কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিশ্বজুড়ে মহামারীর তকমা পাওয়া করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এরই মধ্যে অন্তত ১৪২টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভিসা বাতিল ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করেছে বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশেও পড়েছে করোনার প্রভাব। এমন অবস্থায় ‘কঠিন সময়’ পার করছে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রেও একই হারে যাত্রী কমে গেছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো।
গত এক শতকের মধ্যে সবচেয়ে বড় অচল অবস্থা তৈরি করেছে করনোভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ইতালি, নেপাল, ভারতসহ অধিকাংশ দেশ তাদের ভিসা স্থগিত করেছে। বন্ধ রেখেছে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল। একারণে ইউ এস বাংলাসহ বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর যাত্রী চলাচল কমে গেছে।
ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাসের প্রভাবে সংস্থাটি বেশ সংকটের মধ্যে রয়েছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল কোনো কোনো দেশে অর্ধেকে, কোথাওবা তারও নিচে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে ফ্লাইট চলাচল পঞ্চাশ শতাংশে নিচে কমে এসেছে। কোনো কোনো দেশে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের নিচে চলে এসেছে। যে সকল দেশে সপ্তাহে আমাদের ৫ টা ফ্লাইট চলাচল করত, এখন তা দুইটায় নেমে এসেছে। ধীরে ধীরে আরও কমে যাচ্ছে। ভারতে এরই মধ্যে যাওয়া কমে গেছে। তবে সেখানে কিছু যাত্রী রয়েছে। তাদেরকে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেটিও ১৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে।’
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলও অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানালেন ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বলেন, ‘দেশের মধ্যেও যাত্রী চলাচল কমে গেছে। যারা নিয়মিত যাতাযাত করতেন তারাও যাতায়াত বন্ধ করেছেন।’
যেসকল ফ্লাইট বর্তমানে চলাচল করছে, সেসব ফ্লাইটের যাত্রী এবং বিমান ক্রু ও সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তার বিষয়ে আগে থেকে তারা সতর্ক রয়েছেন বলে জানান।
একই পরিস্থিতি দেশের অন্যতম বেসরকারি বিমান সংস্থা নভোএয়ারে। সংস্থাটির সেলস এন্ড মার্কেটিং বিভাগের প্রধান মেসবা-উল-ইসলাম জানালেন, আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবহণ একেবারেই কমে গেছে। আর দেশের মধ্যে প্রতিদিনই যাত্রী সংখ্যা কমছে।
বর্তমান অবস্থাকে ‘কঠিন সময়’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা কঠিন সময় পার করছি। দেশের বাইরে বিমান চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। এদের ভেতরেও একই অবস্থা। বিভিন্ন দেশে যাতায়াত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সে সকল দেশে এখনো যাতাযাত চালু রয়েছে, তাও বন্ধের পথে। এছাড়া দেশে অভ্যন্তরে একেবারে প্রয়োজন না হলে কেউ ট্রাভেল করছেন না। সে সংখ্যাও প্রতিদিন ক্রমাগত কমে আসছে।’
করোনা পরিস্থিতি যত দ্রুত সমাধান হবে, তাদের বর্তমান পরিস্থিতিও ততদ্রুত সমাধান হবে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অবশ্যই চিন্তার বিষয়। যতদ্রুত করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসবে আমাদের জন্যই ততই ভাল।’
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান মেসবা-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিমান, যাত্রী এবং বিমানের ক্রুদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ আমরা নিয়ে রেখেছি।’