সামাজিক অবক্ষয় রোধে জীবন ঘনিষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাণ করুন – প্রধানমন্ত্রী

27
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের বিজয়ীদের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিসহ সামাজিক অবক্ষয় রোধে জীবনঘনিষ্ঠ সুস্থ চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, শিল্পকলার সবগুলো মাধ্যমের সমন্বয়ে চলচ্চিত্র, সবচেয়ে শক্তিশালী গণমাধ্যম। এই মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের চিন্তা-চেতনা, মননে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। চলচ্চিত্র মানুষের মাঝে গভীর দাগ কাটতে পারে, মানুষকে আরও সুন্দর পথে চলার প্রেরণা দিতে পারে। আমরা দেশকে আরও উচ্চ আসনে নিয়ে যেতে চাই, যাতে বিজয়ী জাতি হিসেবে দেশের মানুষ বিশ্বে মাথা উঁচু করে সবসময় চলতে পারে।
রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের বিজয়ীদের হাতে চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক পদক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী চলমান সন্ত্রাস-মাদক-দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের কথা তুলে ধরে বলেন, এই ড্রাগ সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ দুর্নীতি আমাদের সমাজকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু শুধুমাত্র আইনগত অভিযান দিয়েই সমাজকে এখান থেকে রক্ষা করা যাবে না। এর জন্য দরকার মানুষের ভেতরের চেতনাকে আরও উদ্ভাসিত করা। এর খারাপ দিক তুলে ধরা, ভাল কিছু মানুষের সামনে উপস্থাপন করা। এক্ষেত্রে চলচ্চিত্র রাখতে পারে বিরাট একটা ভূমিকা। কাজেই সেদিকে আপনারা (চলচ্চিত্র নির্মাতা) আরও বেশি নজর দেবেন।
এবার গত দুই বছরের ২৭ ও ২৮ শাখায় ৬৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ’১৭ সালের জন্য আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান ও সালমা বেগম সুজাতা। আর ’১৮ সালের জন্য এ সম্মাননা পেয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা প্রবীর মিত্র ও এম এ আলমগীর (নায়ক আলমগীর)।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য সচিব আবদুল মালেক। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রবীণ-নবীন খ্যাতনামা নায়ক-শিল্পী ও সংস্কৃতি অঙ্গনের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের মিলনমেলা। পুরস্কার বিতরণ শেষে বিজয়ীদের সঙ্গে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের কাছে কোন বার্তা পৌঁছাতে হলে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সবচেয়ে সহজে পৌঁছানো যায়। এটা যেমন একটা সমাজকে সংস্কার করতে পারে, কলুষমুক্ত করতে পারে, আবার কখনও কখনও অপসংস্কৃতি একটা সমাজকে নষ্ট করতে পারে। কাজেই সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়ে আমাদের চলতে হবে।
জীবনভিত্তিক সিনেমা তৈরির জন্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পকলার সবগুলো মাধ্যমের ভেতরে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্র। এর মাধ্যমে মানুষের মনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানুষের মনে গভীর দাগ কাটতে পারে এই চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে মানুষের জন্য। সিনেমার প্রতিটি ঘটনা বা কাহিনী যখন তৈরি করবেন, সেটা যেন জীবনভিত্তিক হয়। দেশের অনেক শিল্পী বাইরে গিয়েও ভাল কাজ করছে। দেশেও যেন তারা ভাল কাজ করে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালী জাতি বিজয়ীর জাতি। আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চাই আরও উচ্চ আসনে, যাতে এদেশের মানুষ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। তিনি বলেন, একটি জাতির ভাষা ও সংস্কৃতি অমূল্য সম্পদ। এর থেকে বঞ্চিত হলে গোটা জাতিরই অস্তিত্ব থাকে না। পরাজিত পাকিস্তানীরা সেটিই করতে চেয়েছিল। কিন্তু জাতির পিতা বাঙালী জাতির রাষ্ট্র ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে ১৯৪৮ সালের মার্চে প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলেন। বাঙালী জাতিকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি দিতে তিনি আজীবন লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপ-মহাদেশে একজন বাঙালী হীরালাল সেনই প্রথম নির্বাক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুই ’৫৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন বিল উত্থাপন ও পাস করিয়েছিলেন। তিনি এফডিসিও প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, তাতে সব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে গেছেন। এ কারণেই সংস্কৃতি অঙ্গনকে একটি সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যেতে চাই।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ সময় ইতিহাস বিকৃতি ও অপসংস্কৃতি চালুর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে শুধু আর্থ-সামাজিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত নয়, ইতিহাস বিকৃতি ও সংস্কৃতির বদলে অপসংস্কৃতির প্রচলন শুরু হয়। এমনকি সে সময় এমন এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, পরিবার পরিজন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা, সেই পরিবেশটাও ছিল না। আমরা কিন্তু সেই অশুভ জায়গা থেকে বেরিয়ে এসেছি। অনেক বেশি সংস্কারমূলক, আবেদনমূলক চলচ্চিত্র এখন হচ্ছে, যার জন্য মানুষের একটা আগ্রহ বাড়ছে।
অশ্লীল চলচ্চিত্র বন্ধে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সেন্সর সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতি সঠিকভাবে প্রতিপালনের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সেন্সর কার্যক্রম পরিচালনা, পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার ও টাস্কফোর্স গঠন করার মাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পকে অপসংস্কৃতি, অশ্লীলতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় থেকে রক্ষা করার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সিনেমা হলগুলো ডিজিটালাইজেশনে সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল যুগে জেলা-উপজেলায় সিনেমা হলগুলো চালু থাকছে না। আমাদের এখন যেটা করতে হবে, আমাদের সব জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষের কিন্তু আস্তে আস্তে ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে, আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ছে। তাদের বিনোদনের ব্যবস্থা যাতে ভালভাবে হয় সেদিকে আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মফঃস্বলের সিনেমাহলগুলো যাতে ভালভাবে চলতে পারে এবং ডিজিটালাইজড হয়, সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। অর্থাৎ আধুনিক যুগের সঙ্গে তারা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে। এই ক্ষেত্রে যা যা সহযোগিতা দরকার সেটা আমরা করতে পারব। একদম উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সিনেমা হলগুলো আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাতে চলতে পারে, সেজন্য সিনেমা হলগুলোকে দর্শক ফেরাতে ডিজিটালাইজড করতে হবে। সেজন্য আমরা নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
পুরস্কার প্রদানশেষে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান। তিনি তার বক্তব্যে দেশের চলচ্চিত্র তথা শিল্প সংস্কৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহ, ভালবাসা ও অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছি। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সিনেমা দর্শক হারিয়েছে। কীভাবে দর্শককে আবারও হলে ফেরানো যায় সেজন্য অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি আমরা। আমি নিজেও হল মালিকদের সঙ্গে বসেছি। আমার মনে হয় দর্শক ফেরাতে হলে সিনেমাকে ডিজিটালাইজড করতে হবে। বিশেষ করে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও সিনেমা হল ডিজিটাল করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এখন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। তাদের জন্য সময় উপযোগী বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং ’২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এই এক বছরকে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষ সামনে রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায়। আমরা ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগালকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছি। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর ইতিহাস বিকৃতি ও জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টার কথা তুলে ধরতে গিয়ে তারই কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় এই দেশে বঙ্গবন্ধুর নামও নেয়া যেত না। তার ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজকে জাতির পিতার নাম শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের দরবারে স্থান করে নিয়েছে। ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী যৌথভাবে পালন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। চলচ্চিত্র বিকাশে এফডিসি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
সরকারের শতব্যস্ততার কারণে হলে গিয়ে সিনেমা দেখা হয় না এমন আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যস্ততা সময়ের অভাবে খুব একটা সিনেমা দেখা হয় না। সারাদিন দেশের উন্নয়নের জন্য শতব্যস্ততা আর ফাইল দেখতে দেখতেই সময় পেরিয়ে যায়। কিন্তু বিদেশ যাবার সময় বিমানে বসে আমি দেশের সিমেনা দেখি। আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রগুলো খুঁজে খুঁজে দেখি। আমাদের দেশের নাটকগুলো অত্যন্ত জীবনধর্মী। দেশের নাটক ও সিনেমা আমাকের মুগ্ধ করে। আমাদের নাটকগুলো সত্যিই বিশ্বমানের, বলতে গেলে সর্বশ্রেষ্ঠ।
তিনি বলেন, আমাদের যে মেধা আছে, তাতে আরও সুন্দর সুন্দর চলচ্চিত্র আমরা নির্মাণ করতে পারি। এমন সুন্দর চলচ্চিত্র নির্মিত হোক, সেটাই আমি চাই। কিন্তু সময় তো পাই না। ফাইল দেখতে আর নথি পড়তেই দিনটা কেটে যায়। টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানগুলোও খুব একটা দেখার সময় পাই না। তবে বাংলাদেশের টেলিভিশনের নাটকগুলো মানের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে।
এ সময় ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কাউকে বদনাম করতে চাই না। অনেক দেশের সিরিয়ালে তো শুধু শাড়ি আর গহনার প্রতিযোগিতা আর খুনসুঁটিপনা দেখি। কিন্তু আমাদের প্রতিটি নাটকের ভেতরে অনেক বেশি জীবনবোধের স্পর্শ আছে। এই নাটক থেকে অনেক কিছু জানা যায়, শেখা যায়, অনেক কিছু বোঝা যায়। বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত করায় সবার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আছে। সেখানে যোগ দিতে হবে। এজন্য একটু তাড়াহুড়া করে পুরস্কারটা দেয়া হলো। তবে আমি বলতে চাই, ভবিষ্যতে এভাবে না করে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটা আর একটু সুন্দরভাবে যেন উপস্থাপন করা হয়। যাকে যখন পুরস্কার দেয়া হচ্ছে, যে সিমেনার জন্য পাচ্ছেন, তার ট্রেলারটা বা কিছু অংশ দেখানো, কিছুটা বর্ণনা দেয়া এরকম কিছু থাকলে ভাল হবে। তবে অনুষ্ঠানে যে তাড়াহুড়াটা হলো, এর জন্য আমি নিজেই দায়ী। ভবিষ্যতে এটা যেন আর না হয়, সে বিষয়ে আমরা খেয়াল রাখব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্রের বিকাশে ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএফডিসির উন্নয়ন করা হচ্ছে। আমরা আধুনিক ফিল্ম সিটি নির্মাণ করে দিচ্ছি এবং ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ করব যাতে করে আমাদের পুরনো কোনকিছু হারিয়ে না যায়। আমরা তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষের মেধা ও মননের কমতি নেই, বরং বিশ্বের অনেক দেশ থেকে আমাদের দেশের মানুষ বেশি মেধাবী। আর এই মেধা ও মননকে ব্যবহার করে আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল, এনালগ সিস্টেম যেন হারিয়েই যাচ্ছে। আমরা নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কাজ এগিয়ে চলেছে। দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট ব্যবহার করে দেশের বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পরিচালিত হচ্ছে। এতে তাদের অনেক অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে। আশা করি, টেলিভিশনগুলোর বেঁচে যাওয়া অর্থ যেন শিল্পীদের উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। আর তরুণ প্রজন্মের ভাবনা, মেধা ও মননশীলতা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। পরিবর্তনের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে।