কমিউনিটি ভিত্তিক সঞ্চয় ও ঋণ কার্যক্রমে দুর্নীতি ও অনিয়ম করায় ফাতেমা বেগম ফাতু, রেবা বেগম ও লাভলী বেগমের বিরুদ্ধে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবরে পৃথক পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
২৪ আগষ্ট সোমবার মিনা বেগম, রিপা বেগম, বিথী বেগম, বিন্দা রানী, নুরেছাবি, সাবিনা বেগম, সাগলা বেগম, নুরজাহান বেগম সহ ৯জন স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপি দাখিল করেন তারা।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্ট অব বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন খান, এশিয়া তৃণমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন সিলেট মহানগরের সভানেত্রী রেহানা ফারুক শিরিন, সংস্থার সদস্য মিনা বেগম, রিপা বেগম, বিথী বেগম, বিন্দা রানী, নুরেছাবি, সাবিনা বেগম, সাগলা বেগম, নুরজাহান বেগম প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, কমিউনিটি ভিত্তিক সঞ্চয় ও ঋণ কার্যক্রম ২০১২ সাল থেকে গরীব, মেহনতি সদস্যরা এই সংস্থায় ৪০ টাকা হারে প্রতি মাসে সঞ্চয় প্রদান করে আসছেন। এই সংস্থার সদস্যদের মাঝে বিতরণের জন্য বছরে ২ থেকে ৩ বার শিক্ষা ভাতা, গর্ভ ভাতা, প্রশিক্ষণ ভাতা, পুষ্টি ভাতা সহ অন্যান্য আনুসাঙ্গিত ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই সংস্থার সদস্যরা কখনো এসব ভাতা পাননি। ফাতেমা বেগম ফাতু ও তার সহযোগীরা কমিউনিটি ভিত্তিক সঞ্চয় ও ঋণ কার্যক্রমে সদস্যদের নামে আসা এসব টাকা দীর্ঘ থেকে আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। স্বনজপ্রীতির মাধ্যমে এসব টাকা প্রভাবশলীদের মাঝে বিতরণ করে যাচ্ছেন তারা। সংস্থার অনেক সদস্য কম শিক্ষিত হওয়ায় পুরাতন বইয়ের অনেক হিসাব অভিযুক্তরা নতুন বইয়ে লিপিবদ্ধ করে না। অসহায় ও গরীবদের জন্য আসা সহায়তা অনুদান ডিপ টিউভওয়েল, ডাস্টবিন, স্যানিটারি ল্যাট্রিনের রিং প্রভাবশালীদের মাঝে নগদে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তারা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার ফলে ও প্রাণের ভয়ে অসহায় মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। কেউ তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। স্মারকলিপিতে তারা আরো উল্লেখ করেন, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলের সহযোগিতায় তারা এ ধরনের দুর্নীতিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধনও করা হয়। এরপরও তারা তাদের এই অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) ফেইজ-২ আনন্দ স্কুলের নামেও বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন তারা। এই স্কুলে অসহায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার কথা থাকলেও বিত্তশালীদের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়াশোনা করে যাচ্ছে। সংস্থা থেকে এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল ড্রেস, বই, খাতা ইত্যাদি দেওয়ার কথা থাকলেও নামমাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থী এই সুযোগ পাচ্ছে। আশ্চর্য্যরে বিষয় হলো এই স্কুলের শিক্ষার্থী আমেরিকা প্রবাসী হওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত তার দাদী তার নামে ভাতা নিচ্ছেন। এই স্কুলে তাদের আত্মীয়স্বজনদের দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে, অথচ তাদের তেমন কোন ডিগ্রী আছে কিনা তা কারই জানা নেই। ফাতেমা বেগম ফাতু সহ তার সহযোগীরা এসব দুর্নীতির মাধ্যমে অনেক টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে গাড়িবাড়ির মালিক হয়ে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত করলে তাদের এই দুর্নীতির আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে এতে করে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এসব শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার ফিরে পেতে পারে। তাই তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিজ্ঞপ্তি