কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের চা শ্রমিকের আন্দোলনে দলই চা বাগান দীর্ঘ ২১ দিন পর খুলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সোমবার (১৭ আগষ্ট) বিকাল ৪টায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্তে বিতর্কিত ব্যবস্থাপককে বাহিরে রেখে ঘোষিত নোটিশ প্রত্যাহার করে দলই চা বাগান। পরবর্তী বৈঠকে দীর্ঘ ২১ দিনের চা শ্রমিকদের মজুরি ও রেশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় আকষ্মিকভাবে বন্ধ হওয়া এ বাগান।
দলই চা বাগান বন্ধ ঘোষণার পর গত ২৮ জুলাই চা শ্রমিক মনু-ধলাই ভ্যালীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরদিন ২৯ জুলাই সমঝোতা বৈঠক করেন। এ বৈঠকে দলই চা বাগানের শ্রমিকদের এক সপ্তাহের মজুরি প্রদানের সিদ্ধান্ত হলেও চা বাগান খোলার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এর পর ৪ আগষ্ট আবারও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বৈঠক বসে। এ বৈঠকের কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়নি বলে সে দিন সন্ধ্যায় দলই চা বাগান থেকে আগত সহস্রাধিক নারী-পুরুষ চা শ্রমিকরা উপজেলা প্রশাসন এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
২১ দিন ধরে দলই চা বাগান বন্ধ থাকায় কোন প্রকার মজুরি ও রেশন প্রদান না করায় চা বাগানের শ্রমিকরা পরিবার মানবেতন জীবন যাপন করেন। এ প্রেক্ষিতে সোমবার বিকাল ৪টায় মৌলভীবাজার- ৪ আসনের সাংসদ উপাধ্যক্ষ ড. এম এ শহীদ মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ হাসান, জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ বিপিএম এর উপস্থিতিতে দলই চা বাগানে গিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বৈঠক করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, ওসি মো. আরিফুর রহমান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিছ বেগম, শ্রম অধিদপ্ততর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের শ্রম কর্মকর্তা মোশাহিদ বক্স চৌধুরী, দলই চা বাগান কোম্পানীর এজিএম খালেদ খান, চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে সংসদ সদস্যের নির্দেশনা মোতাবেক ২৭ জুলাই ঘোষিত নোটিশ প্রত্যাহার করে ১৮ আগষ্ট মঙ্গলবার থেকে দলই চা বাগান খুলে দিতে হবে। বিতর্কিত ব্যবস্থাপককে চা বাগান কোম্পানীর সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হবে। চা শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য সমস্যা নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে। বৈঠকে ২১ দিন দলই চা বাগান বন্ধ থাকায় শুধু চা শ্রমিকদের ক্ষতি নয় চা বাগানের উৎপাদনেরও বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে বলে সংসদ সদস্য তুলে ধরেন। এ নির্দেশনা তাৎক্ষনিকভাবে ধলই চা বাগান কোম্পানীর প্রতিনিধি মেনে নিয়েছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, অবশেষে এমপি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে বৈঠকের সিদ্ধান্তে ২১ দিন পর মঙ্গলবার থেকে দলই চা বাগান খুলবে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, দলই চা বাগান নিয়ে বেশ সমস্যায় ছিলেন। বৈঠকে সাংসদ মহোদয়ের নির্দেশনায় মঙ্গলবার থেকে ধলই চা বাগান খুলবে।