মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলায় ৩ মাস বয়সের শিশুর মৃত্যু ও রোগীর অভিভাবকের সাথে খারাপ আচরণের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পর ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ১৩ জানুয়ারি উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়না গ্রামের জিয়াউর রহমানের ৩ মাস বয়সের শিশু সন্তান আমান রহমানকে নিয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডাঃ নাজমুস সাদাত বলেন, তার হালকা শ^াসকষ্ট সমস্যা হয়েছে। গ্যাস মেরে বাড়িতে নিয়ে যান। তখন ইমার্জেন্সি বিভাগে গেলে দায়িত্বরত ডাঃ তাকে ভর্তি করে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ওষুধ আনতে বলেন। ওষুধ আনার পর ইনজেকশন দিতে রগ বের করতে গিয়ে ৬টি ছিদ্র করেও রগ না পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাংসে পুশ করেন। এতে প্রতিবাদ করায় শিশুর পিতা জিয়াউর রহমানের সাথে খারাপ আচরণ করেন সিনিয়র স্টাফ নার্স টিংকু আচার্য্য। রাত ১২ টার দিকে শিশুটি ছটফট করলে অনেক ডাকাডাকি করেও কোন ডাক্তার ও নার্সদের পাওয়া যায়নি। তারা তখন ঘুমে ছিলেন। অনেকক্ষণ পর ডাঃ এসে শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি মৃত শিশুর পিতা জিয়াউর রহমান বাদী হয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পকিল্পনা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার অনুলিপি পরিকল্পনামন্ত্রী, সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন, জগন্নাথপুর উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জগন্নাথপুর থানার ওসির নিকট প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নার্স টিংকু আচার্য্যরে খারাপ আচরণে রোগী ও রোগীর অভিভাবক সহ ডাক্তার এবং অন্য নার্সরাও অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। সে কাউকে তোয়াক্কা করে না। সে খুবই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার খারাপ আচরণ ও গ্র“পিং নিয়ে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে ভূক্তভোগী অনেকে জানান। যদিও ডাঃ নাজমুস সাদাত বলেন, এতে আমার জানা মতে ত্র“টি ছিল না। তবে চেষ্টা করেও নার্স টিংকু আচার্য্যরে মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ২০ জানুয়ারি সোমবার তদন্ত কমিটির প্রধান জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ শারমিন আরা আশা বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এদিকে-শিশু সন্তানকে হারিয়ে তার পিতা-মাতা সহ তাদের পরিবারে বইছে শোকের মাতম। যা কোন অবস্থায় কাম্য ছিল না। সেই সাথে এ ঘটনায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। ডাক্তার ও নার্সদের উপর ভরসা রাখতে পারছেন না রোগী ও অভিভাবকরা।