বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক সমকাল, চ্যানেল এস ইউকে, দৈনিক কাজিরবাজার ও অনলাইন পত্রিকা ‘সিলেটটুডে২৪ ডটকম’র বিশ্বনাথ প্রতিনিধি ও বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম খায়েরের উপর আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ৯ মার্চ সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল মেজিষ্ট্রেট ৩নং আমলী আদালতে সাজানো এ মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেন সাবেক বিএনপি নেতা ও বর্তমান স্বঘোষিত উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রফিক আলী, (বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং ৭৭/২০২০ইং)। মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত মামলার বাদি রফিক আলী উপজেলার শাহিজরগাঁও গ্রামের মৃত আরজান আলীর ছেলে। আদালতের বিচারক মামলায় অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততা আছে কিনা, আগামি ৫ মে’র মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিতে বিশ্বনাথ থানার ওসি (প্রশাসন) শামীম মুসাকে বলা হয়েছে।
প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথের যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা দেশে ফিরলে তাদেরকে হয়রানী করতে থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ-উপার্জনই রফিক আলীর পেশা বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিজের ছবি দেখিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথেও প্রভাব খাটানোর অভিযোগের পাশাপাশি যে কারো বিরুদ্ধে মামলা করতেও ভয়পাননা তিনি। এমনকি নিজ ফেসবুক আইডিতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রবাসীসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও কুরুচিপূর্ণ ষ্ট্যাটাস দিলে তার ষ্টাটাসে খোদ থানার ওসি তদন্ত রমা প্রসাদও তার পক্ষে কমেন্ট করেন। আর বেহায়পনা ষ্টেটাস দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা রয়েছে। এছাড়া অপহরণসহ তার বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলা রয়েছে। আবার বিভিন্ন মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দিয়েছে থানা পুলিশ।
সম্প্রতি গত ২ মার্চ বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবির্তর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মহা পুলিশ পরিদর্শক ‘আইজিপি’ বরাবের অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী মোহাব্বত শেখ নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। অভিযোগে রফিক আলীকে সাবেক শিবির ক্যাডারসহ তার বিরুদ্ধে পুলিশের সখ্যতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। পরবর্তিতে ৫ মার্চ সিলেটের পুলিশ সুপার ও বিশ্বনাথ থানার ওসি (প্রশাসন) বরাবের ওই অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়। আর ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক খায়েরসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন অভিযুক্ত রফিক আলী।
এরআগে রফিক আলী তার চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রীকে (ভাবী) অপহরণ করার অভিযোগে মামলা হওয়ায় ২০১৯ সালের গত ৩০ জুলাই ‘বিশ্বনাথে অপহরণ করে নির্যাতন, দেবর ও ভাসুর জেলহাজতে’ শিরোনামে সমকাল ও কাজিরবাজার পত্রিকা এবং অনলাইন পত্রিকা সিলেটটুডে২৪ ডটকমে প্রকাশিত হয়। ওই বছরের ৭ আগষ্ট ভাবীকে অপহরণ করে নির্যাতন, বিশ্বনাথে দেবর সেচ্ছাসেবকলীগ নেতাসহ দু’জনের রিমান্ড মঞ্জুর’ এবং ৮ আগষ্ট ‘প্রবাসী ভাইর স্ত্রীকে অপহরণ করে নির্যাতন, বিশ্বনাথে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রফিকসহ দু’জন রিমান্ডে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে রফিক আলী সাংবাদিক খায়েরের উপর মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাকি অভিযুক্তরা হলেন, দৈনিক ইনকিলাব প্রতিনিধি আব্দুস সালাম, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাব্বত শেখ ও তার চাচাতো ভাই শফিক আহমদ পিয়ার।
এব্যপারে জানতে চাইলে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা বলেন, আদালতে দায়েরকৃত ৭৭/২০২০ইং নং মামলাটি এখনও থানায় পৌঁছায়নি।
