নবীগঞ্জে ৮৫টি স্কুল সংস্কার কাজ হয়নি, বরাদ্দকৃত ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ফেরত

4

নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
নবীগঞ্জ উপজেলার ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারের ১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা ফেরত গেছে। এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে। শিক্ষকদের মধ্যেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে জেলা জুড়ে আলোচিত ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাজী সাইফুল ইসলামের উদাসীনতা ও অনৈতিক মানসিকতাকে দায়ী করা হচ্ছে। এতগুলো প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরতের ঘটনাকে নজিরবিহীন হিসেবে আখ্যায়িত করছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ৬ জুলাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওই নোটিশ জারী করেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস ও দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ৫৯টি বিদ্যালয়ে ২ লক্ষ এবং ২৬টি বিদ্যালয়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মেরামত কাজের জন্য অনুমোদিত হয়। বিদ্যালয়গুলোর অনুকূলে বরাদ্দ নিয়ে লুকোচুরি খেলায় মেতে ওঠে উপজেলা শিক্ষা অফিস। ৬ মাস পর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম অবগত হন। ২১ জুন এনিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষকদের অগ্রিম ভিত্তিতে কার্যসম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিধি মোতাবেক উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী কর্তৃক কাজের অগ্রগতি নিয়ে প্রত্যয়ন নিয়ে বিপত্তি দেখা দেয়। কাজের অগ্রগতি ও প্রত্যয়ন ছাড়া টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিশিকান্ত দেবনাথ। তৈরি হয় জটিলতা। এনিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল কয়েকদফা বৈঠক করেও সমাধানে ব্যর্থ হন।
মাত্র ৬টি বিদ্যালয় কার্য সম্পাদন করে অর্থ উত্তোলন করে। ৭৯ টি বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থের বরাদ্দ বাতিল হয়। অনেক শিক্ষক আংশিক কাজ করে ক্ষতিগ্রস্ত হন। অনেক স্থানে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাথে শিক্ষকদের মতবিরোধ দেখা দেয়। এছাড়া গত ডিসেম্বর মাসে আসা বরাদ্দ নিয়ে রহস্যজনক নিরবতা এবং শেষ মুহূর্তে বরাদ্দকৃত অর্থ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুকূলে নেয়ার প্রচেষ্টাকে কমিশন বাণিজ্যের পরিকল্পনা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এঘটনায় কোন শিক্ষককে ফাঁসানোর চেষ্টা হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম বলেন, রহস্যজনক কারণে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেষ মুহূর্তে বরাদ্দের ঘটনা অবহিত করেন। তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়েও আইনি জটিলতায় টাকা ফেরত যায়। দুরভিসন্ধিমূলক ঘটনায় দায়ভার অবশ্যই শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিতে হবে।
এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার কাজী সাইফুল ইসলামের সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।