মাহবুব আহমদ খান বিয়ানীবাজার থেকে :
বিয়ানীবাজারের চারখাইয়ে ডা. জোবায়ের আহমেদ এর বিরুদ্ধে রোগীর সাথে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার বিকেলে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার খবরে এলাকাবাসী তাকে জোবায়ের মেডিকেয়ার সেন্টারে অবরুদ্ধ করে রাখেন। রাতে পুলিশ এসে ডা. জোবায়েরকে গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনায় নির্যাতিত তরুণী থানায় মামলা করলে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে চারখাই জোবায়ের মেডিকেয়ার সেন্টারে এক তরুণী আসেন চিকিৎসার জন্য। ডা. জোবায়ের তার রুমে চেকআপের সময় তরুণীর সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করেন। একপর্যায়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করলে ঐ তরুণী আর্তচিৎকার শুরু করেন। পরে বাইরে অপেক্ষমান তার মায়ের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন।
এ অবস্থায় মুহূর্তের মধ্যে তরুণীর আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা ছুটে এসে ডা. জোবায়েরকে তার চেম্বারে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এতে উত্তেজনা দেখা দিলে প্রথমে চারখাই ফাঁড়ি পুলিশ ও পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে। এ সময় উত্তেজিত জনতার দাবীর প্রেক্ষিতে পুলিশ ডা. জোবায়ের আহমেদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। রাতে নির্যাতিত ঐ মহিলা ডা. জোবায়েরকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডা. জোবায়ের আহমেদ এর কোন বক্তব্য পাওয়াও যায়নি। তবে, আহমেদ জোবায়ের নামীয় তাঁর ফেসবুক একাউন্ট থেকে গতকাল ডা. জোবায়ের এর বোন আনজুমা সীমা একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমার ভাই কোনদিন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। আজও করবেন না। একটা মহল সবসময় তাকে সেখানে থাকতে দিতে চায় না। তাকে অপশন দেওয়া হয়েছে, সিলেট ছেড়ে গেলে মামলা দিবে না। আমার ভাই লড়তে জানে। তিনি মামলা লড়বেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আইনের মাধ্যমেই তিনি নির্দোষ প্রমাণ হবেন।’
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাহিদুল হক বলেন, যৌন হয়রানি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ডা. জোবায়েরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, চারখাইয়ে ডা. জোবায়ের আহমেদ এর পক্ষে-বিপক্ষে শক্তিশালী দু’পক্ষ রয়েছে। এ কারণে ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তিনি চারখাই ছাড়তে বাধ্য হন। দীর্ঘ কয়েকমাস পর পরিস্থিতি শান্ত হলে চারখাইয়ে জোবায়ের মেডিকেয়ার সেন্টার খুলে পুনরায় রোগী দেখা শুরু করেন ডা. জোবায়ের আহমেদ। শেষ পর্যন্ত যৌন হয়রানীর মতো ঘৃণ্য আচরণের অভিযোগে তাকে কারাগারে যেতে হলো।