করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বাংলাদেশেও লেগেছে মন্দার ধাক্কা। এরই মধ্যে বাজারে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে নাজুক অবস্থায় পড়ে গেছে। দিনমজুর বা প্রতিদিন আয় করে খাবার জোটে এমন মানুষের জন্য ভয়াবহ এক পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের কাজের ক্ষেত্র কমে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আয় কমবে। এর প্রভাব পড়বে সমাজে। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগ্য পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি হারে বেড়েছে। মোটা চাল, বড় দানার ডাল, ডিম, আলু ও সবজির দাম শুধুই বাড়ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের হিসাবেই গত এক সপ্তাহে বাজারে ১০টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।
এ ছাড়া করোনার প্রভাবে অনেকে কাজ হারিয়েছে। অনেকের আবার আয় কমে গেছে। ওদিকে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা একেবারেই কমে যাবে। দেশের বড় বড় শহরের প্রান্তিক মানুষদের জন্য ‘ওএমএস’ কর্মসূচির মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল। এটিকে আপত্কালীন প্রণোদনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষ যাতে খাদ্য সংকটে না ভোগে সে জন্য সরকার এদের সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। পরিকল্পনার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে বড় বড় শহরের রিকশাচালক, দিনমজুরের মতো মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে খোলাবাজারে খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হতে পারে। বিশেষ করে চাল, ডাল, পেঁয়াজ ইত্যাদি। ‘ওএমএস’ কর্মসূচির মতো সরকার ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করতে পারে। সেই সঙ্গে ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্য হ্রাসকৃত মূল্যে বিক্রির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী যেসব পণ্য কেনে সেগুলো সাধারণত দেশেই উৎপাদিত হয়। ফলে হঠাৎ চাহিদা বেড়ে গেলে এসব পণ্য সরবরাহে সমস্যা হয়। পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে কিংবা সরকারের কাছে মজুদ ১৭ লাখ টন খাদ্যশস্য থেকে ভর্তুকি মূল্যে ওএমএসের আওতায় বিক্রি করার মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব। এতে বাজারে ভারসাম্য আসবে।
বাজারে যে সংকট দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা মোকাবেলায় সরকার সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেবে এিটাই আমাদের প্রত্যাশা।