গুজব রটানো বন্ধ হউক

8

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) গতকাল জানিয়েছে, বাংলাদেশে নতুন করে আর কারো মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েনি; আক্রান্তের মোট সংখ্যা আগের মতোই ৪৮ আছে। আগের আক্রান্তদের মধ্যে আরো চারজন সুস্থ হয়ে উঠেছে। গত ৭২ ঘণ্টায় নতুন করে কারো মৃত্যুর তথ্য না আসায় মৃতের মোট সংখ্যা আগের মতো পাঁচই রয়েছে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুতির ক্ষেত্রে নানা ধরনের সংকটের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পর বেড়েছে তত্পরতা। নেওয়া হয়েছে নতুন কিছু পদক্ষেপ। সব জেলা ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের জন্য বিভিন্ন সংখ্যায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপকরণ পৌঁছে গেছে। সেই সঙ্গে পরীক্ষার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ঢাকার মহাখালীতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজে শুরু হয়েছে পরীক্ষা। দেশব্যাপী টানা ১০ দিনের ছুটিতে মানুষের স্থানান্তর বন্ধ করতে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। সারা দেশেই সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের জোরদার টহল লক্ষ করা যায়। অনেক জায়গায়ই সচেতনতা বাড়াতে করা হয়েছে মাইকিং। রাস্তা, ড্রেন ও খোলা জায়গায় ছিটানো হয়েছে জীবাণুনাশক। একই সঙ্গে গরিব ও দুস্থ মানুষ, যারা কাজে যেতে পারছে না, তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এক শ্রেণির মানুষ করোনাকে পুঁজি করে নানা ধরনের গুজব রটাতে ব্যস্ত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নানা কথা। একটি ফেসবুক আইডিতে বলা হয়েছিল, ‘করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে রাত ১০টায় সারা দেশে আজান দিতে হবে।’ বিষয়টি দেখে ফেসবুকে শেয়ার করে ও মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেওয়া হয় আরেক জেলায়। গত বৃহস্পতিবার রাতের ওই সময়ে শুরু হয় আজান দেওয়া। রাত ১২টায় গুজব ছড়ায়, ভূমিকম্প ও কিয়ামত আসছে। আতঙ্কিত মানুষজন ঘরবাড়ি থেকে বাইরে বের হয়ে আসে। কালিজিরা, গোলমরিচ আর আদা পিষে খেলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে না মানুষ—এমন কথাও রটানো হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন পোস্ট ও মেসেজ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আবার পরিকল্পিতভাবে ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপকে অকার্যকর এবং ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। ভ্যাকসিন চলে আসবে। মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে মানুষ জয়ী হবে। এই ক্রান্তিকালে গুজব রটিয়ে কেউ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেবেন না।