স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর বাজারগুলোতে চড়া দামে চাউল ও সবজি বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি চাউলের দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। এছাড়া ৫০ টাকার নিচে মিলছে না কোন সবজিই। কাঁচা মরিচের দামও বর্তমানে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিপ্রতি। পেঁয়াজের বাজারেও স্বস্তি নেই। সবমিলিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্থিতে নেই ক্রেতারা। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকজনই পড়েছেন বেশি বিপাকে।
গতকাল শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ৫০ টাকা কেজির নিচে সবজি নেই বললেই চলে। সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে এখন কেজিপ্রতি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। যেখানে গত সপ্তাহে দাম ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। একই ভাবে বাজারের বিভিন্ন ধরনের সবজি থাকলেও সবধরনের সবজির দামই বেশি। বাজারে নতুন আসা ফুলকপি ৬০ টাকা, করলা ১০০ টাকা কেজি, ঝিঙা ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, শিম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢ়েড়শ ৫০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, চিচিন্দা ৫০ টাকা, জলপাই ৫০ টাকা কেজি, লাউ প্রতিপিস ৭০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক হালি কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। তবে ১০ থেকে ৩০ টাকায় এক হালি লেবু এবং ২০ টাকা করে প্রতি আটি লালশাক, পুঁইশাক, লাউয়ের ডগাসহ বিভিন্ন প্রকারের শাক পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, কোয়েল পাখি পিসপ্রতি ২৫ থেকে ৫০ টাকা, লেয়ার মুগরি পিসপ্রতি ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা এবং মুরগির ডিম হালিপ্রতি ৩৮ থেকে ৪২ টাকা দরে মিলছে। অবশ্য দেশি মুরগির ডিম কিনতে প্রতি হালিতে খরচ করতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
এদিকে স্বস্তি মিলছে না পেঁয়াজের দামেও। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। আমদানি করা বড় আকারের ভারতীয় পেঁয়াজের কেজির জন্যেও গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা। গত মাসে ভারত রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
সবজির দাম এমন বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে ব্রহ্মময়ী বাজারের বিক্রেতা আলাউদ্দিন বলেন, বন্যার কারণে সবজির দাম বাড়তি। পাইকারি বাজারেও দাম বেশি। তাই তার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। তবে শিতকালীন সবজি বাজারে এলে দাম কিছুটা কমবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল আছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দামে। তবে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের দাম বাড়ায় চালের দাম বেড়েছে। বাজার স্থিতিশীল করতে হলে চাল আমদানি প্রয়োজন। এজন্য অন্তত আমন ধান আসার আগ-পর্যন্ত চাল আমদানির ওপর জোর দিলে বাজার স্থিতিশীল হবে।
সিলেটের চালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালিঘাট ও শেখঘাট। এখান থেকে সিলেট মহানগরসহ বিভাগের বেশিরভাগ উপজেলায় চাল সরবরাহ করা হয়। মানভেদে ৫০ কেজি চাউলের বস্তা ‘২৮’ মালা চাউল ২৩৩০ টাকা, ‘২৯’ মালা চাউল ২২০০ থেকে ২২৫০ টাকা, মিনিকেট আতপ ২৩৫০ থেকে ২৪০০ টাকা, দিনাজপুরী মিনিকেট আতপ ২৪৫০ থেকে ২৪৭০ টাকা, মিনিকেট সিদ্ধ ২৪০০ থেকে ২৪৫০ টাকা, জিরা সিদ্ধ ২৬০০ থেকে ২৬৫০ টাকা, কাটারি সিদ্ধ ২৫৫০ টাকা, কাটারি ভোগ আতপ ২৫৫০ থেকে ২৬৫০ টাকা, চিনিগুঁড়া (স্থানীয়) ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা, চিনিগুঁড়া (দিনাজপুর) ৩৪০০ থেকে ৩৬০০ টাকা, কালিজিরা ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
৫০ কেজি চাউলের বস্তা মানভেদে ‘২৮’ মালা চাউল ২০০০ থেকে ২০২০ টাকা, ‘২৯’ চাউল ২১০০ থেকে ২১৫০ টাকা, দিনাজপুরী মিনিকেট আতপ ২৩৫০ থেকে ২৩৭০ টাকা, মিনিকেট আতপ ২২৫০ থেকে ২৩০০ টাকা, মিনিকেট সিদ্ধ ২৩০০ থেকে ২৩৫০ টাকা, জিরা সিদ্ধ ২৫০০ থেকে ২৫৫০ টাকা, কাটারি সিদ্ধ ২৩৫০ থেকে ২৪০০ টাকা, কাটারি ভোগ আতপ ২৪৫০ থেকে ২৫৫০ টাকা, চিনিগুঁড়া (স্থানীয়) ২৭০০ থেকে ২৯০০ টাকা, চিনিগুঁড়া (দিনাজপুর) ৩৩০০ থেকে ৩৫০০ টাকা, কালিজিরা ২৭০০ থেকে ২৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মণপ্রতি ৯২০ থেকে ৯৩০ টাকা ধানের দাম বাড়িয়ে ১০৫০ থেকে ১০৭০ টাকা করা হয়েছে। ২ মণ ধান থেকে পাওয়া যায় ৫০ কেজি চাউল।