বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
বিশ^নাথে অস্ত্র রেখে রেজাউল ইসলাম রাজু (৩১) নামের এক যুবককে ফাঁসাতে গিয়ে এক মহুরীসহ তিনজন এখন জেলহাজতে রয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে গ্রেফতারের পর বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের তিনজনকে জেলহাজতে পাঠায় বিশ^নাথ থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তিনজন হচ্ছেন, রামপাশার কোনাপাড়া গ্রামের মহুরী আলী হায়দার (৩৮), উপজেলা সদরের পাশর্^বর্তি রাজনগর গ্রামের মৃত আত্তর আলীর ছেলে আব্দুল কাদির (৪০) ও বিশ^নাথ নতুনবাজারের বাসিন্দা আসু মিয়ার ছেলে লাইটেস চালক আবুল কালাম (৩০)।
এর আগে গ্রেফতার হওয়া ওই তিনজনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে নওধার মাঝপাড়া গ্রামের ইলিয়াস আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম রাজু (৩১) বাদি হয়ে বিশ^নাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ২১)। মামলায় কাঁঠালীপাড়ার বাসিন্দা নওধার গ্রামের মানব পাচারকারী রফিকুল ইসলামসহ (৫৫) পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানব পাচারকারী রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে চলতি বছরের মে মাসে লিবিয়া থেকে ইটালি যাওয়ার পথে ভূ-মধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মারা যান তার ছোট ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম খোকন (২৫)। এ ঘটনায় গত ১৬মে মানব পাচারকারী রফিকুল ইসলাম ও তার মেয়ে পিংকিসহ পাঁচজনকে আসামি করে বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন রেজাউল ইসলাম রাজু (মামলা নং ৮)। এরপর থেকে মামলা তুলে নিতে তাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে দালাল রফিক। এনিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন মামলার বাদি রাজু। এছাড়া গত ৫নভেম্বর মানব পাচারকারী রফিকুল ইসলামের হাত থেকে বাঁচতে সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরেও একটি লিখিত অভিযোগ দেন রাজু। অবশেষে সম্প্রতি রেজাউল ইসলাম রাজুকে অস্ত্র রেখে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন রফিক। এজন্য গ্রেফতার হওয়া ওই তিনজনের সঙ্গে ২লাখ টাকায় চুক্তিও করেন তিনি। এ বিষয়টি জানার পর রাজু থানা পুলিশকে অবহিত করলে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়।
মানব পাচার মামলার বাদি রেজাউল ইসলাম রাজু বলেন, চুক্তি ভঙ্গ করে মানব পাচারকারী রফিকুল ইসলাম তার ছোটভাই রেজওয়ানুল ইসলাম খোকনকে সাগরে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন। আর এজন্য তিনি থানায় মামলা দিলে গত মে মাস থেকে তাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন রফিকের সহযোগীরা। সম্প্রতি তাকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর পরিকল্পনার বিষয়টি জেনে তিনি পুলিশের আশ্রয় নিলে পুলিশ ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়।
বিশ^নাথ থানার ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, আসামিরা অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। যে কারণে তাদের তিনজনকে জেলে পাঠানো হয়েছে।