স্টাফ রিপোর্টার :
বিশ^নাথে যৌতুক দাবির মিথ্যা অভিযোগে স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলায় জেল খাটছেন এক যুবক। এমনকি কনের মা ভাইকে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে বলে ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিশ^নাথ উপজেলার বাইশঘর গ্রামের মৃত বুজুর আলীর পুত্র জুনেদ আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে জুনেদ বলেন, তার বড় ভাই নেফুর আলী গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিশ্বনাথ উপজেলার কাহিরঘাট গ্রামের মৃত সোনা উল্লাহর কন্যা মোছা: শাফিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে সুন্দরভাবে তাদের সংসার চলছিল। গত ৫ জুলাই তার ভাইয়ের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর কন্যা সন্তানকে দেখতে গত ১২ জুলাই বিকালে তার ভাবির মা, বোন, ভাইসহ বেশ ক’জন আত্মীয় তাদের বাড়িতে আসেন। এ সময় অন্যান্য মেহমানরাও বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। বাড়িতে আসার পর তার তালতো ভাই গেদু মিয়া উত্তেজিত কন্ঠে কথা বলতে থাকেন। এ সময় জুনেদ সেখানে গিয়ে বাড়িতে আরও মেহমান আছে তাই একটু আস্তে কথা বলতে গেদুকে অনুরোধ করেন। এ কথাকে কেন্দ্র করে গেদুর সাথে জুনেদের উচ্চ বাক্য হয়।। হঠাৎ করে গেদুর এমন আচরণে জুনেদ হতবাক হয়ে যান। ঐ দিন সন্ধ্যার পরই কাহিরঘাটের তৈমুছ আলী, একই গ্রামের তারেক হাসান দুলাল, চান্দবরাং গ্রামের কামরুজ্জামান সেবুল, লহরী গ্রামের জুবায়ের আহমদ ফাত্তাহসহ কয়েকজন ব্যক্তি জুনেদদের বাড়িতে আসেন। এ সমস্ত মুরব্বী এসে বলেন জুনেদ নাকি তার ভাবির ভাইসহ অন্যদের আটকিয়ে রেখেছে এবং এই খবর মোবাইলে গেদু মিয়া বলায় মুরব্বীরা তাদের বাড়িতে এসেছেন। এ সময় জুনেদের বাড়িতে আরো কিছু মেহমান উপস্থিত ছিলেন। মেহমানদের সাথে কথা বলে আগত মুরব্বীরা অবগত হন এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
জুনেদ বলেন, আপ্যায়ন শেষে ভাবি তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যেতে বললে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে ওইদিনই তিনি তার বাড়িতে যান। পরের দিন একটি অনলাইন পোর্টালে দেখতে পাই ‘আমরা নাকি তার মা-ভাইদের আটকে রেখেছিলাম’ এ ধরণের একটি খবর প্রকাশ হয়। খবরে আরও বলা হয়, চান্দবরাং গ্রামের কামরুজ্জামান সেবুল তাদের এসে উদ্ধার করে নিয়ে যান। পরে ওই অনলাইনে এমন খবর প্রকাশের পর সেবুল তার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি কাউকে উদ্ধার করেননি। দুই আত্মীয়র মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। যা আমরা উভয় পক্ষ সমাধান করি। এরপর ১৬ জুলাই হঠাৎ জানতে পারি ভাবি বিশ্বনাথ থানায় আমার বড় ভাই নেফুর আলীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি যৌতুকের মামলা করেছেন (মামলা নং-১২, তাং-১৬/০৭/২০২০)। মামলায় উল্লেখ করেছেন, ১২ জুলাই তার ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে নাকি আমরা ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করি এবং তা না দেওয়ায় মারধর করেছি। মামলার ঘটনা শোনে আমরা বিস্মিত হই। যোগাযোগ করি ভাবির বাড়ি থেকে গত ১২ জুলাই আমাদের বাড়িতে আসা গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে। তারাও এই মামলার কথা শোনে হতবাক হন। মামলা দায়েরের পর গত ১৬ জুলাই পুলিশ আমার ভাইকে গ্রেফতার করে। অথচ তিনি দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ ও গ্রেফতারের দিনও অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করায়। জুনেদ বলে তার পরিবারের অনেকেই প্রবাসী। ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দাবীর বিষয়টি অযৌক্তিক। সংবাদ সম্মেলনে জুনেদ মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তার ভাই নেফুর আলীর মুক্তি দাবী করেন। এ ব্যাপারে তিনি পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শামছুল ইসলাম সমুজ, কিয়াছত আলী, নাজমুল ইসলাম চৌধুরী অপু, শানুর আলী, ছইল উদ্দিন, আমির উদ্দিন, খসরু মিয়া, সাইদুল, আব্দুল মোজাহিদ, তৈমুছ আলী, তারেক হাসান দুলন, সেবুল মিয়া, নুর মিয়া, সাইস্তা মিয়া, কামরুজ্জামান সেবুল, যুবায়ের আহমদ ফাত্তাহ প্রমুখ।