মোস্তাফা জব্বার
১৯৬৪ সালে বাংলাদেশে আসা কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যবহার বিশেষজ্ঞ পর্যায়েই সীমিত ছিল। পরমাণু শক্তি কমিশনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের বাইরে হাবিব ব্যাংক বা এই ধরনের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষজ্ঞ দিয়ে কম্পিউটার ব্যবহার করত। প্রোগ্রামিং না জানলে কম্পিউটার ব্যবহার করা যেত না। অবশ্য সেই কম্পিউটারের সুবাদে দেশের প্রথম কম্পিউটারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর জন্ম হয়। এরপর এনসিআরসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার বাজারজাত করতে থাকে। এরপর আশির দশকে পার্সোনাল কম্পিউটার আসার পরে দেশে ধীরে ধীরে সীমিত পর্যায়ে কম্পিউটারের ব্যবহারের সূচনা হয়। প্রথম পিসি এ্যাপল সিরিজ জনজীবনে তেমন কোন প্রভাব ফেলতে না পারলেও আইবিএম পিসি, এমএস ডস, লোটাস ১২৩, ওয়ার্ড স্টার, ওয়ার্ড পারফেক্ট, ডিবেস বেশ জনপ্রিয়তা পায় ও কম্পিউটার প্রোগ্রামার বা বিজ্ঞানী না হয়েও সাধারণ মানুষ কম্পিউটারের জগতে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। তখনই বাংলাদেশে কিছু কম্পিউটার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেরও জন্ম হয়। প্রথম দিককার কোম্পানির মাঝে বেক্সিমকো, সিপ্রোকো, এনসিআর ফ্লোরা ইত্যাদি উল্লেখ করার মতো। তবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য কম্পিউটারের বিপ্লবটা ঘটে ৮৭ সালে কম্পিউটার দিয়ে বাংলা পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৭ সালে কম্পিউটারে বাংলাভাষার প্রবর্তন এবং ১৯৮৮ সালে বিজয় বাংলা সফটওয়্যার উদ্ভাবন আমার হাতেই হয়েছে। বলা যেতে পারে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কম্পিউটারের সম্পৃক্ততা বা মানুষের দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে এই প্রযুক্তিকে যুক্ত করার বিপ্লবটা তার মধ্য দিয়েই শুরু হয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কম্পিউটারের সম্পৃক্ততা বস্তুত বাংলাদেশের একই সময়ে ১৯৮৭ সালে জন্ম নেয় দেশের প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি। সেই সমিতি ৯২ সালে সরকারের কাছে নিবন্ধিত হয় এবং ৯৮ সালে বেসিসের জন্মের আগ পর্যন্ত একক সংগঠন হিসেবে এই খাতকে সামনে নিয়ে যায়। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্ব পর্যন্ত সরকারী আনুকূল্য তো দূরের কথা প্রযুক্তি জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা এবং নেতৃত্বের দূরদর্শিতার অভাবে ১৯৯২-৯৩-৯৪ সালে বিনামূল্যে সি-মি-উই-৩ সাবমেরিন কেবল সংযোগ থেকেও বাংলাদেশকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বাস্তবতা হলো ৭৫ পরবর্তী সরকারসমূহের মাঝে জিয়া ছিলেন প্রযুক্তিজ্ঞানহীন। তার আমলে আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি। এরশাদ ভিসিপি-ভিসিআর আমদানি বৈধ করলেও কম্পিউটারের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোন উদ্যোগ নেয়নি। তবে জিয়ার আমলের চাইতে এরশাদ কিছুটা কম্পিউটারে আগ্রহী ছিলেন। এরশাদ পরবর্তী বেগম জিয়ার সরকার বরং কম্পিউটারবিরোধী মনোভাবাপন্ন ছিলেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই অবস্থার আমূল পরিবর্তন করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ ছিল জেআরসি কমিটি গঠন, সুপারিশমালা গ্রহণ ও সেসব সুপারিশের ২৮টি বাস্তবায়ন করে রেখে আসা।
জেআরসি কমিটির পর্যবেক্ষণ : জেআরসি কমিটি সফটওয়্যারের বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষণ করে তাদের পর্যবেক্ষণে দেখতে পায় ১৯৯৬ সালে অর্থাৎ রিপোর্ট তৈরির আগের এক বছরে সফটওয়্যার সম্পৃক্ত প্রযুক্তিখাতে বিশ্ব বাজার ছিল ২ শত ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে এককভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ খাত থেকে আয় করেছে ১০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৯৬ সালে প্রযুক্তি খাতে মার্কিন বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল শতকরা সাড়ে ১২ ভাগ। একই বছর অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সাড়া বিশ্বে কর্মসংস্থান হয়েছে বিশ লাখ মানুষের। এর মধ্যে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থান হয়। পরবর্তী চার বছর অর্থাৎ ২০০০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬ লাখ প্রোগ্রামার প্রয়োজন হবে। অন্যদিকে ভারতীয় বাণিজ্য সংগঠন নাসকমের তথ্য অনুযায়ী ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ভারত অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আন্তর্জাতিক রফতানি থেকে শূন্য দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ মোট ১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করতে সক্ষম হয়েছে। খুবই লক্ষণীয় বিষয় যে ভারত সফটওয়্যারের শিল্পখাতে তখনও ব্যাপকভাবে অভ্যন্তরীণ বাজারের ওপর অধিক নির্ভরশীল। তখনও তাদের রফতানি ১ বিলিয়ন ডলার হয়নি। কিন্তু রফতানি বাড়ানোর জন্য তাদের প্রচেষ্টা ছিল ব্যাপক।
জেআরসি কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, এই অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিতে দ্রুত বিকাশমান দেশ বিশেষ করে ভারত, মালয়েশিয়া এবং ফিলিপিন্সের কর্মকৌশল ও সরকারী নীতিমালা পর্যবেক্ষণ করতে সেই সব দেশে প্রতিনিধি দল পাঠাবে।
পরবর্তীতে সময়ের স্বল্পতা বিবেচনায় শুধু ভারতে প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সরকার জেআরসি কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের সময় বেঁধে দিয়েছিল দুই মাস। অবশ্য কমিটির কাজের পরিধি বিবেচনায় অতিরিক্ত আরও ছয় সপ্তাহ মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেআরসি কমিটির একটি প্রতিনিধি দল ভারতে শিক্ষা সফর করে। সফরকালে প্রতিনিধি দল মুম্বাই, ব্যাঙ্গালুরুর এবং কলকাতায় ভারতের শীর্ষ সফটওয়্যার শিল্প বিশেষ করে সফটওয়্যার এক্সপোর্ট হাউস, ডেটা এন্ট্রি এক্সপোর্ট হাউস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক পরিদর্শন করে এবং সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে। সফরকালে প্রতিনিধি দল সফটওয়্যার শিল্প বিকাশে তাদের কার্যক্রমসহ নানা বিষয় পর্যবেক্ষণ করে। এছাড়াও জেআরসি প্রতিনিধি দল ভারতে নয় থেকে দশ হাজার জনবল সমৃদ্ধ কোম্পানি যারা বিস্তৃত স্পেকট্রামে কাজের সঙ্গে জড়িত সেই ধরনের বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে।
কমিটির অপর একটি প্রতিনিধি দল ঢাকার মিরপুরে বিসিক ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। প্রতিনিধি দলটি ঢাকার অদূরে নবনির্মিত টঙ্গী-আশুলিয়া সড়কের পাশে ইনফরমেশন টেকনোলজি ভিলেজ প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা নিরীক্ষার জন্য সাইট পরিদর্শন করে।
কমিটির পর্যবেক্ষণে উঠে আসে যে, ভারত আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার মার্কেটে প্রবেশ করেছে। কম্পিউটার খাতে বিদেশে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকদের বিক্ষিপ্ত উদ্যোগের মাধ্যমে ভারত এটি সম্ভব করতে সক্ষম হয়েছে। এ খাতে বিদেশে অনাবাসিক ভারতীয় নাগরিকগণ বিদেশে তাদের লিয়াজোঁ কাজে লাগিয়েছে। অনাবাসিক ভারতীয় নাগরিকরা কেউ কেউ পরবর্তীতে দেশে ফিরে নিজেরাই সফটওয়্যার শিল্প স্থাপন করেছে। এক্ষেত্রে প্রবাসী ভারতীয় নাগরিকরা ভারতে ডেটা ও সফটওয়্যার শিল্পকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা পালন করে। ব্যক্তি উদ্যোগে প্রযুক্তি খাতে বড় আকারের সুফল আসতে থাকায় ভারত সরকার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে এগিয়ে নিতে সময়ক্ষেপণ না করে এই শিল্পের দ্রুত বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। সরকার ১৯৮৬ সালে কম্পিউটার সফটওয়্যার নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধা প্রদানে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তি উপযোগী দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট দ্রুত বিস্তার লাভ করে। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহও পিছিয়ে থাকেনি, বাজার চাহিদা পূরণে বেসরকারী উদ্যোগে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে। এর ফলে পেশাদার কর্মীরাও নিজেদের বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে তোলার বিরাট সুযোগ হাত ছাড়া করেনি এবং পণ্যের বিদেশী ক্রেতারাও আশ্বস্ত হতে পেরেছে যে ভারতের পারফরমেন্স উপযুক্ত মানের। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় প্রযুক্তি পণ্যের চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে।
জেআরসি কমিটির কর্মকাণ্ড ও সুপারিশ : কম্পিউটার সফটওয়্যার সার্ভিসে ভারতের বিশাল সফলতার পেছনে যে বিষয়গুলো কাজে লাগিয়েছে জেআরসি কমিটির সদস্যগণ সেগুলো দক্ষতার সঙ্গে চিহ্নিত করেন। সেই আলোকে কমিটি তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশে কমিটি চারটি খাতে মোট ৪৫টি সুপারিশ তৈরি করে।
জেআরসি কমিটি আর্থিক, মানব সম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো এবং বাজারজাত বিষয়ক চারটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করে। চিহ্নিত প্রতিটি ক্ষেত্রে কমিটি পৃথক পৃথকভাবে সমস্যা, চ্যালেঞ্জ এবং প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে সরকারের আশু করণীয় নির্ধারণ করে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে সুপারিশমালা প্রণয়ন করে। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে এই সুপারিশমালা ছিল এক যুগান্তকারী ঘটনা, প্রযুক্তি বিকাশের বিস্ময়কর সূচনা এগিয়ে যাওয়ার কাণ্ডারী। জেআরসি কমিটির নিরলস প্রয়াস পৃথিবীতে চলমান তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে ভারতের দুই দশক পরে হলেও বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করতে পেরেছে। এর আগে কোন শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ শরিক হতে পারেনি।
প্রায় সাড়ে তিন মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল কমিটির এই রিপোর্টটি সরকারের নিকট পেশ করা হয়। আর্থিক, মানব সম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো ও ডিজিটাল পণ্য বাজারবিষয়ক কমিটি চিহ্নিত এই চারটি ক্ষেত্রে সমস্যা এবং সম্ভাবনা বিষয়ে সরকারের কাছে পেশ করা সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন কিভাবে করা হবে রিপোর্টে সেই বিষয়গুলোও স্পষ্ট করা হয়।
সুপারিশসমূহের গুরুত্বের বিচারে স্বল্প মেয়াদি ও মধ্যম মেয়াদি এই দুই ভাগে বাস্তবায়নের জন্য কমিটি সুপারিশ করে। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল, সেই বিবেচনায় দীর্ঘ মেয়াদি কোন পরিকল্পনার সুপারিশ কমিটি করেনি। কমিটি আর্থিক খাতে ১০টা, মানব সম্পদ খাতে ৯টা, অবকাঠামো খাতে ১৪টা এবং বাজারজাতকরণ খাতে ১২টা মিলিয়ে মোট ৪৫টি সুপারিশ পেশ করে। নিচে সুপারিশসমূহ তুলে ধরা হলো।
আর্থিক খাত : আর্থিক বিষয়ে কমিটির বিশ্লেষণে উঠে এসেছে উচ্চ আমদানি কর ও ভ্যাটের কারণে কম্পিউটার সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এর ফলে দেশে গ্রাহক পর্যায়ে কম্পিউটারের ব্যবহার হার খুবই সামান্য। দ্বিতীয়ত কোন প্রকার প্রণোদনা না থাকায় আমদানিকারকরাও কম্পিউটারের বাজার সম্প্রসারণে খুব বেশি একটা আগ্রহী নয়। তৃতীয়ত, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের অতিরিক্ত সুদের হার (তৎকালীন সময়ে শতকরা ১৫ থেকে ১৭ ভাগ) উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে। চতুর্থত, ব্যাংক ঋণে বিদ্যমান দীর্ঘ জটিল প্রক্রিয়া আমদানিকারকদের জন্য অন্যতম একটি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কমিটি চিহ্নিত করে।
এই ক্ষেত্রে কমিটির সুপারিশ হচ্ছে, কম্পিউটারের ওপর থেকে সকল ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার, দশ বছরের জন্য কর রেয়াত, স্থানীয়ভাবে তৈরি করা সফটওয়্যারের জন্য শতকরা ১৫ ভাগ অভ্যন্তরীণ মূল্য সুবিধা প্রদান, সফটওয়্যার ও ডেটা প্রসেসিং সার্ভিস রফতানির ক্ষেত্রে এলসির পরিবর্তে সেলস কনট্রাক্ট অনুমোদন প্রদান, রফতানি খাতে ব্যাংক সুদের হার হ্রাস করা, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার সুবিধা নিশ্চিত করতে সুদবিহীন ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য তহবিল গঠন এবং আইটি গবেষণার জন্য তহবিল গঠন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
মানব সম্পদ উন্নয়নে সুপারিশমালা : বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে বিভাগ স্তরে উন্নীত করে সংশ্লিষ্ট পেশাদারদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করা, ১৯৯৯ সালের মধ্যে কমপক্ষে এক হাজার প্রশিক্ষক তৈরি করতে বিসিসিকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান, স্নাতক স্তরে সকল শিক্ষার্থীর জন্য আবশ্যিক বিষয় হিসেবে বেসিক কম্পিউটার দক্ষতা বিষয়টি পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে কমিটি। কমিটি সকল বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, বিআইটিএস এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারবিষয়ক ডিগ্রী বা ডিপ্লোমার ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা বাড়ানো, প্রতি দুই বছর অন্তর প্রয়োজনবোধে কোর্স ক্যারিকুলাম পর্যালোচনা ও উন্নত করা, জাতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা ও সনদ ব্যবস্থা উন্নয়নে বিসিসিকে শক্তিশালী করা, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইটি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনকারী আইটি পেশাদারদের জন্য চাহিদাভিত্তিক উচ্চপর্যায়ের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বিসিসিকে শক্তিশালী করে দায়িত্ব প্রদান এবং সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে কমিটি সুপারিশ পেশ করে। জেআরসি কিমিটির সুপারিশসমূহের আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে আগামী সপ্তাহে আলোচনা করব।
লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যার-এর জনক।