বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা শাখার প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতী মুহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, দেশে অস্বাভাবিক মাত্রায় ধর্ষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্লজ্জ, বর্বর ও অমানবিক এই অপরাধ মহামারী আকার ধারণ করেছে। দেশের প্রচলিত আইন ধর্ষণ নির্মূলে কার্যকর নয়। বিদ্যমান আইন ও প্রয়োগনীতি দুর্বল হওয়ার কারণে হু হু করে বাড়ছে ধর্ষণ, ব্যভিচার ও নারী নির্যাতন। তাই মা-বোনদের ইজ্জত-সম্ভ্রম সংরক্ষণ ও নারী অধিকার নিশ্চিত করতে দেশের বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে ইসলামি শরিয়াহ আইন চালু করতে হবে।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিলেট এমসি কলেজে গণধর্ষণ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি আরো বলেন, অপরাধীরা গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁক-ফোঁকর গলে কিছু দিন পর বেরিয়ে যায়,সুষ্ঠু বিচার পেতে বিলম্ব হয়,এজন্য ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে জনগণ ইসলামী আইনে ধর্ষণের বিচার চায়।তাই দেশের প্রচলিত আইন পরিবর্তন করে ইসলামি আইনে বিচার করতে সরকারকে আহবান জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ইসলামে ব্যাভিচারের শাস্তি অবিবাহিত হলে প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত,বিবাহিত কেউ ধর্ষণ বা ব্যভিচার করলে তার শাস্তি পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলেছে। ধর্ষণের ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় সংঘঠিত হয়। আর তাহলো-যিনা বা ব্যভিচার ও বল প্রয়োগে সম্ভ্রম লুণ্ঠন।
তিনি কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘ধর্ষণের অপরাধে ব্যভিচারের শাস্তি প্রয়োগের পাশাপাশি ‘মুহারাবা’র শাস্তিও প্রয়োগ করা যায়। ‘মুহারাবা’ হলো অস্ত্র দেখিয়ে বা অস্ত্র ছাড়াই ভীতি প্রদর্শন করে ডাকাতি করা কিংবা লুণ্ঠন করা। এক কথায় ‘মুহারাবা’ হলো পৃথিবীতে অনাচার সৃষ্টি, লুণ্ঠন, নিরাপত্তা বিঘ্নিতকরণ, ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা ইত্যাদি। এ সব অপরাধের শাস্তি হিসেবে আল্লাহ ঘোষণা করেন-‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে-তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে (ডান হাত বাম পা/বাম হাত ডান পা) কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার তথা নির্বাসিত করা হবে।এটি হল তাদের জন্য দুনিয়ার লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়ে ছে কঠোর শাস্তি।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩৩)
এ আয়াতের আলোকে বিচারক ধর্ষণকারীকে ব্যভিচারের শাস্তির সঙ্গে সঙ্গে উল্লেখিত ৪ ধরনের যে কোনো শাস্তি প্রয়োগ করতে পারবেন। কেননা ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য ধর্ষণ হলো আল্লাহ ও তার রাসুলের নিয়ম-নীতি বিরুদ্ধ অপরাধ। আর তা তাদের সঙ্গে যুদ্ধে উপনীত হওয়ার শামিল।সুতরাং ধর্ষণের ক্ষেত্রে যিনার শাস্তির পাশাপাশি মুহারাবার শাস্তিও প্রযোজ্য হবে। বিজ্ঞপ্তি