দুর্যোগ-মহামারির সময় সুখবর রয়েছে। অস্বাভাবিক সময়ে স্বাভাবিকতার আশা তেমন থাকে না। করোনাভাইরাসের কারণে একটা সংকটকাল অতিক্রম করছে গোটা বিশ্ব। আমরা এক জাতীয় দুর্যোগকাল অতিক্রম করছি।
অনেক নিরাশার মধ্যে সুখবর বয়ে এনেছে প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী একক মাস ও এক অর্থবছরে রেমিট্যান্সে রেকর্ড হয়েছে; আর নতুন মাইলফলকে পৌঁছেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এবার রিজার্ভ পৌঁছেছে ৩৬ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৬০০ কোটি ডলারে। একক মাসের হিসাবে জুনে রেকর্ড ১৮৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩৯ শতাংশ এবং আগের মাসের চেয়ে প্রায় ২২ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে একক মাসে এত রেমিট্যান্স আগে কখনো আসেনি। সদ্যঃসমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেশি। এক অর্থবছরে এত রেমিট্যান্স বাংলাদেশ আগে কখনো অর্জন করেনি।
বিষয়গুলোর ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র বলেছেন, ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনাসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বৈধপথে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়েছে। বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান হিসেবেও বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রা পেয়েছে বাংলাদেশ। এসব কারণে রিজার্ভ নতুন মাইলফলকে পৌঁছেছে। গত বছরের ১ জুলাই থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। প্রণোদনা দেওয়ায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকে প্রতি মাসে রেমিট্যান্স বাড়তে থাকে। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। করোনা মহামারির প্রভাবে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে রেমিট্যান্সে নিম্নগতি ছিল। মে মাস থেকে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়। বছর শেষে রেমিট্যান্সে প্রায় ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রেকর্ড ১৮৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের অর্থবছরের জুন মাসে এসেছিল ১৩৭ কোটি ডলার। গত মে মাসে রেমিট্যান্স ছিল ১৫০ কোটি ৩৪ লাখ ডলার।
এই দুঃসময়ে রেমিট্যান্সপ্রবাহ জাতির জন্য সুখবর বয়ে এনেছে। রিজার্ভও বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার আরো তৎপর হবে বলে আমরা আশা করি।