সৈয়দ সুজাত আলী নিউইয়র্ক থেকে :
ফেব্রুয়ারির চেয়ে আজ অনেকটাই ভিন্ন। করোনা কাউকে করুণা দান করছে আর কাউকে পরোয়ানা দান করছে। দেখা যাক শেষ বিচারে বিগত বির্বাচন গুলির নিরিখে ডেমোক্রেট প্রার্থীদের মধ্যে তুলনামূলক বিচারে দুর্বল জোবাইডেন নাকি জো হুকুম ট্রাম্প সাহেব বাজিমাত করেন। সে পর্যন্ত না হয় আমরা উৎসাহী দর্শকগণ গ্যালারিতে বসে সর্তক মন ও চোখকে পাহারায় রাখি।
যখন মেজরিটি ভোটার পছন্দ করে একজন প্রার্থীকে কিন্তু এই একই মেজরিটি ভোটার মনে করে পাশ করবেন অন্যজন, বাস্তব ও ধারণার এই বৈপরীত্যের সমাধান হয়ত মিলবে রাজনীতির গবেষকদের পুরাতন বা নতুন কোনো তত্ত্বে।
কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, এই তত্ত্বের সন্ধান আমার জানা নেই। আমি বলছিলাম আমেরিকার আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা। যেখানে lpsos and Reuters polls এর জরিপে এই মুহূর্তে জো বাইডেন পরাক্রমশালী ট্রাম্পের চেয়ে ৬% এগিয়ে। অর্থাৎ বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে পছন্দ করেন ৪৫% আমেরিকান আর ট্রাম্পের ভাগে মাত্র ৩৯% আমেরিকান।
অন্যদিকে এই বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে Fox News Poll এর জরিপ অনুসারে আমেরিকার ৫৫% মানুষ মনে করে নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পই বাজিমাত করবেন। বাস্তব সত্য (৩৯% ট্রাম্পকে সমর্থন করেন) ও ধারণাগত সত্যের (৫৫% মনে করেন ট্রাম্পই জিতেবেন) মাঝে কোনটি আসলে বেশী শক্তিশালী? ইতিহাস বলে নির্বাচনের ক্ষেত্রে ‘বাস্তব অবস্থার’ চেয়ে ‘ধারনা’ অনেক বেশী শক্তির পরিচয় দিয়েছে। উপরে CNN এর লিংক বলে ১৯৮৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত প্রতিটি বির্বাচনে ‘পছন্দের চেয়ে ধারনাই’ সব সময় জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। অর্থাৎ জনমত জরিপে কেউ এগিয়ে থাকুক বা না থাকুক, যিনি জিতবেন বলে মানুষ ধারণা করেছে তিনিই ছিতেছেন।
ধারণা জিনিসটি তাহলে অনেক বলবান। ধারণার শক্তিতে এগিয়ে থাকা ট্রাম্প সাহেব ও তাঁর রিপাবলিকদের ধড়িবাজিও তাই শুরু হয়ে গেছে। ২০০৮ সালে ইভা মুরি (Eva Murry) নামের এক চর্তুর্দশীকে (১৪) নাকি বাইডেন সেক্সোয়ালী হ্যারাস করেছিলেন। ১২ বছর পর উনার বয়স আজ ২৬ হওয়ার পরই কেবল এই হ্যারাসমেন্টের এসেন্স এসে উনার নাকে লাগলো। তিনি লিগ্যাল কর্তৃপক্ষের দরবারে তাই বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উক্তাপণ করেছেন। এখন তদন্তে দেখা যাচ্ছে ঐদিনের ডিনারে মি: বাইডেন ছিলেনই না। অবশ্য থাকলে অথবা কিছু কইলে, এমন কি একটু ছুঁইলেও কী এমন জাত চলে গেলো। ইহাতো ঊহাদের সংস্কৃতিই! বরং অভিযোগ করলেই অপসংস্কৃতি বা বিকৃতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমেরিকানরা বা বড় করে বললে পশ্চিমারা নির্বাচনের সময় এক অদ্ভুত কর্তব্য পালন করে। তাদের সমাজে ফ্রি মিক্সিয়ের নামে যা তাদের সবার জন্য প্রযোজ্য, নির্বাচনের সময় তাদের প্রার্থীর ক্ষেত্রে ঠিক তা-ই তাদের কাছে অসহ্য হয়ে উঠে। যেমন, নির্বাচন আসলে হাজার বছর আগে কোনো এক মিডনাইট পার্টিতে কোনো এক ললনার ‘হ্যারাস’ হওয়ার কথা হঠাৎই মনে পড়ে যায় এবং সাথে সাথেই উক্ত মিডনাইট পার্টির ঐদিনের সাথী, আজকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে ইতিহাসের পাতায় নিচের অনুজ্জল নামটি লিখিয়ে নেন।