মজুদকৃত পাথরের নিলাম বাতিলের দাবিতে কানাইঘাটে পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মিছিল

37
নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মিছিল (বামে) ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ইউএনও বারিউল করিম খান বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করছেন (ডানে)।

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারী সহ সুরমা নদীর খেয়াঘাট এলাকার মজুদকৃত পাথর পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট কর্তৃক জব্দ করে নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে শত শত পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। গতকাল সোমবার লোভাছড়া পাথর কোয়ারী ও খেয়াঘাট এলাকার শতশত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা কানাইঘাট পূর্ব বাজারে জমায়েত হন। সেখান থেকে তারা বিকেল ২টায় প্রচন্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক পাথর নিলাম প্রক্রিয়া বাতিল সহ কোয়ারী এলাকায় গত শুকনো মৌসুমে উত্তোলনকৃত খরিদকৃত তাদের বৈধ পাথর বিক্রির সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান। এছাড়া প্রশাসন কর্তৃক পাথর ব্যবসায়ীদের হয়রানী, তাদের পাথর পরিবহনের বাহনের ক্ষতি সাধন বন্ধ সহ নানা ধরনের শ্লোগান দিয়ে হাজারো পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে প্রায় ২ ঘণ্টা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় বিশৃংখলা এড়াতে থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম এর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের সেখানে অবস্থান করতে দেখা যায়। বিক্ষোভকালে পাথর ব্যবসায়ীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পাথর ব্যবসায়ীদের কোন ধররে নোটিশ প্রদান ছাড়াই তাদের মনগড়া ভাবে শুকনো মৌসুমে কোয়ারী থেকে উত্তোলনকৃত বর্তমানে নৌপথে বিক্রি করার জন্য সেখানে এবং খেয়াঘাট এলাকায় রাখা মজুদকৃত হাজার হাজার ঘন ফুট পাথর জব্দ করে সেই বৈধ পাথর অবৈধ বানিয়ে নিলামে বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করায় শত শত পাথর ব্যবসায়ীরা আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন। নিলাম প্রক্রিয়া বাতিল করা না হলে ব্যবসায়ীরা তাদের সমস্ত পুঁজি হারিয়ে পথে বসবেন এবং যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পাথর ক্রয় করেছেন তারা নানা ধরনের হয়রানী সহ বড় ধরনের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ীদের মজুদকৃত বৈধ পাথর বিক্রির সুযোগ সহ হাজার হাজার শ্রমজীবী পাথর শ্রমিকদের কর্মসংস্থান স্বচল রাখতে অবৈধ পন্থায় পাথর নিলাম প্রক্রিয়া বাতিল করার জন্য তারা খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর তথা সিলেটের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। লোভাছড়া কোয়ারীতে লাখো শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থানের চাকা স্বচল রাখতে পাথর পরিবহন ও উত্তোলন ভবিষ্যতে বন্ধ না করার জন্য খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষের আশ্রয়স্থল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ব্যবসায়ী ও হাজার হাজার পাথর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। বিক্ষোভ প্রদর্শন পরবর্তী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বারিউল করিম খানের সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে মূলাগুল লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি ও মূলাগুল আদর্শ পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি এবং বাংলাদেশ পাথর ব্যবসায়ী সমিতি কানাইঘাট আঞ্চলিক শাখার নেতৃবৃন্দ কোয়ারীর কার্যক্রম স্বচল, পাথর পরিবহন ও নিলাম পক্রিয়া বন্ধের দাবীতে লিখিত স্মারকলিপি পেশ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নাজমুল ইসলাম হারুন, অর্থ সম্পাদক লোভাছড়া কোয়ারীর বিশিষ্ট পাথর ব্যবসায়ী তমিজ উদ্দিন মেম্বার, জেলা পরিষদের ১৫ নং ওয়ার্ড সদস্য পাথর ব্যবসায়ী আলমাছ উদ্দিন, কানাইঘাট বাজার বণিক সমিতির সাধারন সম্পাদক পাথর ব্যবসায়ী আব্দুল হেকিম শামীম, কানাইঘাট আঞ্চলিক পাথর ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম রানা, মূলাগুল আদর্শ পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, মূলাগুল লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন, বাংলাদেশ পাথর ব্যবসায়ী সমিতি কানাইঘাট আঞ্চলিক শাখার উপদেষ্টা ফরিদ আহমদ ডিলার, হাবিব আহমদ মেম্বার, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এনামুল হক, সমিতির সভাপতি আব্দুল মালিক মানিক, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী খাজা শামীম আহমদ শাহিন সহ পাথর ব্যবসায়ী ও কোয়ারীর পাথর শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।