স্টাফ রিপোর্টার :
গণপরিবহনের ধর্মঘটে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ধর্মঘটের এমন পরিস্থিতির ফলে সারাদেশ থেকেও বিছিন্ন হয়ে পড়ে সিলেট। কর্মস্থলগামী বা ঘরে ফেরা মানুষ জন পড়েছেন আরো বিপাকে। রাস্তা-ঘাট যেন পাকা। তবে দুরপাল্লার বাস চলাচল করতে না পারলেও ট্রেন ও বিআরটিসি বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল। এছাড়া পাঠাও উবার চালকরা মোটরসাইকেল ও কার দিয়ে যাত্রীদের সেবা দিতে দেখা গেছে।
সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে পাথর ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিক শ্র্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা বিভাগজুড়ে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটের গতকাল মঙ্গলবার এর প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে। সেইসঙ্গে সিএনজি অটোরিকশারও ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট গতকাল শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে ধর্মঘট পালন করছেন সংগঠনের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কর্মস্থলগামীসহ জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ পরিবহন না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যস্থলে রওনা দেন। কেউ কেউ ভ্যান রিকশা করে কর্মস্থলে ছুটছেন। এদিকে ধর্মঘটের সুযোগ নিয়ে রিকশা-ভ্যানচালক, পাঠাও-উবারের রাইডার এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে মোটর সাইকেল চালকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন।
বেলা ২টার সময় দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করা আসাদ রহমান বলেন, আমার জরুরি কিছু কাজ আছে নগরীর জিন্দাবাজারে। দুঘণ্টা আগে বের হয়েও কিছুই পাচ্ছি না। হেঁটে গেলেও পৌঁছে যেতে পারতাম এত সময়ে। ক্ষোভ প্রকাশ করে আসাদ বলেন, এ কেমন ধর্মঘট? এ দেশে কিছু হলে বিপদের পড়তে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে।
সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, সারা সিলেটেই দেখতে পাচ্ছি শুধু মোটরসাইকেলেই একটু দূরের যাত্রী বহন করছে। কিন্তু টাকা নিচ্ছে অনেক বেশি। উপায় নেই তাই তাদের দাবিকৃত টাকাতেই শিবগঞ্জ থেকে বন্দরবাজার এসেছি।
অন্যদিকে সকাল থেকে সিলেট ছাড়েনি দূরপাল্লার কোনো গাড়ি। ফলে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, ঠাঁই হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দূরপাল্লার কোচগুলো। টার্মিনালে আসা অনেক মানুষকে বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ ও কাভার্ড্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা মঙ্গলবার ভোর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। সেখানকার বাস, ট্রাক, ট্যাংকলরি, মাইক্রোবাস, লেগুনা ও সিএনজি’সহ সকল প্রকার পরিবহনের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে মিছিল, সমাবেশ করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর সিলেট জেলার সকল উপজেলায় মিছিল-সমাবেশ করেন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান নেন বাংলাদেশ সড়ক শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি, সিলেট বিভাগীয় সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আলহাজ¦ গোলাম হাদী ছয়ফুল, সদস্য সচিব আবু সরকার। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও সিলেট জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস, মাইক্রেবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (১৪১৮) কার্যকরি সভাপতি মোঃ রুনু মিয়া, সহ সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম, সহ সভাপতি জামাল আহমদ, কোষাধ্যক্ষ সামছুল ইসলাম মানিক, সিলেট জেলা সিএনজি চালিত অটো, অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ জাকারিয়া, পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল আমিন. সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সহ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন তালুকদার, কোষাধ্যক্ষ রিমাদ আহমদ রুবেল, সিলেট জেলা ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি আব্দুস সালাম, সহ সভাপতি জুবের আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমির উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সহ সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রাজ্জিক লিটু, দফতর সম্পাদক আফজল চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক নুর আহমদ খান সাদেক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সোহরাব হোসেন, নির্বাহী সদস্য শাহাদত হোসেন, আকমাম আব্দুল্লাহ, শাহাদত হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বাবুল, জাফলং পাথর ব্যবসায়ী সভাপতি বাবুল আহমদ, জেলা ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক সামাদ রহমান, কোষাধ্যক্ষ রাজু আহমদ তুরু, নির্বাহী সদস্য শরিফ আহমদ, আলী আহমদ আলী, জলিল আহমদ, বেলাল আহমদ, দক্ষিণ সুরমা-মোগলাবাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি কাউছার আহমদ, সহ সভাপতি জুমায়েল ইসলাম জুমেল, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক ফলিক আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ আহমদ, কোষাধ্যক্ষ কতুব উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য শাকিল আহমদ, জমির আলী, কুটি মিয়া, শাহপরাণ থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি ফুল মিয়া, সম্পাদক আজিজুর রহমান রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক জলিল আহমদ, ফেঞ্চগঞ্জ উপজেলা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রাসেল আহমদ টিটু, সম্পাদক আহমদ লালু, কানাইঘাট আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন, পশ্চিম গোয়াইনঘাট আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান, সম্পাদক মুজিবুর রহমান, পূর্ব গোয়াইনঘাট আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি ছমেদ মিয়া, সম্পাদক আব্দুর রহিম, কোম্পনীগঞ্জ আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি হান্নান মিয়া,
সম্পাদক মাহফুজ মিয়া, গোলাপগঞ্জ আাঞ্চলিক কমিটির সভাপতি বদরুল ইসলাম, সম্পাদক সায়েল আহমদ, বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মানিক উদ্দিন, সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাবুল, জকিগঞ্জ উপজেলা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রুবেল আহমদ, সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জালালাবাদ থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি কালা মিয়া, সম্পাদক আলমগীর, ওসমানীনগর থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সুরুজ আলী, সম্পাদক বাবুল মিয়া, বালাগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি শ্রী সুজিব চন্দ্রগুপ্ত বাচ্চু, সম্পাদক মাহমুদ আব্দুল নুর, বিশ^নাথ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আলাল মিয়া, সম্পাদক মকবুল ইসলাম, এয়ারপোর্ট থানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আব্দুল আহাদ, সম্পাদক আজাদ মিয়া প্রমুখ। মিছিল-সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১০ লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জিবিকা রক্ষার্থে আমরা মানবতার জন্য শান্তিপর্ণ ভাবে ৭২ ঘন্টার ধর্মঘট পালন করছি। আমাদের বিশ^াস প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মালিক-শ্রমিকদের জীবন রক্ষা করবেন।