স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে মারতে মারতে মেরে ফেলা হয়েছে নগরীর আখালিয়া নেহারীপাড়ার যুবক রায়হান উদ্দিন আহমদকে (৩৩) এমনি অভিযোগ মায়ের। একটি গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এমনই অভিযোগ করলেন রায়হানের মা সালমা বেগম।
তিনি বলেন, শুধু টাকার জন্য নয়, রায়হানকে হত্যার পেছনে বড় কোনো কারণ আছে নিশ্চয়। নইলে এভাবে কেউ মারে? কী কষ্ট দিয়ে মারা হয়েছে রায়হানকে, আমি তো মা, কী করে সই, আমি তো ভাবতেই পারছি না।
রায়হানের মৃত্যুর পর ময়না তদন্তে ১১১ টি আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন চিকিৎসকরা। তার হাতের নকও উপড়ানো ছিলো। রায়হানকে নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে আলোচিত হচ্ছে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বরখাস্তকৃত ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। তবে সালমা বেগম মনে করেন, শুধু আকবর নয়, এই ঘটনার সাথে আরও অনেক জড়িত আছে। রায়হানকে হত্যার সাথে আকবরের সামনে ও পেছনে অনেকই জড়িত। আকবরসহ কয়কেজন অভিযুক্ত শনাক্ত হওয়ার পরও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সালমা বেগম। তিনি বলেন, এই ক্ষোভ কেবল আমার নয়, এই ক্ষোভ সবার। আজ যদি পুলিশ না হয়ে কোনো সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ থাকত, তাহলে কি গাফিলতি করতে পারত পুলিশ? গণদাবির মুখে আসামিকে দ্রত গ্রেফতার করতেই তো পুলিশকে আমরা দেখি। এখন পুলিশের কাছ থেকে পুলিশের অপরাধের বিচার পাব না? আমার ছেলে হত্যার বিচারের নিশ্চয়তা চাই।
তিনি বলেন, পিবিআই তদন্ত করছে, তারাও তো পুলিশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন মা। তার কাছে আমার আবদার, আমার রায়হানের মধ্য দিয়ে যেন চিরতরে বন্ধ হয় বাংলাদেশে পুলিশি হেফাজতে সব নির্যাতন-হত্যা। কোনো মাকে যেন আমার মতো ছেলে হত্যার বিচার চাইতে রাস্তায় নামতে না হয়।
হত্যার পর রায়হানের লাশ পুলিশ বেওয়ারিশ বলে চালিয়ে দেওয়ার দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো বলেও অভিযোগ মায়ের। সালমা বেগম বলেন, পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের পর রায়হানের পরনের শার্ট-প্যান্ট পাল্টে দেওয়া হয়েছিলো। মর্গে লাশের পরনে যে শার্ট-প্যান্ট ছিলো এগুলো রায়হানের না। মর্গে ছেলের লাশ দেখে এই ব্যাপারটি আমিই প্রথম চিৎকার করে বলেছিলাম। আমার মনে হয়, মারতে মারতে ফাঁড়িতেই মেরে ফেলা হয়েছে রায়হানকে। পোশাক বদল করে হয়তো বেওয়ারিশ লাশ বানানোর কোনো কারসাজি থাকতে পারে। ফাঁড়িতেই যখন ঘটনা ঘটেছে, তখন তো কোনো পাবলিক জড়িত না। সবাই ফাঁড়ির পুলিশ। তাঁদের কয়েকজনকে আমি মর্গে দেখে গালিও দিয়েছি। বলেছি, আমার ছেলের পরনে এই শার্ট-প্যান্ট বদল করে লাশটা বেওয়ারিশ বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এগুলো আমি রেখে দিয়েছি। তদন্ত করলে এখান থেকে অনেক কিছু বের হতে পারে।