কাজিরবাজার ডেস্ক :
নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এমপিও নীতিমালা সংশোধনের কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী জানুয়ারির প্রথম দিকে এমপিওভুক্তির অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শুরু হতে পারে। তবে ভাড়া বাসা-বাড়িতে গড়ে ওঠা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে না বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
জানা গেছে, এ বছর এমপিওভুক্তির নীতিমালায় বেশ কয়েকটি খাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সংশোধিত নীতিমালায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন এলাকায় বিভক্ত করা হয়েছে। সেগুলো যথাক্রমে- সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও মফস্বল এলাকা।
সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম) প্রতিটি শ্রেণিতে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী থাকতে হবে। একটি শ্রেণিতে ৮০ জন শিক্ষার্থী হলে নতুন শাখা খুলতে পারবে। মাধ্যমিক স্তরে প্রতি শ্রেণিতে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী থাকতে হবে।
সিটি করপোরেশন এলাকার উচ্চমাধ্যমিক স্তরে তথা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার প্রতি বিভাগে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। একই স্তরের মফস্বল এলাকায় প্রতি শ্রেণিতে ৪০ জন করে মোট ৮০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। তাদের মধ্যে পাবলিক পরীক্ষায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করতে হবে। মফস্বল এলাকার বিজ্ঞান বিভাগে প্রতি শ্রেণিতে ৩০ জন করে শিক্ষার্থী থাকতে হবে।
এই নীতিমালায় বলা হয়েছে, সিটি করপোরেশন এলাকায় নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ৭০ শতাংশ, পৌর এলাকায় ৬০ ও মফস্বল এলাকার প্রতিষ্ঠানে ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করতে হবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ৬৫ শতাংশ, পৌর এলাকায় ৬০ ও মফস্বল এলাকার প্রতিষ্ঠানে ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করতে হবে। আর স্নাতক স্তরে সিটি করপোরেশেন এলকায় ৫৫ শতাংশ, পৌর এলাকায় ৫০ শতাংশ ও মফস্বল এলাকায় ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভাড়া বাসা-বাড়িতে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে না। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন করে বেশ কয়েকটি শিক্ষক-কর্মচারীর পদ সৃজন করা হয়েছে। আগের নীতিমালা অনুসরণ করে ২০১৯ সালে ২ হাজার ৭৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হলেও এবার তা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এমপিও নীতিমালায় আগের চেয়ে কাম্য যোগ্যতা কম-বেশি করা হয়েছে। বিভিন্ন খাতে অর্জিত নম্বর হ্রাস ও বৃদ্ধি করে তা খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই এটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদনের পর তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে আদেশ জারি করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা প্রকাশের পর পরই নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন কার্যক্রম শুরু করা হবে। চলতি মাসের (ডিসেম্বর) শেষের দিকে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে আবেদন কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও এমপিও নীতিমালা সংশোধন কমিটির আহবায়ক মমিনুর রশিদ আলম বলেন, ‘নীতিমালা সংশোধন কাজ শেষ, এখন এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অনুমোদন দেয়া হলে নতুন করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন সংগ্রহ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে।’