কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী ‘বাংলাদেশী’, যারা নানা সময়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে ভোটাধিকারও প্রয়োগ করেছেন, তারা ভারতেরই নাগরিক। নতুন করে নাগরিকত্বের জন্য তাদের আবেদন করার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
যদিও পশ্চিমবঙ্গসহ ভারত বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ থেকে অনেকেই দেশটিতে শরণার্থী বা অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বসবাস করে আসছে বলে দাবি করলেও, বাংলাদেশ বরাবরই এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ সরকারের উচ্চপদস্থ অনেকেই বিভিন্ন সময় ভারতে বিশাল অংকে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী রয়েছে দাবি করে নানান উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছেন।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) এক জনসভায় বিজেপির নাগরিকত্ব আইন ও সম্প্রতি এর জেরে দিল্লির দাঙ্গায় হতাহতের তীব্র সমালোচনা করে মমতা এসব কথা বলেন।
মমতা বলেন, যারা ‘বাংলাদেশ’ থেকে (ভারতে) এসেছে, তারা ভারতের নাগরিক। তারা নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন। আপনাদের আবারও নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার প্রয়োজন নেই। আপনারা নির্বাচনে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করছেন… আর এখন তারা (ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার) বলে কিনা আপনারা এ দেশের নাগরিক নন… তাদের বিশ্বাস করবেন না।
এদিন জোরালো কণ্ঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও ঘোষণা দেন, তিনি এমনকি ‘একজন নাগরিককেও’ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করে দিতে দেবেন না। পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী কোনো শরণার্থীই ভারতের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও জানান তিনি।
নাগরিকত্ব আইনের জেরে দিল্লির দাঙ্গা ও এতে হতাহতের ঘটনায় ভারতের ক্ষমতাসীন মোদী সরকারকে ভর্ৎসনা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে কখনোই তিনি আরেকটি দিল্লিতে পরিণত হতে দেবেন না।
মোদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, মনে রেখো, এটা বাংলা। দিল্লিতে যা ঘটেছে কস্মিনকালেও তা এখানে ঘটবে না। আমরা বাংলাকে আরেকটা দিল্লি বা উত্তরপ্রদেশ হতে দেবো না।
এদিকে বিজেপি প্রায়ই মমতার বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘুদের ভোট টানার উদ্দেশ্যে ‘মুসলিম তোষণের’ অভিযোগ তুলে থাকে।