কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে নানা ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি এবং ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাৎ, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনের অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় দেড় বছরের অধিক সময় হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকে ফার্মাসিস্ট পদে দায়িত্বে থাকা মুশাহিদ হাসপাতাল থেকে প্রতিমাসের বেতন-ভাতা মাসে ১দিন এসে টিপ-স্বাক্ষর দিয়ে অফিস সহকারি শামীম আহমদের যোগসাজশে উত্তোলন করে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, ফার্মাসিস্ট মুশাহিদ ট্রেজারি অফিসে নিজে উপস্থিত থেকে বেতন-বিল প্রস্তুত করে প্রতিমাসে প্রায় ৭৯ হাজার টাকা বেতন উত্তোলন করে থাকেন। আর সেই বেতনের একটি অংশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারি শামীম আহমদকে দিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন মুশাহিদ।
জানা যায়, ফার্মাসিস্ট মুশাহিদের বাড়ি কানাইঘাট উপজেলার বাণীগ্রাম ইউপির বাউরভাগ গ্রামে, তিনি ২০১৭ সালের শেষের দিকে ছুটি নিয়ে হজ¦ পালন করেন। হজ¦ পালন করে কয়েকমাস হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করলেও দেড় বছর থেকে একেবারে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া হার্ডডিক্স যাচাই বাছাই-করলে ফার্মাসিষ্ট মুশাহিদ হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন তা প্রমাণিত হবে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডাঃ শেখ শরফ উদ্দিন নাহিদ ও অফিস সহকারী শামীম আহমদ দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের অসৎপন্থা অবলম্বন করে হাসপাতালে বিভিন্ন খাতের টাকা ভুয়া বিল-ভাউচার করে তাদের যৌথ স্বাক্ষর দিয়ে উত্তোলন সহ হাসপাতালের অভ্যন্তরে অনিয়ম দুর্নীতি সহ ফার্মাসিস্ট মুশাহিদ অনুপস্থিত থেকে বেতন ভাতা নিচ্ছেন এমন অভিযোগ অনেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দিয়েছেন। এসব অভিযোগ তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় ফার্মাসিস্ট মুশাহিদ কয়েকদিন পূর্বে চাকুরী থেকে অবসর (এলপিআর) গ্রহণের আবেদন হাসপাতালের অফিস সহকারি শামীম আহমদের নিকট দাখিল করেন। সীল-স্বাক্ষরহীন আবেদনটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পড়ে থাকলে ফার্মাসিস্ট মুশাহিদ দাবী করেছেন তিনি মাস দিন থেকে অবসরে আছেন।
কবে এবং কোন তারিখে আবেদন করেছেন এ ব্যাপারে মুশাহিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দিন-তারিখ আমার মনে নেই, হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ আছেন তারা সব-বিষয়ে জানেন। দেড় বছর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে কিভাবে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন জানতে চাইলে কোন ধরনের সদোত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন মুশাহিদ।
হাসপাতালের অফিস সহকারি শামীম আহমদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফার্মাসিস্ট মুশাহিদ চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের একটি আবেদন দিয়েছেন সেটি কোন কার্যকর হয়নি। হাসপাতালে অনুপস্থিত থেকে কিভাবে বেতন ভাতা নিচ্ছেন জানতে চাইলে শামীম বলেন আপনারা এ ব্যাপারে টিএইচও স্যারের কাছে জানতে পারবেন। ফার্মাসিস্ট বেতনের একটি অংশ আপনাকে দিচ্ছে জানতে চাইলে শামীম তা অস্বীকার করেন।
হাসপাতালের টিএইচও ডাঃ শেখ শরফ উদ্দিন নাহিদের সাথে ফার্মাসিস্ট মুশাহিদ আলী দেড় বছর থেকে অনুপস্থিত থেকে কিবাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাকে লিখিত অভিযোগ দেন বলে ফোন কেটে দেন।
সচেতন মহল হাসপাতালের অভ্যন্তরে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি, বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাত, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন সহ অন্যান্য অভিযোগগুলো দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক কর্তৃক তদন্তের জোর দাবী জানিয়েছেন।