা- নূহ ২৬-২৭)।
তারপর হযরত নূহ (আঃ) মুমিনদের জন্য প্রার্থনা করে বলেন, ‘‘হে আমার পালনকর্তা, আপনি ক্ষমা করুন আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং যারা মুমিন হয়ে আমার গৃহে প্রবেশ করে তাদেরকে এবং সকল মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকে’’ (সূরা-নূহ ২৮)। সবশেষে তিনি কাফেরদের বেলায় কঠোরতর ভাষায় বদ দোয়া করে বলেন, ‘‘আর আপনি জালেমদের শুধু ধ্বংসই বৃদ্ধি করুন’’ (সূরা- নূহ ২৮)। হযরত নূহ (আঃ) মুমিনদের জন্য নেক দোয়া এবং কাফেরদের জন্য বদ দোয়া করেছিলেন। তাঁর উভয় প্রার্থনা কবুল হয়েছিল। আল্লাহ পাক তাঁকে একটি নৌযান তৈরি করার নির্দেশ দেন। তারপর সেই নৌযানে মুমিনদেরকে নিয়ে আরোহণের হুকুম দেন। তিনি তা-ই করলেন। নৌযানে আরোহণের সময় নূহ (আঃ) বললেন, ‘‘আল্লাহ পাকের নামেই এর গতি ও স্থিতি। নিশ্চয়ই আমার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’’ (সূরা- হুদ ৪১)। হযরত নূহ (আঃ) সকল মুমিন মুসলমানকে নিয়ে নৌযানে আরোহণের পর আল্লাহ রাববুল আলামীন তাকে নিন্মোক্ত দুটি দু’আ পাঠ করতে বললেন, ‘‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আমাদেরকে জালেম সম্প্রদায় থেকে উদ্ধার করেছেন’’ (সূরা- মুমিনূন ২৯)। ‘‘হে আমার রব, আমাকে এমনভাবে অবতরণ করিয়ে দিন যা হবে কল্যাণকর আর আপনিই শ্রেষ্ঠ অবতরণকর্তা’’ (সূরা-মুমিনূন ২৯)।
হযরত হুদ (আঃ)-এর দোয়া ঃ হযরত হুদ আলাইহিস সালাম অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে তাঁর কওমকে হেদায়াতের দিকে আহবান করেছিলেন। তাঁর কথায় ওরা কর্ণপাত না করায় তিনি তাদেরকে আল্লাহ পাকের শাস্তির ভয় দেখান। কিন্তু তাঁর সম্প্রদায় আরও ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে তাঁকে মিথ্যাবাদী বলল। তখন হযরত হুদ (আঃ) আল্লাহ পাকের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে বলেন, ‘‘হে আমার রব, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আপনি আমাকে সাহায্য করুন’’ (সূরা- মুমিনূন ৩৯)। সূরা মুমিনূনের ছাবিবশতম আয়াত থেকে বুঝা যায়, এই দু’আখানি হযরত নূহ (আঃ) ও করেছিলেন।
হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর প্রার্থনা ঃ হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর অনেক গুলো দোয়া পবিত্র কুরআনে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। তিনি নবুয়াতের দায়িত্ব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পিতা ও কওমকে মূর্তিপূজা বর্জন করে এক আল্লাহর ইবাদত করতে বলেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, তোমরা যেগুলোর পূজা করো এগুলো আমার শত্রু। বিশ্ব প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহ তাআলাই আমার প্রভু। যিনি আমাকে সঠিক পথের সন্ধান দেন। আমাকে আহার্য এবং পানীয় দেন এবং আমি অসুস্থ হলে রোগমুক্ত করেন। যিনি আমাকে মৃত্যু দেবেন এবং পুনরায় জীবিত করবেন। তারপর ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করেন-‘‘হে আমার পালনকর্তা, আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে যশস্বী করুন, আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করুন’’ (সূরা- শুআরা ৮৩-৮৫)। হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ পাকের নির্দেশে দুগ্ধপোষ্য পুত্র ইসমাঈল ও স্ত্রী হাজেরাকে মক্কার অনাবাদী ঊষর মরুপ্রান্তরে রেখে নিজ আবাসস্থল ফিলিস্তিনে ফিরে আসছিলেন। তিনি চলতে চলতে এক পর্বতশীর্ষে আরোহণ করলেন, যেখান থেকে স্ত্রী ও প্রিয় পুত্রধনকে দেখা যাচ্ছিলনা। তখন কাবা শরীফের দিকে মুখ করে আল্লাহ পাকের নিকট নিম্নের দোয়াটি করেছিলেন। (‘‘ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী, আলজামিউস সহীহ, ১/৪৭৫ (কিতাবুল আম্বিয়া); মওলানা হিফুযুর রহমান সিউহারবী, কাসাসুল কুরআন ১/২২৭;’’ দ্র.)
‘‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমি আমার বংশধরদের কতককে আপনার পবিত্র গৃহের সন্নিকটে অনাবাদ উপত্যকায় বসবাসের জন্য রেখে গেলাম। হে আমাদের প্রতিপালক, তা এই জন্য যে, তারা যেন সালাত কায়েম করে। অতএব, আপনি কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি অনুরাগী করে দিন এবং ফলাদি দ্বারা তাদের রিযিকের ব্যবস্থা করুন, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা যা গোপন করি এবং যা প্রকাশ করি নিশ্চয়ই আপনি জানেন। আপনার নিকট আসমান-জমীনের কোন কিছুই গোপন নেই।’’ হযরত ইবরাহীম (আঃ) কিছুকাল মক্কা নগরীতে অবস্থান করেন। তিনি আল্লাহ পাকের একজন রাসূল হিসেবে নিজেকে ও নিজের সন্তানকে মূর্তিপূজা থেকে মুক্ত রাখার এবং তাদের আবাসস্থল পবিত্র মক্কা নগরীকে নিরাপদ শহরে পরিণত করার প্রার্থনা করে বলেন, ‘‘হে আমার প্রতিপালক, এই নগরীকে শান্তিময় শহর করে দিন এবং আমাকে আমার পুত্রগণকে মূর্তিপূজা থেকে দূরে রাখুন। হে আমার প্রতিপালক, এই সকল মূর্তি তো বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার দলভুক্ত, আর কেউ আমার অবাধ্য হলে আপনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’’ (সূরা-ইবরাহীম ৩৫-৩৬)। হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ পাকের নিকট নেক সন্তানের জন্য প্রার্থনা করে বলেন,‘‘হে আমার রব, আমাকে এক সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দান করুন’’। (সূরা-সাফফাত ১০০)। আল্লাহ পাক তাঁর প্রার্থনা মঞ্জুর করে তাঁকে একজন স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দান করেন। এর অল্পদিন পর হযরত ইসমাঈল (আঃ) জন্ম লাভ করেন। হযরত ইসমাঈলের পর হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর প্রথম স্ত্রী হযরত সারা-এর গর্ভে ইসহাক নামক দ্বিতীয় পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। হযরত ইবরাহীম (আঃ) একশ বছর বয়সে দুই পুত্রের পিতা হয়ে আল্লাহ পাকের দরবারে নিম্নোক্ত শুকরিয়ার বাণী উচ্চারণ করেন। (কাসাসুল কুরআন ১/২৩১;)
‘‘সকল প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য, যিনি আমাকে বার্ধক্যে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন। আমার প্রতিপালক অবশ্যই প্রার্থনা শুনে থাকেন। হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ও আমার বংশধরদেরকে সালাত কায়েমকারী করুন। হে আমাদের রব, আমার প্রার্থনা কবুল করুন। হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব হবে সেদিন আমাকে আমার পিতামাতাকে এবং মুমিনদেরকে ক্ষমা করুন’’ (সূরা-ইবরাহীম ৩৯-৪১)। হযরত ইবরাহীম (আঃ) মক্কা নগরীর নিরাপত্তা এবং মক্কার মুমিন অধিবাসীদের জন্য জীবিকা প্রার্থনা করে এই বলে আরও দু’আ করলেন যে, ‘‘হে আমার প্রতিপালক, মক্কাকে নিরাপদ শহর করুন, আর এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী তাদেরকে ফলমুল থেকে জীবিকা প্রদান করুন’’ (সূরা-বাকারা ১২৬)। আল্লাহ পাক হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে আল্লাহর গৃহ কাবা শরীফ নির্মাণ করার নির্দেশ দেন। হযরত ইবরাহীম (আঃ) পুত্র ইসমাঈলকে সঙ্গে নিয়ে আল্লাহর ঘর কাবা শরীফ নির্মাণ করেন। (কাসাসুল কুরআন, ১/২৪২;)
কাবা শরীফের নির্মাণ কার্য সমাপ্ত করার পর পিতাপুত্র এ কর্মে আল্লাহর কাছে দু’আ করেন, ‘‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের এই কাজ কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের উভয়কে আপনার একান্ত অনুগত করুন এবং আমদের বংশধর থেকে আপনার এক অনুগত উম্মত করুন। আমাদেরকে ইবাদতের নিয়মপদ্ধতি বাতলে দিন এবং আমাদের তওবা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’’ (সূরা-বাকারা ১২৭-১২৮)। পবিত্র কুরআনে সূরায়ে মুমতাহিনায় রয়েছে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাঁর কাফের ও মুশরিক সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বলেছেন তোমাদের সাথে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের পূজা কর তাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনলে তোমাদের ও আমাদের মধ্যে চিরকালের জন্য শত্রুতা- বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়ে রইল। তখন ইবরাহীম (আঃ) তাঁর অনুসারীগণ আল্লাহ পাকের নিকট সকাতর জানিয়ে প্রার্থনায় বলেছিলেন, ‘‘হে আমাদের রব, আমরা তো আপনারই উপর নির্ভর করেছি, আপনারই অভিমুখী হয়েছি এবং প্রত্যাবর্তন তো আপনারই নিকট। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে কাফেরদের জন্য পরীক্ষার পাত্র করবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’’ (সূরা-মুমতাহিনা ৪-৫)
হযরত লুত (আঃ)-এর দোয়া : হযরত লুত (আঃ) হযরত ইবরাহিম (আঃ)- এর পরামর্শে দাওয়াত ও হেদায়েতের উদ্দেশ্যে মৃতসাগরের দক্ষিণ পাশের অঞ্চলে এসে অবস্থান গ্রহণ করেন। এখানে সাদূম ও আমূরা গোত্রদ্বয়ের বসতি ছিল। ‘‘ডক্টর শাওকী আবু খলিল, আতলাসুল কুরআন ৬১;’’ তিনি এখানে এসে দেখলেন, এখানকার লোকেরা এক প্রকার অতি কুৎসিৎ কুকর্মে লিপ্ত। তিনি সকলকে এ ধরনের অপকর্ম থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে সতর্ক করলেন। কিন্তু তারা তাঁর কথায় বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করলো না : বরং তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করতে লাগলো। হযরত লূত (আঃ) এই সংকটকালে দুটি দোয়া করেন। তিনি মুমিনদের জন্য প্রার্থনা করলেন, ‘‘হে আমার রব, আমাকে ও আমার পরিবার-পরিজনকে এহেন দুস্কর্ম থেকে রক্ষা করুন’’ (সূরা-শুআরা-১৬৯)। তাঁর অপর দোয়াটি হলো, ‘‘হে আমার প্রতিপালক, বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন’’ (সূরা-আনকাবুত-৩০)। আল্লাহপাক তাঁর দোয়া কবুল করলেন। তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদেরকে রক্ষা করলেন এবং অপরাধীদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। (অসমাপ্ত)