মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
ঋতুচক্রের ধারাবাহিকতায় আবহমান বাংলায় এসেছে শীত। এই শীতেই জমে ওঠে ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলিসহ পৌষ সংক্রান্তির ব্যাপক আয়োজন।
চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল ঘিরে জমে উঠেছে চিরাচরিত মাছের মেলা। যার প্রচলন শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধের আগে থেকে।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে শ্রীমঙ্গলে এসেছে বাংলা মাছ। অর্থাৎ দেশি প্রজাতির মাছ। মাছপ্রেমিদের রসনার বিলাস ঘটাতে বাজার ভরা এখন দেশি মাছ। দরদাম হাকিয়ে শুধু কেনার অপেক্ষা।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে শ্রীমঙ্গল শহরের মাছ বাজারে নানা জাতের মাছ দেখা গেছে। সর্বাধিক বড় মাছটি উঠেছে বাঘাইড়। যার ওজন ৪৫ কেজি। বিশালাকৃতির এই বা মাছটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা।
বিক্রেতা হাফিছ বলেন, দাম সামান্য কম পেলে ছেড়ে দেব। শ্রীমঙ্গলের মাছের মেলার জন্য এই মাছটি আমি খুলনার বাগেরহাট থেকে এনেছি।
অপর মাছ ব্যবসায়ী গণি মিয়া বলেন- রুই, কাতল, মৃগেল, বোয়াল, চিতল ইত্যাদি বহু টাকার মাছ শ্রীমঙ্গলের এ উৎসব উপলক্ষে কিনেছি। এখন কিছুটা টেনশনে আছি যে ভালো দাম পাবো কি না? ভালো দামে বিক্রি না করতে পারলে লাভের মুখ দেখবো না।
মাছবাজার সংলগ্ন শান্তি ভান্ডার দোকানের ব্যবসায়ী রণধীর কুমার সেন ণ্ডজানান, ৪৫ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছটি এ বছর বাজারে ওঠা বড় আকৃতির মাছ। শহরের প্রবীণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে যতদূর শুনেছি শ্রীমঙ্গলের এই মাছের মেলা প্রায় ৭০ বছরের পুরোনো। মাছের সঙ্গে বাঙালির সখ্যতা আদিকাল থেকে। সেই ধারাবাহিকায় পৌষ সংক্রান্তির উৎসব ঘিরে এই বিশেষ দিনে বসে মাছের মেলা।
আরও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো- শ্রীমঙ্গলে এ উৎসব ঘিরে মাছ কেনা এখন একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে। অনেক পরিবার রয়েছে যারা সপরিবারের পুরুষ সদস্যরা একত্রিত হয়ে আনন্দের সঙ্গে মেলায় মাছ কিনতে আসেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক ণ্ডবলেন, ‘সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে ৫/৭ বছর আগে প্রায় ৬০ কেজি ওজনের বাঘাইড় ধরা পড়েছিল। এই মাছগুলো যত বড় হয় তার চামড়াও তত মোটা হয়ে যায় বলে এর স্বাদ অনেকটাই মাংসের মতো লাগে। খেতে সুস্বাদু। স্বাভাবিকভাবে এই মাছটির মূল্য কেজি প্রতি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ’