স্টাফ রিপোর্টার
নগরীর পূর্ব মিরাবাজার এলাকার দাদা পীর মাজার সংলগ্ন বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাÐে দগ্ধ ৯ জনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাদের ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণে ৭ জন কর্মচারী ও ২ জন পথচারী দগ্ধ হন। তৎক্ষণাৎ আহতদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে দগ্ধদের চিকিৎসা চলে। পরে বুধবার দুপুরে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধদের উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিকে বুধবার সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভ‚ঁইয়া জানিয়েছিলেন, অগ্নিদগ্ধদের শরীর ১৫-৪০ ভাগ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। ৪৮ ঘণ্টা পর বুঝা যাবে কাদের অবস্থা গুরুতর। তবে আমরা সবাইকে সিরিয়াস হিসেবে দেখছি। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়েছে। দগ্ধদের চিকিৎসাসেবা গুরুত্ব দিয়ে করা হচ্ছে।
আহতরা হলেন, শাহপরান এলাকার বাসিন্দা ও পাম্প কর্মচারী মিনহাজ আহমদ, ইমন, মুহিন, শহরতলীর কোরবান টিলার রুমেল, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কাদিরগাঁওয়ের বাদল দাস, সদর উপজেলার জাঙ্গাল এলাকার তারেক আহমদ, একই এলাকার রুমান, তাহিরপুরের শ্রীপুরের রিপন মিয়া, একই গ্রামের লুৎফুর রহমান।
এদের মধ্যে ৭ জনই ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী। বাকি ২ জন পথচারী বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ। তিনি জানান, সিএনজি ফিলিং স্টেশনে কমপ্রেসর কক্ষের একটি বাল্ব বিস্ফোরণের পর ৯ জন দগ্ধ হন। বিস্ফোরণের পর পাম্পের সামনের মিরাবাজার-টিলাগড় রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের নির্দেশে ওসমানী হাসপাতালে আহত ৯ জনকে দেখতে যান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরুল হাসান। এসময় আহতদের খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেন তিনি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে আহতদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশন দেন।
অপরদিকে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ইলিয়াস শরীফসহ উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, বিরতি ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বুধবার পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। তিনি জানান, মঙ্গলবার ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তারা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন অভিযোগ দায়ের করা না হওয়ায় কোন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। কেউ মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।