বড়লেখা থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সহস্রাধিক পিডিপির বিদ্যুৎ গ্রাহক ভুতুড়ে বিল, লো-ভোল্টেজ, এসটি ফিউজ লাগাতে অর্থ আদায়সহ নানা হয়রানীতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ দিয়েও সুফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ৯৫ ভাগ এলাকায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেও দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের বৃহত্তর দোহালিয়া, গজভাগ, কাশেম নগর, গুচ্ছগ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন মিটারের রিডিং না দেখে অস্বাভাবিক ইউনিট ধরে প্রতি মাসে কাল্পনিক বিল করায় গ্রাহকরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। এ তিন গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর। অনেকে ২/৩ বাতির সাথে বড়জোর ২টি ফ্যান ব্যবহার করেন। কিন্তু মাস শেষে পিডিপি ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দিচ্ছে। বিদ্যুৎ গ্রাহক লনি মিয়াকে জুলাই মাসে ৩৪৮৪ টাকা, খালই মিয়াকে ১১৩৫ টাকা, আহছান উদ্দিনকে ৪০৭২ টাকা, মনিরুন বিবিকে ১২২০ টাকার বিল দিয়েছে পিডিবি। তাদের ব্যবহার অনুযায়ী প্রতিমাসে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার বেশি বিল আসার কথা নয়।
বিদ্যুৎ গ্রাহক ফরিদ আহমদ, রজব উদ্দিন, রমজান আলী, সুবির দেব, আছমা বেগম, নজিব আলী, তসিদ আলী, আতিকুর রহমান প্রমুখ জানান, পিডিবি’র কর্মচারীরা ট্রান্সফরমারের ধারণ ক্ষমতার বাহিরে অবৈধ সংযোগ দেয়ায় সন্ধ্যার পর তারা মোমবাতির আলোও পান না। ট্রান্সফরমারের এসটি ফিউজ পুড়ে গেলে ঘুষ না দিলে পিডিবির লাইনম্যান ফিউজ লাগিয়ে দেন না। বিকাশে টাকা পাঠালে লাইনম্যান মেইন লাইন সাটডাউন দেন। তারপর স্থানীয় কোন লাইনম্যানকে টাকা দিয়ে এসটি ফিউজ লাগাতে হয়। সাব-এসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আনছারুল কবির শামীম নানা অজুহাতে গ্রাহকদের মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইতিপুর্বে বিভিন্ন অভিযোগে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। কিন্তু রহস্যজনকভাবে মাত্র ৪ মাসের মাথায় পুনরায় এখানে ফিরে তিনি পুর্বের মতো ঘুষ বাণিজ্য শুরু করেছেন। পিডিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর হয়রানীতে তারা অতিষ্ট হলেও দেখার যেন কেউ নেই। গত ২৯ জুন ভুতুড়ে বিলের হয়রানী বন্ধের জন্য শতাধিক গ্রাহক পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো পরের মাসেও ভুতুড়ে বিল দেয় পিডিবি। আগস্ট মাসেও ভুতুড়ে বিল আসার আশংকা করছেন তারা।
এব্যাপারে জানতে পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী সামস বিন আরেফীনের সাথে রোববার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি জরুরী সভায় রয়েছেন, পরে কথা বলবেন জানিয়ে বিষয়গুলো এড়িয়ে যান। এরপর অনেকবার চেষ্টা করেও তার সাথে আর যোগাযোগ করা যায়নি।