কাজিরবাজার ডেস্ক :
নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্যরা জেলখানা থেকেই জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। জেলখানায় থাকাকালে দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের সংস্পর্শে জঙ্গি কার্যক্রমের দিক-নির্দেশনা পাচ্ছে এবিটি সদস্যরা। পরে জামিনে বেরিয়ে ফেসবুক ও বিভিন্ন এ্যাপসের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা এবং সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি এবিটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ ও পরিচিতি বাড়ানোর চেষ্টাও চলছে অনলাইনে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত র্যাব-৪ এর একটি দল ঢাকার আশুলিয়া ও ধামরাই থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত এবিটির নারীসহ পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এরা হচ্ছে- অলিউল ইসলাম ওরফে স¤্রাট ওরফে আব্দুল্লাহ (২৩), মোয়াজ্জিম মিয়া ওরফে শিহাদ ওরফে আল্লাহর গোলাম (২০), সবুজ হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ এবাজ উদ্দিন (২৬), আরিফুল হক ওরফে আরিফ ওরফে হৃদয় (২০), রাশিদা ওরফে হুমায়রা (৩৩)। শনিবার বিকেল ৪টায় কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক এ কথা জানান। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত এবিটির এই পাঁচ সদস্যের ব্যবহৃত মোবাইল ঘেটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত অলিউল ইসলাম আব্দুল্লাহ জানায়, সে এইচএসসি পাসের পর কিছুদিন স্থানীয় মসজিদে আরবী শিক্ষা গ্রহণ করে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে সম্পৃক্ততার কারণে ২০১৯ সালে আশুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা হয়। জেলখানায় থাকাকালে দুর্র্ধষ জঙ্গিদের সংস্পর্শে আসে সে। সেখানে তাদের কাছ থেকেই দিক নির্দেশনা গ্রহণ করে। ফেসবুক ছাড়াও বিভিন্ন এ্যাপসের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রম চালু রাখে। সে একটি উগ্রবাদী চ্যানেলের এ্যাডমিন হিসেবে উগ্রবাদী কার্যক্রম ও সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। ইতোপূর্বে আটক মাওলানা জসিমুদ্দীন রাহমানির অনুসারী শীর্ষ জঙ্গিদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে জড়িয়ে পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদে অলিউল জানায়, দক্ষিণ অঞ্চলের আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিল সে। প্রায় তিন বছর ধরে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতার সঙ্গে অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল। তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী ডিজিটাল কন্টেন্ট পাওয়া গেছে। গ্রেফতারকৃত মোয়াজ্জিম মিয়া ওরফে শিহাদ ছাত্র জীবন থেকেই বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রমে আকৃষ্ট হতো। ধীরে ধীরে সশস্ত্র জঙ্গিবাদে অংশ নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। ফেসবুকে আনাস আদনান নূর নামক জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যপদ গ্রহণ করে। বর্তমানে সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একজন সক্রিয় সদস্য। মেসেঞ্জারে একটি উগ্রবাদী গ্রুপের এ্যাডমিন হিসেবে কাজ করে সে। আল্লাহর গোলাম আইডিতে সদস্য সংগ্রহ এবং উগ্রবাদের উদ্দেশে চাঁদা সংগ্রহের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। অনলাইনে মোবাইল মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে চাঁদা সংগ্রহ করত। তার কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের রেজিস্টার জব্দ করা হয়। সাভারের একটি মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল সে।