কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিশ্বে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত রোগীও ৭০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তুরস্কে করোনা আক্রান্তদের ৮০ ভাগই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রাশিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৯ হাজার করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ব্রিটেনে আরও ২০৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে করোনায়। আর যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে ৭৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছে করোনায়। এশিয়ার দেশ ভারতে দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ। একদিনে শনাক্ত হয়েছেন ৯৯৭১ জন। এরই মধ্য দিয়ে শীর্ষ আক্রান্ত পাঁচ দেশের তালিকায় উঠে গেল দেশটি। স্পেনকে টপকে তারা ওই স্থানে উঠে যায়। লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল জানিয়েছে, তারা আর করোনা সংক্রমণের বিস্তারিত তথ্য দেবে না। আন্তর্জাতিক এক সংবাদ মাধ্যম জানায়, সংক্রমণের বিস্তারিত তথ্য ব্রাজিল তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের জেদ্দা নগরীতে আবারও মসজিদে নামাজ বন্ধ করে কার্ফু জারি করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী করোনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে যাওয়া ওয়ার্ল্ডোমিটার ডট ইনফোর মতে, বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা চার লাখ দুই হাজার ৬৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গেছে ৭০ লাখ পাঁচ হাজার ৪৭১ জনে। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৪ লাখ ২৭ হাজার ৪০ জন। এ্যাক্টিভ কেস রয়েছে ৩১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৬২ জন। যাদের মধ্যে ৫৩ হাজার ৬৫৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির কোভিড-১৯ ড্যাশবোর্ডে মৃতের সংখ্যা ছিল চার লাখ ২৪৩ জন। আক্রান্ত ৬৯ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৬ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩১ লাখ দুই হাজার ৮৬৩ জন। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গেছেন প্রায় এক লাখ ১০ হাজার। মৃত্যুর তালিকায় এর পরই আছে ব্রিটেন ও ব্রাজিল।
যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে ৭৪৯ জনের প্রাণহানি : যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৭৪৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রবিবার বাল্টিমোরভিত্তিক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য বলছে, এ নিয়ে দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা এক লাখ নয় হাজার ৭৯১ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৯ লাখ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ৫ লাখ মানুষ। বিশ্বে করোনার ভয়াল থাবায় সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেনের মতোই যুক্তরাষ্ট্রে গড় মৃত্যুহার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি।
স্পেনকে টপকে ভারত পঞ্চম : ভারতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৫৭ জন। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যার দিক থেকে স্পেনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ স্থানে পৌছে গেছে ভারত। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৬ হাজার ৯৫৪ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৮৭ জন। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউটস অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (এআইআইএমএস) পরিচালক ডাঃ রনদীপ গুলেরিয়া বলেন, আগামী দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
রাশিয়ায় আরও ১৩৪ মৃত্যু : রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রায় ৯ হাজার মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়ছে। রবিবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আট হাজার ৯৮৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল চার লাখ ৬৭ হাজার ৬৭৩।
সংক্রমণের তথ্য দেবে না ব্রাজিল : গত কয়েক মাস ধরে ব্রাজিলে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ইতোমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বের দ্বিতীয় এবং মৃত্যুর হিসাবে তৃতীয় অবস্থানে চলে এসেছে তারা। সরকারী হিসাব ও প্রকৃত সংখ্যায় গড়মিল রয়েছে এবং মৃতের প্রকৃত সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি বলে মত বিশ্লেষকদের। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোর খামখেয়ালি সিদ্ধান্তকেই দায়ী করছেন সমালোচকরা। এবার সমালোচনার আগুনে অনেকটা ছাইচাপা দিতেই করোনা সংক্রমণের তথ্য লুকিয়ে ফেলেছে ব্রাজিল সরকার। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে মোট আক্রান্ত ও অঞ্চলভিত্তিক সংক্রমণের তথ্যগুলো। এখন থেকে শুধু দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাই প্রকাশ করা হবে। আর কোন বিস্তারিত তথ্য দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে ব্রাজিলিয়ান কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো এক টুইটে বলেছেন, ক্রমবর্ধমান তথ্য থেকে কোন দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি বোঝা যায় না।
ব্রিটেনে আরও ২০৪ মৃত্যু : ব্রিটেনে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২০৪ জনের প্রাণ কেড়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৪৬৫ জনে। ব্রিটেনে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জেদ্দায় আবার কার্ফু : করোনার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আবারও জেদ্দা শহরে দুই সপ্তাহের জন্য কার্ফু জারি করেছে সৌদি আরব। শনিবার থেকেই নতুন করে ওই কার্ফু কার্যকর হয়েছে। খবরে জানানো হয়েছে, কার্ফু প্রতিদিন বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে ভোর ৬টায় শেষ হবে। একই সঙ্গে জেদ্দার সব মসজিদে আবারও নামাজ আদায় স্থগিত করা হয়েছে। যদিও আজান দেয়া যাবে।