মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে বর ও যাত্রীরা না আসায় হতাশ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কনে পরিবার।
জানা গেছে, গত ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের হলদিপুর গ্রামের মৃত ফারুক চৌধুরীর ছেলে লিপু চৌধুরী (৩০) ও একই গ্রামের ছইফুদ্দিনের কন্যা শিলা আক্তার (১৯) এর বিয়ের হওয়ার কথা ছিল। বিয়ে উপলক্ষে জগন্নাথপুর পৌর শহরের হাসপাতাল পয়েন্ট এলাকায় কনের আত্মীয় বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সারা দিন অপেক্ষা করেও অবশেষে বর ও যাত্রীরা আসেননি। পরে কনে পক্ষের দাওয়াতি মানুষকে বিয়ের খাবার প্রদান করা হয়। এতে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে কনে পরিবার জানান।
কনে পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এটি কোন সাধারণ বিয়ে নয়। রীতিমতো কেলেঙ্কারি বিয়ে ছিল। কনে পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বর পরিবারের জায়গায় ঘর বানিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। সেই সুবাদে লিপু চৌধুরী ও শিলা আক্তারের মধ্যে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর মধ্যে একবার গর্ভপাত ঘটানো হয়। এতো কিছুর পরও লিপু চৌধুরী শিলাকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করতে চাইলে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। এসব ঘটনায় শিলা আক্তার বাদী হয়ে লিপু চৌধুরীকে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪। তারিখ-১৭/০৯/২০২০ইং। উক্ত মামলা দায়ের হওয়ার পর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে লিপু চৌধুরীর অন্যত্র বিয়ে করার স্বাদ পূরণ হয়নি। এবার শুরু হয় মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার কূট-কৌশল। বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয় কিছু শালিসি ব্যক্তি। এ সময় শালিসি ব্যক্তিদের প্রচেষ্টায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে ১ অক্টোবর বিয়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। তবে বর লিপু চৌধুরী পক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় গরীবের কন্যাকে মেনে নিতে পারছেন না। যে কারণে বর ও যাত্রীরা আসেননি বলে অনেকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কনে শিলা আক্তার বলেন, আমাকে বিয়ে করার কথা বলায় লিপু চৌধুরীর সাথে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক হয়। এর মধ্যে লিপু চৌধুরী আমার ২ মাসের গর্ভ নষ্ট করেছেন। এতো কিছুর পরও আমি তাকে চেয়েছি। অবশেষে বিয়ের অনুষ্ঠানে সে না আসায় আমি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি। এখন আমি ন্যায় বিচার চাই। তবে চেষ্টা করেও লিপু চৌধুরীর মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের কাজী মাওলানা তাজুল ইসলাম আলফাজ বলেন, লিপু চৌধুরী ও শিলা আক্তারের বিয়ে রেজিস্ট্রি হওয়ার জন্য সব কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে। পরে তাদের মধ্যে মতানৈক্য হওয়ায় রেজিস্ট্রি হয়নি। আপাতত স্থগিত রয়েছে। জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ ধর্ষণ মামলার আসামী গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।