কোমলমতি শিশুদের বিদ্যাচর্চায় অনুপ্রবেশের প্রথম দ্বারটিই প্রাথমিক বিদ্যালয়। এত বড় মহৎ দায়িত্ব পালনে সদ্য তৎপর থাকতে হয় সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্তৃপক্ষকে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই অর্পিত কর্তব্য পালনে সততা, নিষ্ঠা আর পারদর্শিতায় বিদ্যানিকেতনের মূল কাঠামোকে সংহত, গ্রহণযোগ্য এবং সর্বজনীন করতে প্রাসঙ্গিক কর্মযোগে। তবে সবক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরিতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়। সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের বিরুদ্ধে অভাব, অভিযোগ আর আপত্তিরও শেষ থাকে না। নতুন করে খবর হয়েছে প্রতারকচক্রের ফাঁদে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর তার ঐতিহ্যিক বলয়কে প্রায় হারাতে বসেছে। এক্ষেত্রে জনবল নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার ফাঁক-ফোকরে যে অনিয়ম আর দুর্নীতি দানা বাঁধছে, সেটাই পুরো কাঠামোকে অস্থির ও স্থবির করে দিতে যথেষ্ট। এমন মহৎ কর্মযোগের আয়োজনে ঢুকে পড়ছে হরেকরকম নীতি-নৈতিকতাহীন বিপরীত কার্যক্রম, যা পুরো প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে তুলছে। বিভিন্ন জরিপে উঠে আসছে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হওয়ার সুবর্ণ সময়ে অসাধু চক্রের হঠকারিতায় পুরো প্রক্রিয়া তার লক্ষ্যমাত্রার গতি হারাচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়াটিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত দুর্নীতি-অনিয়মে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দাফতরিক কার্যক্রমেও চলছে নিয়োগবাণিজ্য। অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণেও আদায় করা হচ্ছে অর্থ। প্রতারকচক্র বদলি ঠেকানোর জন্য অর্থ আত্মসাত করতেও কার্পণ্য করছে না। সার্বিক কাঠামোতে ভর করেছে এক অপবাণিজ্যের চরম কূটকৌশল। এভাবে চলতে থাকলে পুরো ব্যবস্থাপনায় ধস নেমে আসতে সময় লাগবে না। এবার নজরে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা করার খবর। তবে এবার প্রশাসনের অনিয়ম আর অপতৎপরতাকে বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জঘন্য অপরাধীচক্রকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা শিক্ষার শুদ্ধতা রক্ষা করতে প্রয়োজনও জরুরী।
সবচাইতে গর্হিত অপরাধটি ঘটে বারবার প্রধানমন্ত্রী ও মহাপরিচালকের ছবি প্রদর্শন করে নকল ওয়েবসাইট খুলে জোচ্চুরি করা জঘন্য অপকর্ম। বলা হচ্ছে এই নকল ওয়েবসাইটের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ন্যূনতম সম্পর্ক থাকার কোন সুযোগ নেই। সুতরাং এসব কুচক্রী মহলের অপকর্ম থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাবধান এবং সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জঘন্য এই কূটকৌশলে যারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তাদের আইনের কাঠগড়ায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি।