করোনায় সারাবিশ্বে মৃত্যু এক লাখ ১১ হাজার

8

কাজিরবাজার ডেস্ক :
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রবিবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ লাখ ৩ হাজার ৬৭১। এর মধ্যে ১ লাখ ১১ হাজার ৭২৪ জনের মৃত্যুহয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে চার লাখ ১২ হাজার ৩৭০ জন। এদিকে করোনায় রবিবার আরও নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে ১৯২০, ইতালিতে ৬১৯, স্পেনে ৬১৯, ফান্সে ৬৩৫, জার্মানিতে ১২৯ ও ইরানে ১১৭ জনের মৃত্যুহয়েছে। অন্যদিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এছাড়া ইউরোপে প্রথম দেশ হিসেবে লকডাউন শিথিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে ডেনমার্ক।
যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৯২০ জনের মৃত্যু॥ যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরও ১৯২০ জনের মৃত্যুহয়েছে। জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় (গ্রীনিচ মান সময় রবিবার ০০৩০) প্রকাশিত সর্বশেষ হিসাবে এ কথা জানায়। এতে বলা হয়, পূর্ববর্তী দিনের চেয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। এদিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২,১০৮ জন। এই মহামারীতে দেশটিতে মোট ২০,৫০৬ জনের মৃত্যুহয়েছে। এই সংখ্যা বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের চেয়ে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫২৭,১১১ জন। একক দেশ হিসেবে এই সংখ্যা বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের চেয়ে বেশি।
ইতালিতে আরও ৬১৯ জনের মৃত্যু॥ ইতালিতে করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬১৯ জনের মৃত্যুহয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজার ৪৬৮ জন। সুস্থ হয়ে একদিনে ঘরে ফিরেছে ২ হাজার ৭৯ জন। মোট ৩২ হাজার ৫৩৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। অন্যদিকে গুরুতর রোগীর সংখ্যা কমেছে। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৮১ জন আইসিইউতে রয়েছে। শনিবার আক্রান্ত হয়েছে ১৯৮৬ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা (চিকিৎসাধীন) ১ লাখ ছাড়িয়েছে। ফলে মোট আক্রান্ত ও সুস্থ সব মিলে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ২৭১ জন। আক্রান্তের শতকরা ৬৫ ভাগ নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন। করোনায় এ পর্যন্ত ১০৭ চিকিৎসক ও ২৮ সেবিকার প্রাণ গেছে। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩৫২ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার, নার্সও এ্যাম্বুলেন্সকর্মীরা স্বাস্থ্যসেবা দিতে মাঠে নেমেছে।
স্পেনে আরও ৬১৯ জনের মৃত্যু॥ গত তিনদিন করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) মৃত্যুর সংখ্যা কমছিল ইউরোপের দেশ স্পেনে। অন্য সব সূচকও ছিল অনেকটা নিম্নমুখী। এতে কিছুটা আশার আলো দেখলেও ফের বাড়ল ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা। রবিবার স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৬১৯ জনের মৃত্যুহয়েছে করোনা আক্রান্ত হয়ে। এমনটাই জানাচ্ছে সিএনএন ও আল জাজিরা। শনিবার এ সংখ্যা ছিল ৫১৯। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ৯৭২ জনে। আর মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৬৬ হাজার ১৯ জন।
ফ্রান্সে আরও ৬৩৫ জনের মৃত্যু॥ ফ্রান্সে দৈনিক হিসাবে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মোট ৬৩৫ জনের মৃত্যুহয়েছে। এদের মধ্যে ৩৪৫ জনের মৃত্যুহয়েছে হাসপাতালে এবং ২৯০ জনের মৃত্যুহয়েছে নার্সিংহোমে। দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৩২। একদিন আগে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৯৮৭ জন, এদের ৫৫৪ জন হাসপাতালে এবং ৪৩৩ জন নার্সিংহোমে মারা গেছে।
জার্মানিতে আরও ১২৯ জনের মৃত্যু॥ জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৮২১ জন। রবিবার দেশটির সংক্রামক রোগ বিষয়ক সংস্থা রবার্ট কোচ ইনস্টিটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৪৭৯। অপরদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৯ জনের মৃত্যুহয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট প্রাণহানি ঘটেছে ২ হাজার ৬৭৩ জনের। এখন পর্যন্ত দেশটিতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৭ হাজার ৪শ’ জন। তবে ৪ হাজার ৮৯৫ জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
ইরানে আরও ১১৭ জনের মৃত্যু॥ ইরানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১১৭ জনের মৃত্যুহয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬৫৭ জন। রবিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুশ জাহানপুরের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় রয়টার্স। করোনাভাইরাস মহামারীতে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুহয়েছে ইরানে। দেশটিতে এ রোগে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৭ জনসহ এখন পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৪৭৪ জন মারা গেছেন। ইরানে এখন পর্যন্ত ৭১ হাজার ৬৮৬ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৯ হাজার কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৯ হাজার ৮৭৫ জন।

ইউরোপে প্রথম লকডাউন শিথিল করল ডেনমার্ক ॥ ইউরোপে প্রথম দেশ হিসেবে লকডাউন শিথিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে ডেনমার্ক। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডেনমার্ক সরকার যে নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করেছিল, এখন সেগুলো শিথিল করতে শুরু করেছে তারা। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার থেকে দেশটির ১১ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী শিশুদের স্কুল ও নার্সারিগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে একমাস ধরে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কই প্রথম কোন দেশ যারা লকডাউনে শিথিলতা আনছে। তবে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ডেনমার্কই প্রথম দেশজুড়ে লকডাউন আরোপ করেছিল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এই পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়ার সময় বলেন, ‘আমরা ডেনমার্ককে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময়ের জন্য বন্ধ রাখব না। তবে এই পদক্ষেপ ধীরে ও সতর্কতার সঙ্গে নেয়া হবে।’