নবীগঞ্জে উত্তেজিত শ্রমিকদের ইউনিয়ন অফিস ঘেরাও, পুলিশ গিয়ে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার

12

নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
নবীগঞ্জ উপজেলার ১২ নং কালিয়ারভাঙ্গা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক ঘোষিত করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন মানুষের জন্য ঈদ উপহার হিসেবে প্রতি পরিবারে ২ হাজার ৫শ টাকা প্রদানের উপকারভোগিদের তালিকা তৈরীতে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এতে করে তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনসহ এলাকাবাসী। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কালিয়ারভাঙ্গা মডেল ইউনিয়ন অফিস ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত শ্রমিকরা। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাকে উদ্ধার করে। শনিবার সকাল ১১ টায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারী ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম করে আসছেন কালিয়ারভাঙ্গা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম। এসব ত্রাণ বিতরণে তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতিরও অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক সদ্য ঘোষিত কর্মহীন মানুষের জন্য প্রতি পরিবারে ২ হাজার ৫শ টাকা করে প্রদানের উপকারভোগিদের তালিকা তৈরীতেও করেছেন স্বজনপ্রীতি। ওই টাকা প্রদানের তালিকায় উপকারভোগি হিসেবে রিক্সা, সিএনজি ও ভ্যান চালক, সাধারণ শ্রমিক, বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের অন্তর্ভূক্ত করার কথা থাকলেও তিনি করেছেন ভিন্ন চিন্তা। তালিকায় তাদের অন্তর্ভূক্ত না করে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের নাম তালিকায় নিয়ে এসেছেন।
এ ব্যাপারে ১৩ এপ্রিল স্থানীয় সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক সমিতি ও রিক্সা মালিক শ্রমিক সমিতির সদস্যরা তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সমঝোতার চেষ্টা করেন এবং ওই টাকা প্রদানের তালিকা শ্রমিকদের দেখাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে তিনি ৭৪৮ জনের নামের তালিকা তৈরীর কথা স্বীকার করলেও তা শ্রমিকদের দেখাতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে গত ১৫ এপ্রিল শ্রমিকরা একটি সভার আয়োজন করলে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন মেম্বারদের দেয়া তালিকা না দিয়ে নিজের তৈরী করা ১৪১ জনের নামের তালিকা শ্রমিকদের প্রদান করেন। এতে চেয়ারম্যানের নিজের ও পাশ^বর্তী ওয়ার্ডসহ ৩টি ওয়ার্ডের তালিকায় ১৪১ জনের নাম থাকলেও কোন শ্রমিকের নাম আসেনি। তালিকায় নিজের আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্খি ও অনেক ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের নাম রয়েছে বলে দেখতে পান শ্রমিকরা। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা শনিবার সকাল ১১ টায় ইউনিয়ন অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে এবং চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন এবং চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করেন বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে এ রিপোর্ট করার সময় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।