হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বাজারের ব্যবসায়ী বিষ্ণুপদ দাসের মালিকাধীন একটি জালের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনায় ওই বাজারের ৩৯টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়া প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে পাহাড়পুর বাজারের ব্যবসায়ি বিষ্ণুপদ দাসের মালিকাধীন একটি জালের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই সময় দোকানটি বন্ধ থাকায় কেউই অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি বুঝতে পারেনি। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই এলাকায় জাল এবং কাপড়েরর দোকান বেশি হওয়ায় নিমেশেই আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। স্থানীয় লোকজন পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও আগুনের তাপে কেউ কাছেও যেতে পারেননি।
এদিকে, পাহাড়পুর বাজার একটি দুর্গত হাওর এলাকায় অবস্থিত। এছাড়া আজমিরীগঞ্জ উপজেলাতেও কোনো ফায়ার স্টেশন না থাকায় খবর দেয়া হয় নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলার ফায়ার সার্ভিসকে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ ৪ ঘন্টায়ও কোনো ফায়ার স্টেশন থেকেই কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। কোনো উপায় না পেয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা। পরে বেশ কয়েকটি ছোট পাওয়ার পাম্প মেশিন লাগিয়ে স্থানীয়রাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
এক পর্যায়ে দীর্ঘ ৪ ঘন্টা পর নবীগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে রাত ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনলেও নিঃস্ব হয়ে যান ৩৯টি দোকানের ব্যবসায়ীরা। সারা জীবনের সম্বল হারিয়ে ব্যবসায়ীরা এখন পাগল প্রায়। তারা জানান, দোকান থেকে কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি। কোনো রকমে নিজেদের প্রাণটি নিয়ে দৌঁড়ে বের হয়েছেন তারা।
অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিশ্ব দাসের মাতৃভান্ডার, হরিদাসের জনতা স্টোর, বীরেন্দ্র দাসের কারেন্ট জালের দোকান, রাতুল তালুকদারের দোকান, পৃথিশ বৈষ্ণবের মুদী দোকান, রণ বৈষ্ণবের কাপড়ের দোকান, জয়হরি দাসের কাপড়ের দোকান, কবিন্দ্র দাসের কাপড় ও জালের দোকান, গোপাল দাস (মেম্বার) এর জালের দোকান, শিবু দাসের ঢেউ টিনের দোকান, জগদীশ বৈষ্ণবের কাপড়ের দোকান, মনু দাসের চালের দোকান, সুবল দাসের কাপড়ের দোকান, সুকুমার দাসের কাপড়ের দোকান, বিধান দাসের কাপড়ের দোকান, বিন্দু চন্দ্র দাসের কাপড়ের দোকান, সত্যেন্দ্র দাসের মুদী দোকান ও ব্রজেন্দ্র দাসের এ্যালুমিনিয়ামের দোকান।
ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার দাস এবং আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আবু হানিফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।