বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : সম্প্রতি ভারতের দিল্লীতে উগ্রহিন্দুরা মুসলমানদের হত্যা-নির্যাতন, মসজিদে ভাঙচুর ও আগুন লাগনোর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
২৭ ফেব্র“য়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে লালদীঘিপারস্থ কার্যালয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা শাখার মাসিক নির্বাহী বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। ভারতকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের দেশ দাবী করলেও তা শুধু কথায়, কাজে নয়। শুধু মুসলিম হবার অপরাধে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে প্রতিদিন। কাশ্মীরের মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে, মা-বোনদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদি সরকারের একথা জেনে রাখা উচিৎ, জুলুম-নির্যাতন করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বলেন, শুধু ভারতের রাজধানী দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদীরা ২৯ জনের অধিক মুসলমানকে হত্যা করেছে। মুসলমানদের পবিত্র স্থান মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে। খোঁজে খোঁজে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নসিংযোগ ও হামলা করা হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে বিশ্বের মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিরবতা অবলম্বন করছে,যা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকিস্বরুপ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা ভারতীয় এই গণহত্যা থামানোর জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি বিশ্বশান্তির জন্য জাতিসংঘ, ওআইসি, মানবাধিকার সংস্থা ও মুসলিমবিশ্বের নেতৃবৃন্দরা ভারতে মুসলিম হত্যা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং ভারত সরকারকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইকবাল হুছাইনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজ মাওলানা আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় নির্বাহী বৈঠক উপস্থিত ছিলেন, সহ-সভাপতি মাওলানা ক্বারী উবায়দুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক ডা. মোস্তফা আহমদ আজাদ, হাফিজ কাজী জুনাইদ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ফখরুল ইসলাম, মাওলানা মুতাসিম বিল্লাহ জালালী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতি মুহাম্মদ মাহবুবুল হক, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম রব্বানী, অফিস ও প্রচার সম্পাদক মুফতি সৈয়দ নাসির উদ্দিন আহমদ, নির্বাহী সদস্য হাফিজ শিহাবুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া : বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা আখতার হোসাইন জাহেদ বলেছেন, ভারতের দিল্লীতে মুসলমানদের উপর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা ইতিহাসের জঘন্যতম কাজ।মুসলমানদের ইবাদতের পবিত্র ঘর মসজিদে আগুন এবং নিরীহ মুসলমানদের পুড়িয়ে হত্যা করে মুসলমান জাতির হৃদয়ে চরম আঘাত করা হয়েছে। বিশেষ করে ভারতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের উপস্থিতিতে মুসলমানদের উপর হামলা এবং মসজিদে আগুন দিয়ে তারা জানান দিলো যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিশ্ব কাফির মুরতাদরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা এ ন্যাক্যারজনক হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি ২৭ ফেব্র“য়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট হোটেল ফার্মিস গার্ডেনে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা শাখার উদ্যোগে ৪০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।
আলিয়া মাদরাসা শাখা সভাপতি মো. আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক কাওছার হামিদ সাজুর সঞ্চালনায় সেমিনারে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসার সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা মো. আব্দুল মোছাব্বির, সিলেট (পশ্চিম) জেলা সভাপতি শেখ আলী হায়দার, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি জোন সিলেটের সভাপতি মাসরুর হাসান জাফরী, সিলেট মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক এস.এম মনোয়ার হোসেন, সহ প্রচার সম্পাদক সম্পাদক হোসাইন আহমদ, অফিস সম্পাদক শামছ উদ্দীন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সহ সভাপতি জাহাঙ্গির আলম মুজাহিদ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এজাজুল হক সুমন, ৮ নং ওয়ার্ড সাবেক সভাপতি দেলওয়ার হোসাইন, ৭ নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম মুন্না, ফেঞ্চুগঞ্জ স্টুডেন্টস ফোরাম এমসি কলেজের সাধারণ সম্পাদক জামিল আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল লেইস।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাখা সহ সভাপতি আবুল কাশেম রাছেল, দেলওয়ার হোসেন, হাসান ওয়াজিদ, সহ সাধারণ সম্পাদক মো. আফজল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক কাওছার আহমদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল্লাহ আল মাওছুফ, প্রচার সম্পাদক মো. ইমাদ উদ্দীন, সহ প্রচার সম্পাদক মো. আবু তাহের, অর্থ সম্পাদক মো. আরিফ উদ্দিন, অফিস সম্পাদক মো. মাছুম বিল্লাহ, সহ অফিস সম্পাদক মো. এবাদুল হক, সহ শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মো. আল আমিন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. নাজমুল হক, সদস্য লোকমান সাদী, জাহেদ আহমদ, নাছিম রাব্বানী, আমিনুল ইসলাম, আমির হোসাইন সাদী প্রমুখ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : ভারতের উগ্র হিন্দু কর্তৃক মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন এবং মসজিদে অগ্নি সংযোগের মতো ন্যাক্কার জনক গঠনার নিন্দা জানানো ভাষা নেই। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা কর্তৃক আয়োজিত মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। জেলা জমিয়তের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শায়খুল হাদিস আব্দুল মালিক মোবারক পুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা আাব্দুস সালাম ও সিলেট মহানগর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক সরকার এর যৌথ পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন জমিয়তের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জননেতা মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী। সোবহানীঘাট মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল মুছব্বির, জেলা জমিয়তের অন্যতম নেতা মাওলানা মাহমুদ হোসাইন বড়বন্দী, মাওলানা ইব্রাহিম সালুটিকরী, মহানগর জমিয়তের অন্যতম নেতা মাওলানা খাইরুজ্জামান, ছাত্র জমিয়তের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী এম. বেলাল আহমদ চৌধুরী, জমিয়ত নেতা মাওলানা হেলাল আহমদ, ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মীম সালমান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মোবারক পুরী বলেন, গোজরাটের কসাই খ্যাত নরেন্দ্র মোদী দিল্লির নিরহ মুসলমানদের উপর বয়াবহ হত্যাযজ্ঞ, ঘরবাড়ি এবং মসজিদে অগ্নিসংযোগ করে মুসলমানদের কলিজায় যে আঘাত দিয়েছে তা কুখ্যাত হিটলারকেও হার মানায়। আন্তর্জাতিক আদালতে কসাই মোদীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিচারের দাবী জানাচ্ছি। প্রতিবাদ সভায় কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল মালিক চৌধুরী বলেন, মুসলমানদের হত্যা, অগ্নিসংযোগ, নির্বিচারে নারী-পুরুষের রক্তে হুলি খেলে কসাই মোদী বাংলার জমিনে পা রাখার অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। আগামী ১৭ই মার্চ আমরা মোদীকে বাংলার মাঠিতে পা রাখতে দেবনা ইনশাআল্লাহ। জমিয়তে ইসলাম সিলেট জেলা ও মহানগর নগরীর সোবহানীঘাট পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি কোর্ট পয়েন্ট হয়ে পূর্বজিন্দাবাজারে গিয়ে আবুতোরাব পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
ছাত্র জমিয়ত : ভারতে মুসলিম বিরোধী নাগরিকত্ব আইন সিএএর’র প্রতিবাদ করায় দেশটির রাজধানীতে হিন্দুত্ববাদীদের সহিংসতা, মুসলিম গণহত্যা-নির্যাতন ও মসজিদ-মিনারে অঙ্গিসংযোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ সিলেট জেলা শাখা। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্র“য়ারি) বাদ আছর বন্দরবাজার দলীয় অফিসের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিটি পয়েন্টে গিয়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র জমিয়তের নেতাকর্মী ও মুসল্লিরা আবু জাহেলের উত্তরসূরী সন্ত্রাসী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করে তার দুগালে জুতা নিক্ষেপ করেন।
জেলা ছাত্র জমিয়তের সভাপতি মো. ফরহাদ আহমাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লুকমান হাকিমের পরিচালনায় সমাবেশে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, চা বিক্রেতা মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোন যোগ্যতা রাখে না। তবুও স্বৈরতান্ত্রিক ভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে নিরীহ মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। নির্বিচারে গুলি করে মারছে। মসজিদ-মাদ্রাসা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে, মিনারে হনুমানের পতাকা লাগিয়েছে। এসব কাজ বিশ্বের ৪০০ কোটি মুসলমানদের কলিজায় আঘাত দিয়েছে। বক্তারা বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, অসাম্প্রদায়িক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে কসাই ও সন্ত্রাসী মোদিকে অতিথি করা হয়েছে। মোদি এদেশের মাটিতে পা রাখতে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। প্রয়োজনে এদেশের মাটিতে আবারও বদরের যুদ্ধ হবে। কোন অবস্থাতেই মোদিকে পবিত্র বাংলার মাটিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
মিছিল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সালিম ক্বাসেমী, জেলার প্রচার সম্পাদক মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, অর্থ সম্পাদক মাওলানা রশিদ আহমদ বিশ্বনাথী, মাওলানা সদরুল আমিন, মাওলানা কবির আহমদ, যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আখতারুজ্জামান, মো. রুহুল আমিন নগরী, জেলা যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রায়হান উদ্দিন, মহানগর ছাত্র জমিয়তের সভাপতি মো. লুৎফুর রহমান, জেলার সহ সভাপতি হাফিজ ফয়েজ উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক এহিয়া হামিদী, মাহদি হাসান মিনহাজ, মাওলানা কাওছার আহমদ, নুমান সিদ্দিক, সাংগঠনিক সম্পাদক কবির আহমদ, মাসরুর আহমদ, আবু বকর সিদ্দিক, ছাত্রনেতা হুসাইন আহমদ, আব্দুল হাই আল হাদী, কবি মীম সুফিয়ান, মিসবাহ উদ্দিন রুকন, আব্দুল মজিদ আল হুসাইন, কামরুল ইসলাম প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি