উত্তর কাজিরবাজারে পুলিশের উপর ছাত্রদলের একাংশের হামলার ঘটনা ॥ দেড়শ’ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট মামলা, ২২ জনকে কারাগারে প্রেরণ

55

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর উত্তর কাজিরবাজারে খন্দকার আব্দৃুল মুক্তাদিরের বাসা থেকে তার অনুসারী ছাত্রদল নেতাকর্মীদের একাংশ কর্তৃক পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার দিন রাতেই লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শাহিন আহমদ বাদি হয়ে ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৯০/১০০ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেন। যার নং- ৩৪।
এর আগে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার হওয়া পুলিশ এজাহারনামীয় ছাত্রদলের ২২ নেতাকর্মীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল রবিবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক মো: মামুনুর রশীদ সিদ্দিকীর আদালতে হাজির করে। পরে আদালতের বিচারক তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
কারাগারে প্রেরণকৃত আসামীরা হচ্ছে- নগরীর মিরের ময়দান চন্দ্রিমা ২১ নং বাসার মৃত এমতে আলীর পুত্র আনোয়ার হোসেন মানিক (৪৩), নগরীর পশ্চিম পাঠানটুলা মোহনা ৩৭/৩ নং বাসার মৃত আজির খানের পুত্র আফছর খাঁন (৩৫), নগরীর টিলাগড় রাজপাড়া ২৫/বি নং বাসার মৃত এম হুদার পুত্র রাহিয়ান চৌধুরী রাহি (২৫), মোগলাবাজার থানার ধরমপুর গ্রামের মৌলানা আব্দুল আজিজের পুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক (৩০), নগরীর মজুমদারীর মৃত আকিক চৌধুরীর পুত্র চৌধুরী মোহাম্মদ সোহেল (৪০), ফেঞ্চুগঞ্জ থানার করিমপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র ফুয়াদ আহমদ (৩০), একই থানার ফকিরপাড়ার আব্দুল আলীর পুত্র মিজানুর রহমান (৩০), গোলাপগঞ্জ থানার কান্দিগাঁও বাকারপাড়ার আব্দুল আলীর পুত্র মো: নুরুল হক (২৬), বিয়ানীবাজার থানার রামদাবাজারের চন্দগ্রামের আতিকুর রহমানের পুত্র হাবিবুর রহমান ফাহিম (২১), একই থানার চারখাই মুন্সিরচরের মৃত সেলিম আহমদের পুত্র মো: আফজাল আহমদ (২৭), টুকেরবাজার ভাগারপাড়ার মনফর আলীর পুত্র রুবেল আহমদ (২৪), মোগলাবাজার থানার জালালপুর এলাকার মিরারগাঁও গ্রামের মৃত সৈয়দ মখলিছ আলীর পুত্র সৈয়দ মাহতাব (৩০), নগরীর লন্ডনী রোডের ১৪৪/৩ নং বাসার আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র রাসেল আহমদ (৩১), কোম্পানীগঞ্জ থানার বর্ণি কাগাইলবাজারের সাহেব আলীর পুত্র মঞ্জুর আহমদ মিজান (২০), নগরীর শিবগঞ্জ সবুচবাগ ১০/বি নং বাসার শামসুল ইসলামের পুত্র রেজওয়াদুল ইসলাম (২৫), দক্ষিণ সুরমা কদমতলী পালপুরের মৃত আব্দুস সালামের পুত্র মো: আব্দুল হাছিব (৩২), জৈন্তাপুর থানার দিঘিরপাড়ের মৃত আছর আলীর পুত্র মো: শামীম আহমদ (২৬), মোগলাবাজার থানার দাউদপুর গ্রামের তামিম হোসেনের পুত্র আফজল হোসেন (২১), জালালাবাদ থানার গোবিন্দগঞ্জ আলীনগরের মৃত আশিদ আলীর পুত্র রুহেল আমিন (২২), নগরীর শিবগঞ্জ সোনারপাড়া ২২২/১ নং বাসার মৃত ফিরোজ বক্্র’র পুত্র মো: ইমরান বক্্র (২২), ফেঞ্চুগঞ্জ থানার মোগলপুর গ্রামের ইসমাইল খানের পুত্র তপু আহমদ খান (৩০) ও নগরীর মেন্দিবাগ ৩৬/এ নং বাসার আব্দুল মালিকের পুত্র মারজান হোসেন সাপ্পি (২০)।
উল্লেখ্য, কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে খন্দকার মুক্তাদির অনুসারী ছাত্রদলের একাংশে নেতাকর্মীরা বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ট খন্দকার মুক্তাদিরের বাসায় জড়ো হতে থাকেন। গত শনিবার বিকেল ৩ টার দিকে তারা মিছিল বের করতে চাইলে কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মিছিলে বাধা প্রদান করে। এ সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে পুলিশের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছিল। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যাপক ইট পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকে। প্রায় অর্ধ ঘন্টাব্যাপী এ অবস্থা চলাকালে পুলিশ এক পর্যায়ে ত্র্যাকশনে যায়। তারা লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। পুলিশের উপর হামলাকারী ছাত্রদলের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে খন্দকার মুক্তাদিরের বাসার বিভিন্ন কক্ষ থেকেও আটক করা হয়। এর মধ্যে গতকাল ২২ নেতাকর্মীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।