হাওর পারের শিক্ষক সম্মেলনের শেষ দিনে বিভাগীয় কমিশনার ॥ প্রতিটি সমস্যা থেকে সুযোগ বের করতে হবে

36
হাওরপারের শিক্ষক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিভাগীয় কমিশনার মো: মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ।

দেশের বিভিন্ন জেলার ৪ শতাধিক শিক্ষককে নিয়ে বিভাগীয় শহর সিলেটে শনিবার সমাপ্ত হয়েছে দুই দিনের হাওর পারের শিক্ষক সম্মেলন। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নেয়ার জন্য সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ জেলার শিক্ষকদের উদ্যোগে গঠিত হাওর পারের শিক্ষক গ্র“প শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে এই শিক্ষক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। নগরীর কবি কাজী নজরুল অডিটোরিয়ামে শুক্রবার বিকেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, একসেস টু ইনফরমেশন, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহযোগিতায় আয়োজিত সম্মেলন উদ্বোধন হয় শুক্রবার বিকেল ৩টায়। সমাপনী দিনে ছিল ৪টি অধিবেশন। প্রথম অধিবেশন শুরু হয় সকাল ১০টায়। ‘সবুজ ও পরিচ্ছন্ন স্কুল’ বিষয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইলসাম। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, স্কুল থেকেই পরিচ্ছন্নতা ও সবুজায়ন বাচ্চাদের শিখাতে হবে। প্রতিষ্ঠানকে নিজের মনে করে নেতৃত্ব দিতে হবে। আপনি যদি কাজটাকে কেবল চাকরি মনে করেন তাহলে কিছুই হবেনা। সেটাকে নিজের মনে করে কাজ করতে হবে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটি কোন কোন ক্ষেত্রে যন্ত্রনাদায়ক হয়। সেদিকে ইঙ্গিত করে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বলেন, অনেক সময় তারা সমস্যার সৃষ্টি করে। তবে সেই সমস্যার সাথে সুযোগও থাকে। আপনাকে সেই সুযোগটি খুঁজে বের করে তা কাজে লাগাতে হবে। বিভাগীয় কমিশনার এসব ক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতাগুলো খোলামেলা তুলে ধরেন। এছাড়াও তিনি ছাদ-বাগান প্রতিষ্ঠার জন্য উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দকে আহ্বান জানান। সভাপতির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক বলেন, স্কুলেই শিক্ষার্থীদের মনে দেশ প্রেমের বীজ বপন করে দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের আচরণ লক্ষ্য করে। তারা দেখে শিখে। বিষয়টির প্রতি সচেতন থাকার জন্য তিনি উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। নেত্রকোণার নওয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আনোয়ার উদ্দিন হিরনের পরিচালনায় সেমিনারে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন এ টু আই প্রকল্পের সিডিই রফিকুল ইসলাম সুজন। বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল্লাহ, লালমনিটর হাটের কেপিইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদ আলম, সুনাগমগঞ্জের রাণীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ। দ্বিতীয় অধিবেশনে অনুষ্ঠিত হয় ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এ পর্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন, দোয়ারাবাজার উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী বীর প্রতীক।
এ পর্ব সঞ্চালনায় ছিলেন সিলেট টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. শামীম খান ও ড. দিদার চৌধুরী। অন্য আরেকটি পর্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ^জিৎ কুমার পাল, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম, ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবির। সব শেষে সম্মেলনে উপস্থিত ৪ শতাধিক শিক্ষকের হাতে ক্রেস্ট ও বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। হাওরের পারের শিক্ষক সম্মেলন উদয়াপন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সদস্য সচিব মো. আব্দুস সামাদ সম্মেলন সফলের জন্য সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও ধন্যবাদ জানান। বিজ্ঞপ্তি