সরকারের বেঁধে দেয়া আলুর দামের কোন তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেটরাই আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে সরকারের নির্ধারিত খুচরা ৩৫ টাকার স্থলে ৫০/৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আলুর দাম নিয়ে সাধারণ ক্রেতারা চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আলুর বাজার সিন্ডিকেটদের হাতে থাকায় কোনো ভাবেই আলুর দাম কমছে না। এতে লাভমান হচ্ছে এক ধরনের আলু ব্যবসায় জড়িত ফড়িয়া, আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট চক্র। আলুর অভাব সৃষ্টি করে, আলু মজুদদারদের হাতে বিপুল পরিমাণ আলু মজুদ থাকার পরও দেশের আলু ক্রেতাদের পকেট কেটে এ চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি-কোটি টাকা।
দেশে প্রতিবারই রবি শস্যের মৌসুমের সময়ে বিপুল পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়ে থাকলেও কোনো-কোন কৃষক রক্ষণাবেক্ষণ ও হিমাগারে রাখার অভাবে মৌসুমী আলু পানির দামে ফড়িয়া ও আলু ব্যবসায়ীরা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করে রাখে। বাজারে একটু আলুর অভাব দেখা দিলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দামে আলু বিক্রির লক্ষ্যে একটি চক্রে রূপান্তরিত হয়ে পড়ে। এ চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকারী পদক্ষেপের অভাবে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার আলু ব্যবসায়ীদের সাথে বারংবার বৈঠক করার পর ও আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। শেষ অবধি সরকার ও আলু ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে হিমাগার পর্যায় ২৭ টাকা, পাইকারি ৩০ টাকা এবং খুচরা বিক্রিতে ৩৫ টাকা কেজিতে আলুর দাম বেঁধে দেয়া হয়। এ প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আসলেও ব্যবসায়ীরা এ দামে বিক্রি করছে না। তবে আশা করা যাচ্ছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খুচরা বাজারে আলুর দাম কয়েক দিনের মধ্যে সরকার নির্ধারিত দামের নিচে নেমে আসবে। আলুর বাজারের অস্থিরতা রোধে ক্রেতাদের সুবিধার লক্ষ্যে টিসিবির মাধ্যমে ২৫ টাকা দরে বাজারে ছাড়া হবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা; বর্তমান রবি-শস্যের মৌসুম কৃষকরা আলু চাষ করছে, এ মৌসুমে যেন আলু বীজের অভাব না হয়। তাই কৃষকরা আলু বীজ পেতে হয়রানি না হয়, এ ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও আগামীতে আলুর বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে সচেষ্টা থাকতে হবে। যাতে আলু উৎপাদনের মৌসুম পরবর্তী সময়ে আলু নিয়ে সিন্ডিকেট চক্র ক্রেতা সাধারণের সাথে দাম নিয়ে প্রতারনা করতে না পারে।
সম্প্রতি কিছুদিনের মধ্যেই আগাম নতুন আলু বাজারে আসতে শুরু হবে । এ আলু যেন সিন্ডিকেটদের হাতে না যায় এ ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট থাকতে হবে। আলু সিন্ডিকেটদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না করা গেলে এদের অপতৎপরতা আরো বৃদ্ধি পাবে। আলু বাজারজাত করতে ফড়িয়া ও সিন্ডিকেটদের দৌরাত্ম্য বন্ধে কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশের ক্রেতা সাধারণের স্বার্থ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটরা যেন চিনিমিনি খেলা করতে না পারে এ ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে যেন থাকেন, এ প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।