করোনা রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন

10

করোনা রোধে চিকিৎসাবিধি টিকা আবিষ্কারের আশা ব্যঞ্জক খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাই বাজারে টিকা আসার পূর্বে পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের এখন পর্যন্ত স্বীকৃত কোনো চিকিৎসাবিধি নেই; এর কোনো ভ্যাকসিন বা টিকাও নেই। তবে চিকিৎসাবিধি তৈরি বা টিকা উদ্ভাবনের জোর চেষ্টা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের অন্তত ১০টি টিকা ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। আরো অন্তত ১২১টি সম্ভাব্য টিকা নিয়ে ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ২২৪টি টিকা নিয়ে গবেষণা চলছে বলে জানা গেছে। অন্তত ছয়টি টিকা ‘হিউম্যান ট্রায়াল ফেজ’-এ (মানুষের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা) আছে। অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে তৈরি হয় একটি টিকা। গবেষণাগার থেকে কাজ শুরু হবে। তারপর প্রি-ক্লিনিক্যাল স্টেজের (প্রাণীর ওপর প্রয়োগ) করার জন্য তৈরি হয় টিকা। মানুষের ওপর পরীক্ষার ধাপটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই তিনটি ধাপে মানুষের ওপর উদ্ভাবিত টিকা পরীক্ষা করা হয়। মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেওয়ার অনেক ঝুঁকি। টিকার নিরাপত্তা, কার্যক্ষমতা ও কার্যকারিতা কেমন তা দেখতে হয়। তিনটি ধাপেই খুব ভালো ফল পাওয়া গেলে টিকার জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়।
২২৪টি টিকার অন্তত ছয়টি ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ পর্যায়ের ধাপ ওয়ান বা ধাপ টু-তে রয়েছে। তিনটি খুব ভালোভাবে কাজ করছে বলে জানা গেছে। অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউটের সারা গিলবার্টের ‘ভেক্টর’ টিকা ভালো ফল দিচ্ছে। সেটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল অ্যাডিনো ভাইরাসের গায়ে কভিড ভাইরাসকে ইমপ্লান্ট করে মানুষের শরীরে ঢোকানো হচ্ছে। এটি মানুষের শরীরে করোনাবিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। এটি প্রথম ধাপে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের মডার্না ভ্যাকসিন খুব নতুন ধরনের টিকা। একে বলে এমআরএনএ ভ্যাকসিন। এটি দ্বিতীয় ধাপে উঠেছে। জুলাইয়ে তৃতীয় ধাপের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কয়েক হাজার লোকের ওপর সেটি পরীক্ষা করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের স্কুল অব মেডিসিনের সেন্টার ফর ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্টের টিকাও তৃতীয় ধাপে যুক্ত হচ্ছে। তৃতীয় ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করলে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে এটি অনুমোদন পর্যায়ে যেতে পারে। চীনের ক্যানসিও টিকার কাজও চলছে। এটি দ্বিতীয় ধাপে আছে। এসব টিকা মানুষের জন্য আশাব্যঞ্জক ফল দেখাচ্ছে। অনুমোদনের পর উৎপাদন-সরবরাহসহ অনেক বিষয় রয়েছে। উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো প্রস্তুত। তবে তৃতীয় ধাপ শেষে অনুমোদনটুকু পেতে হবে।
আশা করা যায়, চলতি বছরের শেষ নাগাদ কয়েকটি টিকা বাজারে পাওয়া যাবে। এটি খুবই আশাব্যঞ্জক খবর। তাই সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।