সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব থামছে না, সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সাইবার অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বার বার ঘোষণা সত্ত্বেও থামছে না গুজব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ইস্যুতে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছেই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এসবের ওপর কারো কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধ মামলায় আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে নানা গুজব ভাইরাল হচ্ছে। সাঈদী সরকারের বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্ত হচ্ছেন বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। ইতোপূর্বে সাজাপ্রাপ্ত সাঈদীকে চাঁদে দেখার গুজব ছড়িয়ে দেশের কয়েকটি জেলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে এবার সে রকম কোন পরিস্থিতি সৃষ্টির কোন সুযোগ নেই, দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুজব সৃষ্টিকারীদের গ্রেফতারে চেষ্টা করে যাচ্ছেন জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ মামলায় গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এমন রায়ের পর সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে দেশের সাতক্ষীরা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, যশোর, বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, জয়পুরহাট, ঝিনাইদহ ও চট্টগ্রামসহ ৩৪ জেলায় ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটায় জামায়াত-শিবির। প্রথম দিনের সহিংসতায় ২২ জন নিহত হয়। শুধু বগুড়াতেই নিহত হয় ১১ জন। ওই সহিংসতায় ৭৮ জন নিহত হয়। পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়া ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উপজেলা কার্যালয়েও হামলা করে তারা। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপীলে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদন্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়। এর পর সাঈদীর খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দায়ের করেন তার আইনজীবীরা। আর রাষ্ট্রপক্ষ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ডের আবেদন করে। রিভিউয়ের রায়ে সাঈদীর আমৃত্যু কারাদন্ডই বহাল রাখা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি ইউনিটের প্রধান উপকমিশনার আ ফ ম আল কিবরিয়া বলেন, আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়ার পর থেকেই গুজব ছড়ানো অব্যাহত আছে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে সুযোগ নিয়েছে তার অনুসারীরা। কারণ, এ সময় অধিকাংশ মানুষই ঘরে অবস্থান করছেন। ঘরে অবস্থান করার কারণে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশি ব্যবহার করছেন। এমন সুযোগে সাঈদীর অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, তৈরি করা ভুয়া ইউটিউব চ্যানেল সাঈদীকে সরকার বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি দিচ্ছে বলে গুজব ছড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে তারা সতর্ক আছেন। এসবই ভুয়া আইডি দিয়ে করা হচ্ছে। ভুয়া আইডি দিয়ে ফেসবুক এ্যাকাউন্ট খুলে এসব করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কারণ, এর লিঙ্ক খুঁজে মূল হোতাদের গ্রেফতার করতে হয়।
ডিএমপির সাইবার ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিশেষ বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে মুক্তির যু্িক্তটিকে তারা উদাহরণ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার চেয়েও সারাদেশে সাঈদী দেশে-বিদেশে বেশি জনপ্রিয় বলেও বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এভাবেই করোনা ভাইরাসের মধ্যে ঘরে থাকা তাদের অনুসারীদের মোটিভেট করার কাজটি করে যাচ্ছে জামায়াত-শিবিরের আইটি এক্সপার্টরা।