কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ এডভোকেট মোঃ রহমত আলী আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রবিবার সকালে রাজধানীর স্কয়ার হসপিটালে চিকিৎসাধীন তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য মন্ত্রীও শোক প্রকাশ করেছেন। এডভোকেট মোঃ রহমত আলী দীর্ঘদিন যাবত কিডনি, ডায়াবেটিস ও হার্টের সমস্যাসহ বার্ধ্যক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে তিনি দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সিনিয়র সদস্য ছিলেন।
এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, এডভোকেট রহমত আলী ছিলেন একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান। তিনি আজীবন মেহনতী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করে গেছেন। তার মৃত্যুতে দেশের রাজনীতিতে এক শূন্যতার সৃষ্টি হলো। রাষ্ট্রপতি এই আওয়ামী লীগ নেতার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এডভোকেট রহমত আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক বিবৃতিতে তিনি রহমত আলীর আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। সাবেক এমপি রহমত আলীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিবৃতিতে তিনি রহমত আলীর আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
রহমত আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এক বিবৃতিতে তিনি এ শোক প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে স্পীকার বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলনে রাজপথের লড়াকু সৈনিক রহমত আলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। তার মৃত্যুতে জাতি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ানকে হারাল। স্পীকার মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
এছাড়া গভীর শোক ও দুঃক্ষ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এছাড়া শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। রহমত আলীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া, চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীসহ অন্যান্য মন্ত্রী, এমপিরাও।
প্রয়াত রহমত আলীর কফিনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকারের শ্রদ্ধা
এডভোকেট রহমত আলীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ স্পীকার, সংসদ সদস্য, দলীয় নেতাকর্মী ও সংসদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রবিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট রহমত আলীর কফিনে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক এই সাংসদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পতাকায় মোড়া কফিনে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের পর মরহুমের প্রতি সম্মান জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে আরেকটি শ্রদ্ধাঞ্জলি মরহুমের কফিনে অর্পণ করেন। তিনি মরহুমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মরহুমের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। পাশাপাশি জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়াসহ চীফ হইপ এবং হুইপবৃন্দ কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পক্ষে জাতীয় পার্টির হুইপ পীর ফজলুর রহমানও শ্রদ্ধা জানান। এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, ডেপুটি স্পীকার, চীফ হুইপ ও হুইপবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতও অনুষ্ঠিত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীকে এ সময় গার্ড অব অনারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়।