তাহিরপুরে বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত গ্রাম পুলিশ

13

তাহিরপুর থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে কর্মরত ৫২জন মহল্লাদার ও ৭ জন দফাদার প্রায় তিন বছর ধরে হাজিরা ভাতা ও ১৩ মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত। এসব গ্রাম পুলিশ বেতন ভাতা না পেয়ে বর্তমানে আর্থিক অনটনে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। গ্রামাঞ্চলে যারা জনজীবনের নিরাপত্তা বিধানে ব্যস্থ সময় পার করছেন আজ তাদের জীবনই কাটছে আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে। উপজেলার গ্রাম পুলিশরা তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে এলেও তাদের দাবি পূরণ হচ্ছেনা এখনও।
উপজেলা গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়ন শাখা সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৫৯জন গ্রাম পুলিশ কর্মরত। এর মধ্যে ৫২ জন চৌকিদার ও ৭ জন দফাদার। এসব গ্রাম পুলিশের মধ্যে অনেকের পদবির পরিবর্তন হলেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। দিন দিন তাদের কাজের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বাড়ানো হচ্ছেনা তাদের সুযোগ-সুবিধা। উপজেলার গ্রাম পুলিশ সদস্যদের দৈন্যদশার প্রধান কারণ হচ্ছে অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা। স্বাধীনতার পর জনপ্রতি গ্রাম পুলিশের বেতন ধার্য করা হয় ২২০ টাকা। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন সরকার বেতন বৃদ্ধি করে চৌকিদার পদের জন্য ৭০০ টাকা আর দফাদার পদের জন্য ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করেন। একই সঙ্গে দুটি ঈদে বেতনের সমপরিমাণ দুটি বোনাসও পাওয়ার কথা। কিন্ত তারা এসব পাচ্ছেন না।
গ্রাম পুলিশরা জানান, বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন থেকে একজন গ্রাম পুলিশ মাসিক ১২শ টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দফাদার ৩ হাজার ৫শ টাকা এবং মহল্লাদার ৩ হাজার ২৫০শ টাকা বেতন ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও সরকার ও স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে নিয়মিত তারা পাচ্ছেন না।
শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের এক দফাদার জানান, বেতন তুলতে পোহাতে হয় তাদের নানা ধরনের দুর্ভোগ ও ঝামেলা। সরকারি বরাদ্দ থাকলে প্রতি মাসে বেতন পান তারা। আর না থাকলে কয়েক মাস পর পর বেতন পান তারা।
মহল্লাদার আব্দুল মোছাব্বের বলেন, একজন দিন মজুরের দৈনিক মজুরি ৩শ থেকে ৪শ টাকা। অথচ দিন মজুরের চেয়ে কম বেতনও তারা ঠিকমতো পান না। নানা সমস্যার মধ্যে থেকেও তারা গ্রামাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সহ নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রাম পুলিশরা খুব অর্থে সংকটে রয়েছেন। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব আয় কম থাকায় বেতন ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করতে পারছিনা।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বলেন, আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ইউনিয়ন পরিষদ অংশের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করার জন্য।
তাহিরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, আমি বর্তমানে রুটিন মাফিক দায়িত্ব পালন করছি। তবুও স্যারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে তাদের বেতন ভাতার ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করবো।