মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজার পৌর শহরের সেন্টাল রোডের পিংকি সু ষ্টোরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ট্র্যাজেডিতে নিস্তব্ধ পুরো শহর।
মঙ্গল ও বুধবার পুরো দিন নানা পেশার মানুষ এই ট্র্যাজেডি স্থান একনজর দেখতে আসেন। বাবা সুভাষ ও ছোট বোন প্রিয়াসহ নিহত ৫ স্বজনের হারানোর বেদনায় কেঁদে উঠছে নব বিবাহিত পিংকি।
শুক্রবার জামাই সুমনকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসার কথা ছিল পিংকির। কিন্তু মঙ্গলবারের ৫ মিনিটের আগুনের লেলিহান শিখায় পুরো বাসা ও দোকান পুড়ো ছাই হয়ে গেছে। বাবাও নেই, আদরের ছোট বোনও নেই এবং বাসাও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
মঙ্গলবারের ভয়াবহ অগ্নি ট্র্যাজেডিতে মারা যান পিংকি স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী বাবা সুভাষ রায় (৬৫), তার ছোট ভাই মনা রায়ের স্ত্রী দিপ্তী রায় (৪৫), সুভাষ রায়ের মেয়ে প্রিয়া রায় (১৫), শালক সজল রায়ের স্ত্রী দিবা রায় (৪০) এবং শ্যালক সজল রায়ের ৪ বছরের শিশু দিপীকা রায়।
পিংকির নামেই বাবা সুভাষ রায় ওই দোকানের নাম করণ করেন। ২২ জানুয়ারি পিংকির বিয়ে হয় এবং ২৭ জানুয়ারি বৌভাত সম্পন্ন হয়। বৌভাত উপলক্ষে স্বজনরা পিংকিদের বাসায় আসেন।
বৌভাত শেষে ওই রাতে আত্মীয় স্বজন তাদের বাড়িতে থেকে যাওয়ায় ২ জন আত্মীয় ওই ঘটনায় মারা যান।
নিহত সুভাষ রায়ের চাচাতো ভাই সঞ্জিত রায় বলেন, ঘটনার আগের দিন অনুষ্ঠান থাকায় সবাই রাতে দেরিতে ঘুমায়। যার কারণে সকালে ঘুম থেকে উঠতেও তাদের দেরি হয়। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের সময় নিহত সুভাষ রায়ের স্ত্রী নিচ তলায় চুলাতে চা বানাচ্চিলেন। এসময় তিনি সামনের অংশে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান। মঙ্গে সঙ্গেই তিনি নিচে ঘুমিয়ে থাকা স্বজনদের ডেকে তুলে পিছনের দিকে বের করে দেন।
তার চিৎকারে দুতলায় ঘুমিয়ে থাকা সুভাষ রায়ের ছোট ভাই মনা, ছোট মেয়ে পাপিয়া ও শালকের ছেলে উঠে আসলেও নিহতরা আসতে পারেননি। কারণ দুতালায় উঠার সিড়ি ছিল কাঠের। আগুন লাগা মাত্রই কাঠের সিড়িটি পুড়ে যায়। যার কারণে উপরের তলার নিহতরা চেষ্টা করলেও নামতে পারেননি। সেখানেই তাদের পুড়ে মরতে হয়।
মঙ্গলবার রাতে পৌর শহরের সৈয়ারপুরস্থ শ্মশান ঘাটে লাশ দাহ করা হয় বলে জানান সঞ্জিত রায়।
এ ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি বুধবার থেকে কাজ শুরু করেছে। আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। এই ঘটনায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।