কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গণমাধ্যমের সংকটের বিষয়টি বিবেচনা করে সরকারের কাছে বিশেষ প্রণোদনা চেয়েছেন সম্পাদকরা।
সোমবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সরকারি বাসভবনে বৈঠক করেন নিউজ পেপারস ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব), সম্পাদক পরিষদ ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) ও এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের নেতারা। এ সময় তারা করোনার কারণে গণমাধ্যমে সৃষ্ট সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেন।
এ সময় তারা বলেন, কভিড-১৯ ভাইরাসটি সারা পৃথিবীতে যে মহামারী ডেকে এনেছে, সেই ধাক্কা বাংলাদেশেও লেগেছে। গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশ ১০ দিনের সাধারণ ছুটিতে আছে। শিল্প কারখানাগুলো কার্যত বন্ধ। উৎপাদন বন্ধ। এতে সামগ্রিক অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সংবাদপত্র শিল্পও এর বাইরে নয়। পত্রিকার কাটতি কমেছে। বিজ্ঞাপনও সীমিত হয়ে এসেছে। একই অবস্থা টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর। তাই অন্তত আগামী পাঁচ মাসের জন্য গণমাধ্যমের সহায়তার জন্য সরকারের বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা প্রয়োজন।
বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসময় কী করে সংকট নিরসন করা যায়। একইসঙ্গে আলোচনা হয় সরকার ও গণমাধ্যম যৌথভাবে কাজ করে কীভাবে সংকট মোকাবিলা করতে পারে। এই দুর্যোগ নিরসনে সরকার ও গণমাধ্যম একইসঙ্গে কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’
তিনি বলেন, এই সংকটময় সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পত্রিকাগুলোর সার্কুলেশন অর্ধেকে নেমে এসেছে। সংবাদকর্মী ও সংবাদ বিপণনকর্মী তথা হকাররা এ কারণে বড় সংকটে পড়েছে। টেলিভিশনগুলোতেও নানাবিধ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সেসব সংকট নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। এ সময় মন্ত্রী সরকারের পক্ষ থেকে করণীয় নিয়ে আলাপ করেন। গণমাধ্যমগুলো যেসব সরকাররি বিল পাবে সেগুলো দ্রুত প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, গুজব প্রচারকারী ভুয়া নিউজপোর্টালগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। গণমাধ্যম নেতারা এসব আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ও গুজব প্রচারকারী ভুয়া পোর্টালেগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি একমত পোষণ করেছেন।
নোয়াবের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এর সভাপতি এ কে আজাদ, নির্বাহী সদস্য মতিউর রহমান ও তারিক সুজাত। সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে ছিলেন এর সভাপতি মাহফুজ আনাম, সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম। অ্যাটকো’র পরিচালক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের সভাপতি ও এটকোর সিনিয়র সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবুও এই বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পরে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যেহেতু সংবাদপত্রও একটি শিল্প। করোনায় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সংবাদপত্র শিল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংবাদপত্র শিল্পের জন্য সরকারের কাছে আমরা বিশেষ আর্থিক প্রণোদনার চেয়েছি। তথ্যমন্ত্রী আমাদের কথা শুনেছেন। তিনি এ বিষয়টি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।’
এর আগে রবিবার এডিটরস গিল্ড এক বিবৃতিতে করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে গণমাধ্যমের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দাবি করা হয়। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছে সংগঠনটি।