নবীগঞ্জে এমপি মিলাদ গাজীর সমালোচনা করে ফেসবুকে লেখায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

15

নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হবিগঞ্জ-১ আসনের এমপি শাহ নওয়াজ মিলাদ গাজীর ত্রাণ বিতরণের সমালোচনা করে পোষ্ট করায় কারাগারে গেলেন ছাত্রলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পলাতক রয়েছে আরও ২ জন ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা। এ ঘটনায় এলাকায় আলোচনার ঝড় বইছে।
জানা যায়, বর্তমানে সারা দেশে করোনা ভাইরাসের কারনে লকডাউন চলছে। এমতাবস্থায় স্বল্প আয়ের মানুষজন ঘরমুখী হয়ে পড়ায় খাদ্য সংকটের কারনে বিপাকে পড়েন। এই পরিস্থিতিতে নবীগঞ্জ-বাহুবলের এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ তার ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দেন নবীগঞ্জ-বাহুবল উপজেলার মধ্যবিত্ত যে সকল পরিবার খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে আছেন, অথচ লোকলজ্জার কারনে কারো কাছে কোন সহযোগিতা চাইতে পারছেন না। তাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আমার সাথে (এমপি মিলাদ) যোগাযোগ বা ফোন করলে অতি গোপনে আপনার বাসা, বাড়িতে সহযোগিতা পৌছে যাবে। ফেসবুকে এমন লেখা দেখে বা পড়ে মধ্যবিত্ত লোকদের মনে আশার সঞ্চার হয়। ফলে অনেকেই ফোনে যোগাযোগ করে তাদের অসহায়ত্বের কথা জানান। প্রতিউত্তরে জানানো হয় অপেক্ষা করুন, রাতেই বাড়িতে পৌছে যাবে ত্রান। আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি এমপি মিলাদ গাজীর নাম্বারে যোগাযোগ করে তাদের অভাব, অনটন ও অসহায়ত্বের কথা জানান। তিনি তাদের আশ্বস্ত করেন রাতেই তার লোকজন বাড়িতে সহায়তা পৌছে দিবে। শুরু হলো অপেক্ষার পালা। বিষয়টি জানতে পারেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন। পরে জাকির হোসেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তার মিডিয়া পিএস মাহিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। মাহিবুর পাহাড়পুর গ্রামের ওই লোকদের রাতেই ত্রান পৌছে দেয়া হবে বলে অপেক্ষা করতে বলেন। এই অপেক্ষা আর শেষ হয়নি। রাত গড়িয়ে প্রভাত হলেও সেই ত্রান পৌছেনি।
এই বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন ও ছাত্রলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন আল মামুন তাদের আইডি থেকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন “ দয়া করে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করুন, কল করুন খাবার পৌছে দিব বাড়িতে, এ সব ভাওতাবাজি বন্ধ করুন, অসহায় হতদরিদ্রদের নিয়ে আর খেলা করবেন না, দয়া করে এ সব বন্ধ করুন। আমার এলাকার বেশ কয়েকজন লোকের অভিযোগ বিগত ২০ দিন পূর্বে কল করেও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি কোন সহযোগিতা, অসহায় হতদরিদ্রদের আশা দিয়ে কেনো নিরাশ করা হচ্ছে? অসহায়দের এই প্রশ্নের উত্তর আদৌও কেউ দিবেন কি? এটা লিখেন, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেনও। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল্লাহ রুহেল এক স্ট্যাটাসে লিখেন “ফোন করলেই ঘরে পৌছে যাবে খাবার, আমার জানা মতে, অনেকেই ফোন দিলো কিন্তু কারো ঘরে আজও খাবার পৌছে নাই, ব্যাপার কি? উক্ত লেখার প্রেক্ষিতে অনেকেই বিভিন্ন কমেন্ট ও শেয়ার করেন। আলোচনার ঝড় উঠে নবীগঞ্জের সর্বত্র।
এ ঘটনায় শুক্রবারএমপি শাহনওয়াজ মিলাদ গাজীর কম্পিউটার অপারেটর অলিউর রহমান ইমরান বাদী হয়ে জাকির হোসেন, গিয়াস উদ্দিন মামুন ও হাবিবল্লা রুহেল এর বিরুদ্ধ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই মামলায় গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে গতকাল গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।