সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ গোয়াইনঘাটের মার্জিয়াকে নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগ

9

স্টাফ রিপোর্টার :
গৃহকর্মীর কাজ দেওয়ার কথা বলে আটকে রেখে গোয়াইনঘাট উপজেলার রামিজা আক্তার মার্জিয়াকে নির্যাতন করে হত্যার পর তার লাশ গুমের অভিযোগ এনেছেন পরিবার।
তারা এও বলছেন, এ ঘটনার পর মেয়ের লাশ না পেয়ে মামলা দায়ের করায় বাদির বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলার পাশাপাশি তার পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যার হুমকিও দিচ্ছে আসামিরা।
রবিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নিহতের বাবা দিনমজুর নজরুল ইসলাম এবং মা আসমা বেগম। তাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একই গ্রামের মোতালেবের ছেলে মারুফ আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর একই উপজেলার ছৈলাখেল গ্রামের একটি চক্র গৃহকর্মীর কাজ দেওয়ার কথা বলে মার্জিয়াকে নিয়ে যায়। এ সময় তারা তিন হাজার টাকা বেতনও নির্ধারণ করে। এরপর থেকেই তারা তাকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল। সবশেষ চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রতারক চক্রের সদস্যদের মধ্যে জসিম, মাহমুদ খোকন, খোদেজা বেগম, খন্দকার জুবায়ের, নাছির উদ্দিন, খন্দকার মারুফা ও তার সহযোগিরা তাকে শ^াসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, মার্জিয়া যখন কাজ করত তখন তাকে নানাভাবে নির্যাতন করত তারা। এছাড়া তাকে কুপ্রস্তাবও দেয়া হতো। তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে তারা মার্জিয়াকে জোরপূর্রক ধর্ষণের চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এসব বিষয়ে মার্জিয়া তার বাড়িতে ফোন দিয়ে মাকে জানিয়েছিল; আর বলেছিল তারা আমাকে মেরে ফেলবে। এরপর মার্জিয়ার সাথে তার মায়ের আর কোন ফোনালাপ হয়নি বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, ২৪ এপ্রিল বিকেলে মার্জিয়ার মা গৃহকর্তা খোদেজা বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান তার মেয়েকে একটি প্রোবক্স গাড়ীতে সিটের সাথে কাপড় দিয়ে বেঁধে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এ সময় তিনি তার মেয়ের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে দেয়নি। পরে তারা মার্জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে দাবি করে তার পিতা-মাতার কাছ থেকে কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে। আর মার্জিয়াকে তারা ঢাকায় নিয়ে যায়, পরে তাদের বলে- তার মেয়ে মারা গেছে, কিন্তু করোনার কারণে লাশ বাড়িতে নেয়া যাবে না। পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ ফেরত চাওয়া হলে তারা নানা টালবাহানা করে। পরে তিনি সিলেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত না করে উল্টো তাদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, এখন মার্জিয়ার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এ ব্যাপারে তারা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন।